লোহাগাড়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলা
সংরক্ষিত বনের গাছ কেটে নিয়েছে দুর্বৃত্তরা
* রাতের আঁধারে ৪০-৫০টি সেগুনগাছ কেটে নেওয়া হয়েছে * এ গাছ চুরির ঘটনায় ৬টি মামলা হয়েছে, কেউ গ্রেপ্তার হয়নি
চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় সংরক্ষিত বনাঞ্চল থেকে দুই শতাধিক সেগুনগাছ কেটে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পাশে চুনতি ইউনিয়নের জাঙ্গালিয়া এলাকায় সাতগড় বনবিট কার্যালয়ের শতাধিক গজ দূরত্ব থেকে এই গাছগুলো কাটা হয়েছে। সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, চুনতি সাতগড় বনবিট কার্যালয়ের কাছেই ফের ইত্যাঘোনা ও পার্শ্ববর্তী আলতাফের জুম এলাকা থেকে গত এক সপ্তাহের মধ্যে এই গাছগুলো কাটা হয়েছে। ১৯৯৭ সালে সেখানে সেগুন ও আকাশমনিগাছের বাগান সৃজন করা হয়েছিল। সাতগড় বনবিট কর্মকর্তার কার্যালয়ের নিকটস্থ এলাকা থেকে দুই শতাধিক বড় সাইজের সেগুনগাছ কেটে নেওয়ার সত্যতা পাওয়া গেছে। মহাসড়ক থেকে সংরক্ষিত বনের ভেতর আনুমানিক ২০ গজ ভেতরে ঢুকতেই দেখা গেছে নির্বিচারে কাটা অসংখ্য সেগুনগাছের মোথা। মহাসড়ক সন্নিহিত হওয়ায় গাছ কেটে নির্বিঘ্নে নিয়ে যেতে পেরেছে চোররা। মোথা দেখে মনে হয়েছে কয়েক দিন আগে গাছগুলো কাটা হয়েছে। কর্তনকৃত গাছের ডালপালার পাতাও শুকিয়ে গেছে। অনেক মোথা ডালপালা দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে। এ ছাড়া সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ভেতরে দেখা গেছে, অনেক আগে কাটা একাধিক ছোট-বড় গাছের মোথা। স্থানীয় কেউ কেউ জানিয়েছে, মহাসড়ক থেকে পায়ে হেঁটে সংরক্ষিত বনাঞ্চলে প্রবেশের কয়েকটি রাস্তা রয়েছে। মহাসড়কের পাশে ঘন গাছপালা থাকায় রাতের আঁধারে এই গাছগুলো কাটায় সময় কেউ দেখতে পাননি। গাছের মোথা ও ডালপালা দেখে গাছ কেটে নেওয়ার বিষয়টি জানতে পেরেছেন তারা। স্থানীয়দের অভিযোগ, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করেই গাছগুলো কাটা হয়েছে, অন্যথায় বড় বড় এত গাছ কেটে নেওয়া কোনো দিনও সম্ভব হবে না। এমনিতে চুনতিতে সংরক্ষিত এলাকায় দিন দিন গাছের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। এরই মধ্যে দুই শতাধিক বড় সাইজের সেগুনগাছ কেটে নেওয়ায় পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে।
সাতগড় বনবিট কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম প্রতিদিনের সংবাদকে জানান, রাতের আঁধারে ৪০-৫০টি সেগুনগাছ কেটে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। কর্তনকৃত কিছু গাছ ও একটি ব্যাটারিচালিত রিকশা জব্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় পৃথক ৬টি মামলা করা হয়েছে। তবে গাছ কাটার সঙ্গে জড়িত কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।
চুনতি রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, মহাসড়কের পাশে সংরক্ষিত বনাঞ্চল থেকে সেগুনগাছ কেটে নেওয়ার বিষয়টি অবগত হয়েছি। রাতের আঁধারে কেটে নেওয়া কিছু গাছ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বনবিভাগের চট্টগ্রাম অঞ্চলের বন সংরক্ষক (সিএফ) ড. রেজাউল করিম মোল্যা প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, খোঁজ নিয়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
"