ইসমাঈল সিরাজী
রাজধানীতে তীব্র যানজট, দুর্ভোগ চরমে
ইসলামী মহাসম্মেলনে যোগ দিতে গতকাল মঙ্গলবার ভোর থেকেই আলেম-ওলামার ঢল নামে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। এরপর উদ্যান ও আশপাশের প্রায় কয়েক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে অবস্থান নেন আলেম-ওলামা।
সম্মেলনকে কেন্দ্র করে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক শাহবাগ, প্রেস ক্লাব, কাকরাইল, কাঁটাবন, সায়েন্সল্যাব, ফার্মগেট, তেজগাঁও, মগবাজার সড়কে দেখা দেয় তীব্র যানজট। এতে ভোগান্তিতে পড়েন শিক্ষার্থী ও অফিসগামী মানুষ। যানজটে আটকে থাকা যাত্রীদের অনেককে গাড়ি থেকে নেমে হেঁটেই গন্তব্যে রওনা দিতে দেখা যায়।
কর্মদিবসে এত লোক সমাগম করে সম্মেলন করায় অনেক অফিসগামী যাত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করেন। জুবায়ের নামে এক যাত্রী বলেন, সপ্তাহের ছুটির দিনগুলোয় রাজধানীতে সমাবেশ ও রাজনৈতিক কর্মসূচি রাখা উচিত। না হলে অফিসগামী মানুষও সাধারণ যাত্রীরা চরম ভোগান্তির শিকার হন। তিনি বলেন, আসাদগেট থেকে ২ ঘণ্টায় এখনো পল্টন যেতে পারেনি। কতক্ষণ লাগবে সেটাও অনশ্চিত।
সড়কের পাশাপাশি উপচেপড়া ভিড় দেখা মেট্রোরেলেও। মিরপুর থেকে গণপরিবহন না পাওয়ায় অনেককেই মেট্রোরেলে গন্তব্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করেন। ফলে মেট্রোরেলেও ছিল উপচেপড়া ভিড়। তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না মেট্রোরেলে। সকাল থেকেই রাজধানীর সড়কে আজকের সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীদের বহনকারী বিভিন্ন যানবাহন চলতে দেখা যায়। অনেক অংশগ্রহণকারীকে হেঁটেও সম্মেলনস্থলের দিকে যেতে দেখা গেছে। মেট্রোরেলেও ছিল সম্মেলনে আসা মানুষের ভিড়।
সরকারি কর্মকর্তা ফেরদৌসী বেগম বলেন, ‘আমার বাসা মিরপুরে। আমি প্রতিদিন সকাল ৮টায় বাসা বের হই। অফিস কাকরাইলে। এখন সকাল ১০টা বাজে। আমি শাহবাগে আটকে আছি। কখন অফিসে পৌঁছাব, বুঝতে পারছি না।’ রাজধানীর শেওড়াপাড়ার বাসিন্দা নজরুল ইসলাম মোটরসাইকেলে করে তার বাসা থেকে সকাল ১০টায় কারওয়ানবাজার এসেছেন। বিজয় সরণি পর্যন্ত নির্বিঘ্নে আসতে পারলেও এরপর থেকে তীব্র যানজটের মুখে পড়েন। নজরুল ইসলাম বলন, ‘বিজয় সরণি থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত এলাকা নিশ্চল হয়ে পড়েছিল। যানবাহন আটকে ছিল রাস্তায়। একটু একটু করে গাড়িগুলো নড়ছিল।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় সকাল ১০টার পর প্রচণ্ড যানজট দেখা গেছে। ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা যায়, সকাল থেকে আশপাশের রাস্তায় প্রচণ্ড যানজট। রাজু ভাস্কর্যসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় সমাবেশে আসা লোকদের ভিড়। সকাল থেকে যেসব শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ক্লাসের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন, তারাও দীর্ঘক্ষণ যানজটে আটকে ছিলেন। যানজটের কারণে কিছু কিছু বিভাগে ক্লাস বাতিল করা হয়।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমদ বলেন, ‘আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছি। কিন্তু এত বিপুলসংখ্যক মানুষকে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হচ্ছে না। গত সোমবার রাত থেকে ক্যাম্পাসের আশপাশে আমরা গাড়ি রাখতে দিইনি। কিন্তু তারপরও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি।’ রাজধানীর মৎস্য ভবন মোড়, মহাখালী, গুলশান, মিন্টো রোডে দুপুর ১২টার দিকে অনেক যানজট দেখা গেছে।
"