বেড়া-সাঁথিয়া (পাবনা) প্রতিনিধি

  ০৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

সাবেক ডেপুটি স্পিকার ও তার ছেলের স্থাপনা দখলমুক্ত করার দাবি

ব্যস্ত বাজার এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের জায়গা দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করার অভিযোগ উঠেছে সাবেক ডেপুটি স্পিকার ও তার ছেলের বিরুদ্ধে। এসব স্থাপনা উচ্ছেদ করে বাজার এলাকা দখলমুক্ত করতে পাবনা জেলা প্রশাসক ও পানি উন্নয়ন বোর্ডকে চিঠি দিয়েছেন স্থানীয় হাটবাজার ইজারাদাররা।

জানা গেছে, ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে পাবনার বেড়া সিঅ্যান্ডবি বাজার এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের জায়গা দখল করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করেছেন সাবেক ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকু ও তার ছেলে আসিফ শামস রঞ্জন। এতে মহাসড়কে যানজট বাড়ার পাশাপাশি ভোগান্তি বেড়েছে বাজারের ক্রেতা বিক্রেতাদের। ক্ষমতার দাপটে কেউ কিছু না বললেও হাসিনা সরকার পতনের পর তাদের অবৈধ স্থাপনা দখলের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন স্থানীয়রা।

একে দখলমুক্ত করার দাবি তুলছেন তারা। সম্প্রতি একে দখলমুক্ত করতে পাবনা জেলা প্রশাসক ও পানি উন্নয়ন বোর্ডকে চিঠি দিয়েছেন করমজা চতুর হাটবাজার ইজারাদাররা।

জেলা প্রশাসককে দেওয়া চিঠিতে বলা হয়েছে, ঢাকা-পাবনা মহাসড়কের পাশে বেড়া সিঅ্যান্ডবি বাজার এলাকায় একসময় পুরোনো একটি ইটভাটা ছিল। যেটি অধিগ্রহণ সূত্রে বর্তমানে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জায়গা। এর পাশে কৃষিপণ্য ক্রয়-বিক্রয়ের বাজার রয়েছে, যা ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বেড়া পৌরসভা থেকে ৪ কোটি ৮৫ লাখ ১৯ হাজার টাকায় ইজারাপ্রাপ্ত হন মো. মিজানুর রহমান (উকিল) ও ইদ্রিস আলী সরদার। এ বাজারে ক্রেতা বিক্রেতা সমাগম বৃদ্ধি পাওয়ায় পাশের মহাসড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। ফলে বাজারঘেঁষা সড়ক বিভাগের সম্মতি নিয়ে অব্যবহৃত নিচু জায়গা ভরাট করে বাজারে আসা ভ্যান, রিকশা, অটোরিকশা ও সড়কে চলাচলকারী সিএনজিসহ বিভিন্ন যান পার্কিংয়ের উপযোগী করে বাজার পক্ষ। কিছুদিন পর ক্ষমতার দাপটে জায়গাটি দখল করে অবৈধ স্থাপনা গড়ে তোলেন পাবনা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু ও তার ছেলে সাবেক বেড়া পৌর মেয়র আসিফ শামস রঞ্জন। এতে মহাসড়কে বেড়েছে তীব্র যানজট, ঘটছে দুর্ঘটনা। ভোগান্তি বেড়েছে যাত্রী ও বাজারের ক্রেতা কিক্রেতাদের। এক্ষেত্রে দ্রুত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে জায়গাটিকে দখলমুক্ত করতে জেলা প্রশাসককে অনুরোধ জানানো হয়েছে চিঠিতে।

বাজারের ইজারাদাররা এ-সংক্রান্ত আরেকটি চিঠি দিয়েছেন পাউবোর বেড়া পওর বিভাগকে। এতে বলা হয়েছে, ওই দপ্তরের অধিগ্রহণ করা জায়গা অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের মধ্য দিয়ে দখল করা হয়েছে। এতে সড়কে যানজট বৃদ্ধির ফলে ভোগান্তি বেড়েছে। দ্রুত পরিমাপ করে এর সীমানা পুনর্নির্ধারণ করতে অনুরোধ জানানো হয়েছে এ চিঠিতেও। সম্প্রতি সরেজমিনে ওই এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সরকারি জায়গা দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। এতে মহাসড়কে যানজট বেড়েছে, বাজারে আসা ক্রেতা-বিক্রেতাদেরও ভোগান্তি বেড়েছে। বাজারে আসা আবদুল লতিফ মালিথা, রানা ও হালিমসহ কয়েকজনের সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা হয়। তারা জানান, সরকারি জায়গা জনগণের সুবিধায় ব্যবহার হওয়ার কথা থাকলেও সাবেক এমপি ও তার ছেলে রঞ্জন তা দখল করে রেখেছেন। দ্রুত এটি অপসারণ করে দখলমুক্ত করা হোক। যাতে যাত্রী ও বাজারে আসা ক্রেতা বিক্রেতারা উপকৃত হন।

এ ব্যাপারে বাজার ইজারাদার মিজানুর রহমান ও ইদ্রিস আলী সরদার বলেন, প্রথমে ডেপুটি স্পিকার ও তার ছেলে দখলে নিয়ে স্থাপনা নির্মাণ করে। সরকার পতনের পর দখলমুক্ত হচ্ছে অবৈধ স্থাপনা। পাশাপাশি নতুন করে বিভিন্ন দখলদারি মহল এ জায়গাসহ অন্যান্য জায়গাও দখলের চেষ্টা করছে। জনস্বার্থে এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। এ বিষয়ে পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়া পওর বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, আমি ক’দিন হলো বেড়ায় যোগদান করেছি। অভিযোগ এর বিষয়ে ঠিক বলতে পারছি না। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close