রবিউল আলম ইভান, কুষ্টিয়া

  ১৭ অক্টোবর, ২০২৪

লালন তিরোধান দিবসে বাউল উৎসব শুরু

উপমহাদেশের আধ্যাত্মিক সাধক বাউলসম্রাট ফকির লালন শাহের ১৩৪তম তিরোধান দিবস আজ বৃহস্পতিবার। ‘মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি’- এ বাণী ধারণ করে কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়ায় আজ থেকে শুরু হচ্ছে তিন দিনের বাউল উৎসব ও গ্রামীণ মেলা। আজ সন্ধ্যায় উদ্বোধন করা হবে অনুষ্ঠানের। আগামী শনিবার পর্যন্ত চলবে এ অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে সহযোগিতা করছে লালন একাডেমি, জেলা প্রশাসন ও সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়।

উদ্বোধনের পর থেকে প্রতিদিন রাতে লালনমঞ্চে চলবে লালন সংগীতের আসর। খণ্ড খণ্ড মজমায় চলবে ভাবের আদান-প্রদান আর তত্ত্ব আলোচনা। লালনমঞ্চে লালন একাডেমি, শিল্পকলা একাডেমিসহ বিভিন্ন উপজেলা শিল্পকলা একাডেমি ও লালনসংগীত শিল্পীদের পরিবেশনায় প্রতিদিন সন্ধ্যার পর রাতভর চলবে সংগীতের আসর। লালন শাহের মাজার খেদমতে উৎসর্গী করা খাদেম মোহাম্মদ আলী শাহ বলেন, দূরদূরান্ত থেকে এখানে আগত ভক্তরা মনে করেন, আধ্যাত্মিক চিন্তার দার্শনিক মহামতি লালনের সংগীত ও ধর্ম-দর্শন নিয়ে দেশ-বিদেশে মুক্ত চিন্তক গবেষকদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। সব প্রতিবন্ধকতা তুচ্ছ করে প্রতি বছর যে গুরুভক্তির টানে ভক্ত আশেকান বাউল অনুসারিরা ছুটে আসেন সাঁইজির এ তীর্থধামে; এখানে এসে কার্যত মানবাত্মা ও পরমাত্মার মিলন ঘটে যে গুরুবানীর চর্চার মধ্য দিয়ে।

লালন মেলায় পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে আসা মহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা পাবনা থেকে কয়েকদিন আগে ছেঁউড়িয়ায় এসেছি। আমি একজন লালন ভক্ত। আমার মতো শত শত ভক্ত ও অনুসারী এখানে এসেছেন। প্রতিদিনই লোকজন আসছেন।

খুবই ভালো লাগছে। এবারের মেলাটা খুবই বড় মেলা হবে বলে আশা রাখি।’ লালন একাডেমির বাউলশিল্পী দীপু শাহ বলেন, ‘লালনের উৎসব আগে বন্ধ থাকায় সাধু-গুরুরা হতাশায় ভুগছিলেন। এবার লালনের তিরোধান দিবস হবে। এজন্য আমরা প্রস্তুতি নিয়েছি। সুন্দরভাবে অনুষ্ঠানটি সম্পন্ন করা হবে। যতদিন বেঁচে থাকবো সাঁইজির কালাম শুনিয়ে যাব।’

কুষ্টিয়ার ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক ও লালন একাডেমির অ্যাডহক কমিটির সভাপতি শারমিন আখতার বলেন, ‘বাউলসম্রাট ফকির লালন শাহের তিরোধান দিবস উপলক্ষে তিন দিনব্যাপী লালন মেলার আয়োজন করা হয়েছে। প্রতিদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে আলোচনা সভা শুরু হবে। আলোচনা শেষে শুরু হবে লালন সংগীত। মেলার সার্বিক প্রস্তুতি চলছে। মাজার প্রাঙ্গণ ও তার আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কাজ করবে। ১৮৯০ সালের ১ কার্তিক কালজয়ী ভাবুক ও শিল্পী লালন সাঁই কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নের ছেঁউড়িয়া গ্রামে দেহধাম ত্যাগ করেন। এরপর থেকে আখড়াবাড়ি চত্বরে তার ভক্ত-অনুসারীরা তাদের সাঁইজিকে স্মরণ করে আসছেন। পরে লালন একাডেমি এ আয়োজনের দায়িত্ব নেয়।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close