বেনাপোল প্রতিনিধি
কাঁচামরিচ আমদানি
তিন দিনে ৮০৬ টন, তবু বাজার অস্থির
তিন দিনে ভারত থেকে ৮০৬ টন কাঁচামরিচ আমদানি করা হয়েছে। গত সোমবার এক দিনে ৫০ ট্রাকে ৫৮২ টন কাঁচামরিচ আমদানি হয়। পরের দিন মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ১২ ট্রাকে ১৪৪ টন কাঁচামরিচ আমদানি হয়েছে। গতকাল বুধবার ৫টা পর্যন্ত ৫টি ট্রাকে ৮০ টন কেজি কাঁচামরিচ আমদানি করা হয়। আমদানি করা এসব কাঁচামরিচের ক্রয় থেকে শুরু করে শুল্ককরসহ সব মিলিয়ে খরচ পড়ছে ৯৬ থেকে ১০০ টাকা কেজি। অথচ যশোরের শার্শা উপজেলার বিভিন্ন বাজারে তা বিক্রি হচ্ছে ৩৮০-৪০০ টাকা কেজি দরে।
আমদানি স্বাভাবিক থাকা সত্ত্বেও যশোরের শার্শা উপজেলার বেনাপোলসহ স্থানীয় সব খুচরা বাজারে কাঁচামরিচের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে কেজিতে ১৫০-২০০ টাকা। কারণ হিসেবে দুর্গাপূজার জন্য টানা ৫ দিন আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকার কথা বলছেন ব্যবসায়ীরা। তবে মাত্র কয়েকদিনের ব্যবধানে এমন দাম বৃদ্ধিতে ক্ষুব্ধ ক্রেতারা। খুচরা ব্যবসায়ীরা জানান, আমদানি বাড়লেও আড়তে তেমন কমেনি কাঁচামরিচের দাম। টানা ৫ দিন বন্দর বন্ধ থাকবে জেনে কাঁচামাল গুদামজাত করে দাম বাড়িয়েছেন আড়তদাররা।
বুধবার সকালে বেনাপোল ও শার্শার একাধিক বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এক সপ্তাহ আগেও এসব বাজারে ভারত থেকে আমদানি করা কাঁচামরিচ খুচরা বাজারে বিক্রি হয়েছিল ৮০-১০০ টাকা কেজি। আজ তা বিক্রি হচ্ছে প্রায় ৪০০ টাকা কেজি দরে। বেনাপোল বাজারে কাঁচামরিচ কিনতে আসা জাবির হোসেন বলেন, এক সপ্তাহ আগেও মরিচ কিনেছিলাম ৯০ টাকা কেজি। আজ দেখছি ৩৮০ থেকে ৪০০ টাকা কেজি। এভাবে চললে আমরা চলব কী করে? আরেকজন ক্রেতা মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা বেনাপোল স্থলবন্দর এলাকার বাসিন্দা। শুনছি এবং দেখছি, এ বন্দরে প্রচুর কাঁচামরিচ আমদানি হচ্ছে। সেই হিসাবে তো ১০০ টাকার নিচে দাম হওয়ার কথা। অথচ এখনো আমাদের ৩৫০-৪০০ টাকা কেজিতে কাঁচামরিচ কিনে খেতে হচ্ছে।
বেনাপোল বাজারের খুচরা ব্যবসায়ী রাশেদ আলী বলেন, বেশি দামে মরিচ কিনতে হচ্ছে, তাই বেশি দামে বিক্রি করছি। সব সবজি এবং পেঁয়াজের দাম ও আকাশছোঁয়া। তবে পূজার কারণে পোর্ট বন্ধ থাকায় বাজারে বড় বড় ব্যবসায়ীরা বস্তা বস্তা কাঁচামরিচ আর পেঁয়াজ মজুদ করেছিল দাম বেশি পাবার আশায়। আমদানি স্বাভাবিক হলে আবার দাম কমে যাবে। বেনাপোল বন্দরের পেঁয়াজ ও কাঁচামরিচ আমদানিকারক রফিকুল ইসলাম রয়েল বলেন, পেঁয়াজে তেমন পড়তা না থাকায় এখন কাঁচামরিচ আমদানি করছি। বর্তমান কাঁচামরিচ আমদানি অনেক বেশি হচ্ছে। বাজারে মূল্যবৃদ্ধির ভাবটা অচিরেই কেটে যাবে। গত তিন দিনে প্রায় ৬৭ ট্রাকে ৮০৬ টন কাঁচামরিচ আমদানি হয়েছে এ বন্দরে দিয়ে।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণের শার্শা উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নুসরাত ইয়াসিন জানান, তারা নিয়মিত কার্যক্রমের পাশাপাশি অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করছেন। ক্রয়-বিক্রয় রশিদ, মূল্য তালিকা, বাড়তি দামে পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে কি না, সবকিছু খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। মরিচের দামে কোনো কারসাজি হচ্ছে কি না, তা-ও যাচাই করা হবে। বেনাপোল স্থলবন্দরের উপপরিচালক (ট্রাফিক) রাশেদুল সজিব নাজির জানান, ভারত থেকে তিন দিনে ৮০৬ টন কাঁচামরিচ আমদানি হয়েছে এ বন্দরে দিয়ে। বন্দর থেকে খালাস করে নিয়ে যাচ্ছে আমদানিকারকরা। পচনশীল পণ্য হিসেবে আমরা দ্রুত খালাস দিয়ে থাকি। মূল্যের ব্যাপারে আমাদের কিছু বলার নেই।
"