শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি

  ০১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

চাকরি স্থায়ী করার দাবিতে শ্রীপুরে শ্রমিক বিক্ষোভ

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার বোর্ডঘর এলাকায় স্কয়ার ও শ্রীপুরে জেনফার ফার্মাসিটিক্যাল নামে ওষুধ কারখানার শ্রমিকরা বিক্ষোভ করেছেন। এতে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক দীর্ঘ যানজটে ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা। গতকাল শনিবার ভোর ৫টার দিকে কালিয়াকৈরের বোর্ডঘর এলাকায় মহাসড়কে টায়ারে অগ্নিসংযোগ ও কারখানার সামনে অবস্থান নিয়ে শ্রমিকরা চাকরি স্থায়ী করার দাবিতে এ বিক্ষোভ করেন।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইমরান বলেন, স্কয়ার ফার্মাসিটিক্যাল ওষুধ কারখানার শ্রমিকরা রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করলে ৪৫ মিনিট ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং তাদের রাস্তা থেকে সরিয়ে দিলে যান চলাচল শুরু হয়।

আন্দোলনকারী শ্রমিকরা রাস্তা থেকে সরে গেলেও স্কয়ার ফার্মাসিটিক্যালের উচ্চপদস্থ কিছু কর্মকর্তার পদত্যাগ ও সপ্তাহে দুদিন ছুটি, চাকরিকাল ১০ বছর হলে চাকরি স্থায়ীকরণসহ ২১ দফা দাবি না মানা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন তারা।

এদিকে গাজীপুরের শ্রীপুরে জেনফার ফার্মাসিটিক্যাল নামে একটি ওষুধ কারখানার শ্রমিকরা কারখানার মূল ফটকের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন। গতকাল শনিবার সকাল ৭টা থেকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের নয়নপুর বাজার সংলগ্ন কারখানার মূল ফটকের সামনে তাদের ১৩ দফা দাবি নিয়ে বিক্ষোভ করেন। পরে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ পরিদর্শক আবদুল লতিফ কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে বিষয়গুলো সমাধানের আশ্বাস দিলে শ্রমিকরা কারখানার মূল ফটকের সামনে অবস্থান নেন। এ সময় আন্দোলনকারী শ্রমিকরা জানান, তাদের এসব অভিযোগ কারখানার এইচ আর এডমিন বিভাগের এজিএম আজিজুল্লাহ আবেদের কাছে একাধিকবার জানালেও তিনি কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। তিনি সবসময় শ্রমিকদের সঙ্গে খারাপ আচরণসহ চাকরি থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দিয়ে থাকেন।

শ্রমিকরা আরো জানান, এইচ আর এডমিন বিভাগের এজিএম আজিজুল্লাহ আবেদের পদত্যাগসহ তাদের ন্যূনতম বেতন ২০ হাজার ৫০০ টাকা করতে হবে এবং বেতনের সঙ্গে পুরাতন শ্রমিকদের বেতন রিভাইস করতে হবে। নতুন অস্থায়ী শ্রমিকদের ৬ মাসের মধ্য স্থায়ীকরণ করতে হবে। সব পুরাতন ও অস্থায়ী শ্রমিকদের ১৫ দিনের ভেতরে স্থায়ী করতে হবে। ন্যায্য দাবি আদায়কারীদের সঙ্গে যারা সম্পৃক্ত তাদের চাকরি থেকে ছাঁটাই ও হয়রানি করা যাবে না। সাপ্তাহিক ছুটি দুদিন পুনর্বহাল করতে হবে। নাইট এলাউন্স ৩০০ টাকা করতে হবে। শ্রমিকদের হাজিরা বেতন ১ হাজার টাকা নিশ্চিত করতে হবে। জমাকৃত ছুটির টাকা ১০০ শতাংশ বেতন অনুযায়ী পরিশোধ করতে হবে। বাৎসরিক সর্বনিম্ন ২০ শতাংশ বেতন বৃদ্ধি করতে হবে। স্থায়ী নারী শ্রমিকদের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে অস্থায়ী নারী শ্রমিকদেরও বেতনসহ মাতৃকালীন ৬ মাস ছুটি দিতে হবে। শ্রমিকদের ভোটের মাধ্যমে শ্রমিক ইউনিয়ন গঠন করতে হবে। প্রত্যেক স্থায়ী শ্রমিকদের ২০ বছর পূর্ণ হলে কোম্পানির খরচের মাধ্যমে হজে পাঠাতে হবে। কর্মরত অবস্থায় কোনো শ্রমিক আহত হলে তার চিকিৎসা বাবদ সব খরচ কোম্পানি বহন করতে হবে। পরে শ্রমিক পুলিশ ও কারখানা কর্তৃপক্ষের সমন্বয়ে এক বৈঠক করে। দুপুর ২টার দিকে কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছতে না পারলে শ্রমিকরা মহাসড়ক অবরোধ করে। এতে সড়কের দুই পাশে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা। পরে দ্বিতীয় দফা বৈঠকে শ্রমিকদের কিছু দাবি মেনে নিলে দুপুর ৩টার দিকে তাদের কর্মসূচি তুলে নিলে মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

শ্রমিকদের সমন্বয়ক আরিফুল ইসলাম বলেন, কারখানা মালিকপক্ষ সবাই দেশের বাইরে আছেন। তবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ আমাদের কিছু দাবি মেনে নিয়েছেন। বাকি দাবিগুলো আগামী এক মাসের মধ্যে আলোচনা সাপেক্ষে সমাধান করা হবে। এ বিষয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষ কোনো ধরনের বক্তব্য দিতে রাজি হয়নি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close