নিজস্ব প্রতিবেদক
সেই খাদ্য কর্মকর্তার পদায়ন বাতিল, বদলি
তথ্য গোপন করে নিজ জেলা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার খাদ্যনিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) হিসেবে নিযুক্ত হওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যে মো. আবু কাউছারের পদায়ন বাতিল করা হয়েছে। একই সঙ্গে এই কর্মকর্তাকে কক্সবাজারের ভারপ্রাপ্ত খাদ্যনিয়ন্ত্রক হিসেবে বদলি করা হয়েছে।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. আবুল আমিন স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এই আদেশ দেওয়া হয়েছে। এই কর্মকর্তার স্থলে রাঙ্গামাটি জেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রক কানিজ জাহান বিন্দুকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রক পদে বদলি করা হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দিদারুল আলম বলেন, ‘জেলার খাদ্যনিয়ন্ত্রক হিসেবে কানিজ জাহান বিন্দু নামের একজনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন পেয়েছি।’ এর আগে, গত ৩ নভেম্বর খাদ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. আবুল আমিন স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে আবু কাউছারকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পদায়নের আদেশ দেওয়া হয়েছিল। আদেশের পরদিন ওই কর্মকর্তা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে যোগ দেন। গতকাল মঙ্গলবার থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে তার কাজ শুরুর কথা ছিল। কিন্তু এর মধ্যে তার বিরুদ্ধে তথ্য গোপন করে নিজ জেলায় খাদ্যনিয়ন্ত্রক পদে নিযুক্ত হওয়ার অভিযোগ ওঠে।
খাদ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বদলি ও পদায়ন নীতিমালা-২০১৯-এ বলা হয়েছে, জেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রক বা সমমানের পদ এবং নবম গ্রেডভুক্ত ক্যাডার ও নন-ক্যাডার পদে, সিএসডির সহকারী ব্যবস্থাপক বা ব্যবস্থাপক এবং এলএসডির সংরক্ষণ ও চলাচল কর্মকর্তা বা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পদে নিজ জেলায় নিয়োগ বা পদায়ন করা যাবে না। এ ছাড়া দশম থেকে ষোলোতম গ্রেডভুক্ত কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে নিজ জেলায় নিয়োগ বা বদলি করা যাবে না।
পদায়নের আদেশ পাওয়া মো. আবু কাউছারের জন্মনিবন্ধন সনদ, তার বাবার মুক্তিযোদ্ধা সনদ ও দুই মেয়ের সনদসহ বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়, মো. আবু কাউছার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার মেহারী ইউনিয়নের বামুটিয়া গ্রামের বাসিন্দা। তার বাবা ওই গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মো. আবু হাসান। কিন্তু তিনি তার জেলা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাম না দিয়ে নিজ জেলা ‘ঢাকা’ উল্লেখ ২০০০ সালে ‘খাদ্য পরিদর্শক’ হিসেবে চাকরি নেন।
আবু কাউছারের জন্মনিবন্ধন সনদে দেখা যায়, নিবন্ধিত ব্যক্তির জন্মস্থান ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়া’। ২০২২ সালের ১৫ মার্চ কসবা উপজেলার মেহারী ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ওই সনদপত্র ইস্যু করা হয়েছিল। একই তারিখে তার মেয়ের জন্মসনদও একই ইউনিয়ন পরিষদ থেকে নিবন্ধন করা হয়।
গত সোমনার এ নিয়ে ‘তথ্য গোপন করে নিজ জেলায় পদায়ন জেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রকের’ শিরোনামে খবর প্রকাশ হয় একটি গণমাধ্যমে। পদায়ন বাতিলের বিষয়ে জানতে চাইলে মো. আবু কাউছার বলেন, ‘আমার পদায়ন বাতিল করার বিষয়টি জানতে পেরেছি।’
"