ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
ময়মনসিংহে সাংবাদিককে দিনে-দুপুরে কুপিয়ে হত্যা
ময়মনসিংহে স্বপন ভদ্র (৫৫) নামে এক প্রবীণ সাংবাদিককে নিজ বাসার সামনে দিনে-দুপুরে কুুপিয়ে হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা। গতকাল শনিবার দুপুরে সদর উপজেলার শম্ভুগঞ্জের মাঝিপাড়া এলাকায় এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় নিহতের পরিবার এবং সহকর্মীদের মধ্যে শোক ও ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।
নিহত স্বপন ভদ্র জেলার তারাকান্দা উপজেলার কাকনি ইউনিয়নের জগেশ চন্দ্র ভদ্রের ছেলে। তবে তিনি পরিবার নিয়ে সদর উপজেলার শম্ভুগঞ্জের মাঝিপাড়া এলাকায় বসবাস করতেন। স্বপন ভদ্র তারাকান্দা প্রেস ক্লাবের সাবেক সহসভাপতি। একসময় তিনি স্থানীয় ও জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় কর্মরত ছিলেন।
তবে তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এলাকার বিভিন্ন ঘটনা ও বিষয় নিয়ে নিয়মিত লেখালেখি করতেন। স্বপন কুমার ভদ্রের দুই ছেলে ও এক মেয়ে। ছোট ছেলে রনি ভদ্র সেনাবাহিনীতে কর্মরত।
নিহত ব্যক্তির পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, লেখালেখির জেরে স্বপন কুমার ভদ্রকে হত্যা করা হয়েছে। বছরখানেক আগেও তার ওপর হামলা হয়েছিল। তাদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ শনিবার দুপুরে সাগর মিয়া (১৮) নামের এক তরুণকে আটক করেছে। সাগর উপজেলার মাঝিপাড়া গ্রামের বাবুল মিয়ার ছেলে।
নিহতের ভাতিজা জুয়েল ভদ্র বলেন, বেলা ১১টায় নিজ বাসার সামনে বসে ছিলেন চাচা (স্বপন ভদ্র)। ওই সময় তাকে মাথায় এলোপাতাড়ি কোপানো হয়। বাঁ হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয়। চাচির (সবিতা ধর) চিৎকার শুনে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসেন। রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
কোতোয়ালি মডেল থানার এসআই আবুল কাশেম বলেন, ঘাড়েই ছয়টি কোপ রয়েছে। বাঁ হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন। এ ছাড়া শরীরে আরো কোপের আঘাত রয়েছে।
নিহত স্বপন কুমার ভদ্রের ভাগনে মানিক সরকার বলেন, ‘মাদক নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করার কারণে আমার মামাকে হত্যা করা হয়েছে। কেন লেখালেখি করেন, সে জন্যই রাগ ছিল। এ কারণে হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়।’
ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সফিকুল ইসলাম খান বলেন, আটক সাগর এলাকায় বখাটে ও নেশাগ্রস্ত হিসেবে পরিচিত। বিভিন্ন সময় মানুষকে ছুরিকাঘাত করারও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন ময়মনসিংহ পুলিশ সুপার আজিজুল ইসলাম। তিনি বলেন, আটক সাগর বখাটে ও সন্ত্রাসী। সে হত্যাকারী, এটি নিশ্চিত হওয়া গেছে। সাগরের কর্মকাণ্ড নিয়ে আগেও প্রতিবাদ করেছিল স্বপন ভদ্র। একবার স্বপন ভদ্রের হাতে আঘাত করেছিলেন সাগর। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। পরে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হবে।
"