নিজস্ব প্রতিবেদক
অভিযুক্ত বিচারকদের বিষয়ে ব্যবস্থা নেবেন উচ্চ আদালত
- আইন উপদেষ্টা
বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের হাতে ফেরায় যেসব বিচারপতির বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতই ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। গতকাল রবিবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। ষোড়শ সংশোধনীর রায়ের বিষয়ে তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের দোসর হিসেবে বিভিন্ন বিচারপতির নাম এসেছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সম্প্রতি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সুপ্রিম কোর্ট অবরোধ করে। পরে প্রধান বিচারপতি অভিযুক্ত ১২ জন বিচারপতিকে ছুটিতে পাঠান। সেই অভিযুক্ত বিচারপতির সম্পর্কে আসিফ নজরুল বলেন, ‘কিছু বিচারকের ব্যাপারে প্রচুর অভিযোগ রয়েছে। তারা ফ্যাসিস্ট শক্তির নিপীড়ক যন্ত্রে পরিণত হয়েছিলেন। কারো কারো বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগও রয়েছে। তাদের নিয়ে ছাত্র-জনতার অনেক ক্ষোভ রয়েছে। এখন সুপ্রিম কাউন্সিল পুনরুজ্জীবিত হওয়ায় সেসব বিষয় সাংবিধানিকভাবে নিষ্পত্তির সুযোগ তৈরি হয়েছে।’ এ রায়কে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন জানিয়ে আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘এখন সুপ্রিম কাউন্সিল পুনরুজ্জীবিত হওয়ায় সেসব বিষয় সাংবিধানিকভাবে নিষ্পত্তির সুযোগ তৈরি হয়েছে। এরপরও উচ্চ আদালত সম্পূর্ণ স্বাধীন, তাই তাদের ব্যবস্থা উচ্চ আদালতই ব্যবস্থা নেবে।’ এর আগে সকালে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ের রিভিউয়ের আবেদন নিষ্পত্তি করে দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ। এতে বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা আবার সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের হাতে ফেরে।
দেশের প্রথম সংবিধানে সংসদের হাতে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা রাখা হয়। তবে ১৯৭৫ সালে সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনীতে রাষ্ট্রপতিকে এ ক্ষমতা দেওয়া হয়। পরবর্তী সময়ে আবারও পঞ্চম সংশোধনীতে বিচারক অপসারণে নিষ্পত্তির ভার দিতে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠন করা হয়। এরপর পঞ্চম থেকে পঞ্চদশ সংশোধনী পর্যন্ত বিচারপতি অপসারণ নিয়ে আর নতুন কোনো সংশোধনী আসেনি। তবে ২০১৪ সালে ষোড়শ সংশোধনীতে বিচারপতি অপসারণের ক্ষমতাপ্রাপ্ত হয় জাতীয় সংসদ। তৎকালীন প্রধান বিচারপতির এস কে সিনহার তৎপরতায় হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগ ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করা হয়। পরে আওয়ামী লীগ সরকার এর রিভিউতে যায়। সেই বিষয়টি গতকাল নিষ্পত্তি হলো।
"