ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আহসানুল ইসলাম দীপ্তর বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর বিচার ও তার বন্ধুদের নামে সাজানো মামলা নিঃশর্ত প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়েছে। গতকাল বুধবার গাইবান্ধা শহরের ডিবি রোডের গানাসাস মার্কেটের সামনে গাইবান্ধাবাসীর ব্যানারে আয়োজিত মানববন্ধন থেকে এ দাবি জানানো হয়। মানববন্ধনে নিহত দীপ্তর বন্ধু, সহপাঠী ও স্বজনসহ সর্বস্তরের মানুষ অংশ নেয়।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, গাইবান্ধা শহরের মহুরীপাড়ার বাসিন্দা শহীদুল ইসলাম মাজুর ছেলে আহসানুল ইসলাম দীপ্ত গত ৩০ আগস্ট ঢাকার কুর্মিটোলায় সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হন। দুর্ঘটনার পর তার মানিব্যাগ ও মোবাইল ফোন দুর্বৃত্তরা হাতিয়ে নেয়। পরে নিলয় নামে এক পথচারী তাকে উদ্ধার করে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণ বন্ধে একটি অস্ত্রোপচার ও আইসিইউর জন্য সেখান থেকে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে রেফার করা হয়। কিন্তু আইসিইউর বেড ভাড়া বাবদ ৭ হাজার ৫০ টাকা দাবি করেন ওয়ার্ডবয় ও কর্মচারীরা। সেখানে দ্বীপ্তর স্বজনরা উপস্থিত না থাকায় টাকা দেওয়া যায়নি। এ কারণে দীপ্তকে চিকিৎসা সেবা না দিয়ে জরুরি বিভাগের মেঝেতে ৯ ঘণ্টা ফেলে রাখা হয়। শনিবার সকালে তার মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে ওই দিন দুপুরে দীপ্তর বন্ধুরা হাসপাতালে আসেন এবং বিনা চিকিৎসায় দীপ্তর মৃত্যুর কারণ জানতে চান। ওইদিন রাতেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আরো দুটি মৃত্যুর ঘটনায় হামলা ও ভাঙচুর বরা হয়। বিনা চিকিৎসায় দীপ্তর মৃত্যুর ঘটনা ধামাচাপা দিতে তার বন্ধুদের মামলায় জড়ানো হয়, এমনকি কাতার প্রবাসী বন্ধুকেও আসামি করা হয় বলে বক্তারা জানান।

মানববন্ধনে অংশ নেওয়া নিহত দীপ্তর ছোট বোন মার্জিয়া তার আবেগ ধরে রাখতে পারেনি। তিনি বলেন, ‘আমি আমার ভাইকে ছাড়া থাকব কীভাবে? ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডাক্তার ও সংশ্লিষ্ট কর্মচারীদের চরম অবহেলায় আমার ভাই দীপ্তর মৃত্যু হয়েছে। আমি এ মৃত্যুর বিচার চাই। ভাইয়ের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে তার বন্ধুদের নামে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও গ্রেপ্তারকৃত জয়ের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করা হয়। মানববন্ধনে বক্তব্য দেন দীপ্তর বাবা শহীদুল ইসলাম মাজু, ভাই শাওন ইসলাম, বন্ধু তামজিদ রায়হান শিথিল, আবদুল্লাহ সানি, রাশেদ স্বর্ণ বাবু, সামিউল ইসলাম নিবির প্রমুখ।

"