সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
বঙ্গবন্ধু রেলসেতু দিয়ে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচল
দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর প্রমত্তা যমুনা নদীর ওপর দেশের অন্যতম মেগা প্রকল্প বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলসেতু দিয়ে প্রথম পরীক্ষামূলক (ট্রায়াল) ট্রেন চলাচল করেছে। তবে পরীক্ষামূলক চালু হলেও ট্রেনের পূর্ণগতি পেতে সময় লাগবে আরো দুই মাস। এদিকে, সবকিছু ঠিক থাকলে ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে সেতুটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
গতকাল মঙ্গলবার দেশের দীর্ঘতম রেলসেতুর ওপর দিয়ে সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে একটি ট্রেন পরীক্ষামূলকভাবে ভূঞাপুর অংশের পূর্বপাড় থেকে ছেড়ে সিরাজগঞ্জের পশ্চিম পাড়ে আসে। পরে ট্রেনটি ১০টা ৪১ মিনিটে পূর্বপাড়ে ফিরে যায়। ট্রায়াল ট্রেন একটি ইঞ্জিন ও তিনটি বগি নিয়ে প্রথম যাত্রা শুরু করে। এ ট্রেনটি পূর্ব ও পশ্চিম প্রান্তে চলাচল করে। প্রথমে ১০ কিলোমিটার বেগে চলাচল করলেও পরে ৪০ কিলোমিটার বেগে সেতু পারাপার করে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু প্রকল্পের পরিচালক আল-ফাত্তাহ মাসউদুর রহমান বলেন, দুটি ট্রায়াল ট্রেন সেতুর পশ্চিমপাড় থেকে পূর্বপাড়ে চলাচল করেছে। প্রথমে ১০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলাচল করে। পরে গতি বেড়ে ৪০ কিলোমিটার বেগে চলেছে। ধীরে ধীরে এর গতি বাড়ানো হবে। এভাবে বেশ কয়েকবার ট্রায়াল ট্রেনটি চলাচল করবে বলে তিনি জানিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু প্রকল্পের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী শেখ নাইমুল জানান, এরই মধ্যে রেলসেতুটির নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। আমরা পরীক্ষামূলকভাবে সেতুর ওপর দিয়ে ট্রেন চালানো শুরু করেছি। আগামী জানুয়ারিতে সেতুটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হবে। তবে এটি চালু হলেও ট্রেনের পূর্ণগতি পেতে সময় লাগবে আরো দুই মাস।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৮ সালে বঙ্গবন্ধু সেতু চালু হওয়ার পরই ঢাকার সঙ্গে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের সড়কের পাশাপাশি রেল যোগাযোগ স্থাপিত হয়। ২০০৮ সালে সেতুতে ফাটল দেখা দেওয়ায় কমিয়ে দেওয়া হয় ট্রেনের গতিসীমা। বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় ৩৮টি ট্রেন ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটার গতিতে সেতু পারাপার করছে।
২০২০ সালের আগস্ট মাসে ৯ হাজার ৭৩৪ কোটি ৭ লাখ টাকা ব্যয়ে বঙ্গবন্ধু সেতুর সামান্য উত্তরে বঙ্গবন্ধু রেলওয়ে সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়। পরে এ ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। এর মধ্যে ১২ হাজার ১৪৯ কোটি ২ লাখ টাকা জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) ঋণ হিসেবে দিয়েছে। এ প্রকল্পের নির্ধারিত সময় ছিল ২০১৬ সালের জুলাই থেকে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। কিন্তু প্রথম সংশোধনে এ সময়সীমা ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বেড়ে যায়। এর আগে ২০১৬ সালের ৬ ডিসেম্বর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ নির্বাহী কমিটি (একনেক) প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া হয়।
"