শৈলকুপা (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি
পতেঙ্গায় জাহাজে বিস্ফোরণ
ডেক ক্যাপ্টেন নিহত সৌরভের বাড়িতে মাতম
চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় ইস্টার্ন রিফাইনারির তেলবাহী জাহাজে বিস্ফোরণের পর অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহত সৌরভ কুমার সাহার (২৪) বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। সৌরভের বাবা মানিক সাহা, মা সীমা সাহা আর দিদিমা মিনতী সাহার বিলাপে ভারী হয়ে উঠছে এলাকার বাতাস।
গত সোমবার বেলা ১১টার দিকে চট্টগ্রাম বন্দরের জ্বালানি তেল খালাসের ইস্টার্ন রিফাইনারির ডলফিন জেটিতে বাংলার জ্যোতি নামে তেলবাহী জাহাজে বিস্ফোরণের ঘটনায় নিহত ডেক ক্যাপ্টেন (ইন্টার্ন) সৌরভ কুমার সাহার বাড়ি ঝিনাইদহের শৈলকুপায়। বরিশাল মেরিন একাডেমি থেকে পড়ালেখা শেষ করে গত জুলাই মাসে এক বছরের ইন্টার্ন করতে তেলবাহী জাহাজ বাংলার জ্যোতিতে কাজ শুরু করেন তিনি।
গত সোমবার সন্ধ্যায় নিহত সৌরভের কবিরপুর পৌরসভা এলাকায় বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, নিহতের বাবা ও মা আহাজারি করছেন। এ পরিবারের অন্য সদস্যরাও শোকাহত। সৌরভের নিহত হওয়ার খবরে তার বাড়িতে এসে ভিড় করেছেন পাড়া-প্রতিবেশীরা।
সৌরভের বাবা মানিক সাহা জানান, তার ছেলে সৌরভ শৈলকুপা সরকারি ডিগ্রি কলেজ থেকে ২০২০ সালে উচ্চমাধ্যমিক শেষ করে বরিশাল মেরিন একাডেমিতে ভর্তি হয়। ২০২৩ সালে মেরিন একাডেমির পড়ালেখা শেষ হয় তার। এরপর চলতি বছরের জুলাই মাসে সৌরভ ইন্টার্ন করতে বাংলার জ্যোতিতে যোগদান করে। বেলা ১১টায় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটলেও তিনি দুপুর আড়াইটার দিকে জানতে পারেন ছেলের মৃত্যুর খবর। তার আশা ভরসা সব শেষ করে ইন্টার্ন শেষ না করেই বাড়ি ফিরছে সৌরভ। মানিক সাহার দুই ছেলের মধ্যে সৌরভ বড়।
সৌরভের মা সীমা সাহা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, তার ছেলের সঙ্গে গত রবিবার দুপুরে শেষ কথা হয়। সে বলেছিল কুতুবদিয়া থেকে তেল নিয়ে রওনা হয়েছে। গত সোমবার সকালে চট্টগ্রাম পৌঁছবে। আমি বলেছিলাম একটু ভিডিও কল দিতে। কিন্তু জাহাজের ডেকে অনেক কষ্ট, সেটা দেখে আমরা কষ্ট পাব ভেবে আমাদের সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলত না।
দিদিমা মিনতী সাহা জানান, তার নাতী সৌরভ বাড়ি থেকে জাহাজে যাওয়ার আগে সব ঘরে রঙ দিয়ে যায়। আর যাওয়ার সময় বলেছিল এটাই আমার শেষ যাওয়া।
সৌরভের বন্ধু বাঁধন আহমেদ বলেন, ‘সৌরভ খুবই মেধাবী আর শান্তশিষ্ট স্বভাবের ছিল। সবসময় বলতো বাবার ইচ্ছা পূরণ করবে। কিন্তু তা আর হলো না। সৌরভ নেই, বিশ্বাসই করতে পারছি না।’
"