রাকিবুল ইসলাম, (মানিকগঞ্জ)

  ০৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

গ্রামের অস্তিত্ব নেই ভোটার তালিকায় দুজনের নাম

মানিকগঞ্জের ৭ উপজেলার মধ্যে আয়তনে সবচেয়ে বড় হরিরামপুর। ২৪৫.৪২ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এ উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের মধ্যে ৯টি ইউনিয়ন পদ্মা নদীর করাল গ্রাসে বিলীন হচ্ছে। এতে স্থানীয় লোকজন ফসলি জমি ও ঘরবাড়ি হারাচ্ছে। এ এলাকার মানুষ নিঃস্ব হয়ে বিভিন্ন স্থানে বসতি গড়েছে। তবে উপজেলার আজিমনগরের পূর্ব আজিমনগর মধ্যপাড়া ও গোপীনাথপুরের কদমতলী গ্রামের অস্তিত্ব সম্পূর্ণরূপে বিলীন হয়ে গেলেও বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের ভোটার তালিকায় এ দুটি গ্রামে রয়েছে ২ জন ভোটারের নাম। স্থানীয়দের ধারণা, ২০২১ সালে ভোটার তালিকা হালনাগাদের সময় এ নাম তালিকাভুক্তি হয়ে থাকতে পারে।

সরেজমিনে জানা যায়, হরিরামপুর উপজেলার আজিমনগর ইউনিয়নের পূর্ব আজিমনগর মধ্য পাড়া গ্রাম ১৯৮৬ সালে নদীভাঙনের ফলে সম্পূর্ণ বিলীন হয়ে যায়। একই সঙ্গে গোপিনাথপুর ইউনিয়নের কদমতলী গ্রামটি নদীভাঙনের ফলে ধীরে ধীরে বিলীন হতে থাকে এবং ২০০৪ সালে তা সম্পূর্ণ বিলীন হয়ে যায়। এ গ্রামের অস্তিত্ব সম্পর্কে অনেকের ধারণাই নেই। বিশেষ করে বর্তমান প্রজন্মের অনেকেই জানে না এ গ্রাম সম্পর্কে।

আজিমনগর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. মোন্নাফ মিয়া জানান, বহুবছর আগেই গ্রামটি নদীতে বিলীন হয়েছে। এ গ্রামের ১ ইঞ্চি জায়গাও আর অবশিষ্ট নেই বসবাসের জন্য। এ গ্রামের সবাই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বসতি স্থাপন করেছে। কিন্তু ভোটার তালিকায় মুরাদ নামে ব্যক্তির নাম থাকার বিষয়টি নিয়ে এলাকায় গুঞ্জন শোনা যায়। এ নামে কাউকে কখনো দেখা যায়নি পূর্ব আজিমনগর মধ্যপাড়ায়।

দীর্ঘদিন আগে উপজেলার মানচিত্র থেকে বিলীন হলেও বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের ভোটার তালিকায় গোপিনাথপুর ইউনিয়নের কদমতলী গ্রামে মৌসুমী আক্তার নামে এক নারী ভোটারের ভোটার তালিকা পাওয়া গেলেও তার সম্পর্কে কেউ সঠিক তথ্য দিতে পারেননি।

গোপীনাথপুর ইউনিয়নের কদমতলী গ্রাম সম্পর্কে স্থানীয়রা জানান, এক সময় এ গ্রামে অনেক বসতি থাকলেও ২০০৪ সালে পদ্মা নদীর ভয়াবহ ভাঙনে গ্রামটি ধীরে ধীরে সম্পূর্ণ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। কিন্তু ভোটার তালিকায় মৌসুমী আক্তার নামে একজন আছে, শুনেছি তাকে কখনো দেখেনি। এ নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে বিভিন্ন সময় গুঞ্জন শোনা যায়। এ নামের নারীর সম্পর্কে আশপাশের অনেকের কাছে জিজ্ঞেস করেও পাওয়া যায়নি কোনো তথ্য। এসব ভূতুড়ে নামের সংশোধন করা সময়ের দাবি বলেও জানান অনেকে।

গোপীনাথপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আ. মতিন মোল্লা জানান, এক সময় কদমতলী গ্রাম ছিল কিন্তু নদীভাঙনে তা বিলীন হয়ে যায়। ২০০৪ সালের বন্যায় কদমতলী গ্রাম নদীগর্ভে চলে যায়। কাগজপত্রে একজন ভোটারের নাম থাকলেও তার কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।

হরিরামপুর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা হাফিজা খাতুন প্রতিদিনের সংবাদকে জানান, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া এ বিষয়ে কোনো তথ্য দিতে পারবেন না। তিনি বলেন, এ বিষয়ে কেউ অভিযোগ দিলে তা খতিয়ে দেখা হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close