প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ১৫ আগস্ট, ২০২৪

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি ১১৪ নাগরিকের খোলা চিঠি

দীর্ঘ ১৬ বছরের কর্তৃত্ববাদী শাসনের অবসান ঘটিয়ে ঐতিহাসিক বিজয় অর্জন করায় বাংলাদেশের সাহসী ছাত্র ও নাগরিকদের অভিনন্দন জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি বিশ্বের ১১৪ জন বিশিষ্ট নাগরিক খোলা চিঠি দিয়েছেন। তাদের বেশিরভাগই প্রবাসী বাংলাদেশি। ওই খোলা চিঠিতে প্রধান উপদেষ্টার কাছে বেশ কিছু দাবিও জানিয়েছেন তারা।

খোলা চিঠিতে ছাত্র-জনতাকে উদ্দেশ্য করে বলা হয়েছে, ‘আপনাদের অদম্য সাহস, ঐক্য এবং দৃঢ়সংকল্প সম্ভাবনার এক নতুন যুগের পথ খুলে দিয়েছে। ন্যায়বিচার, সাম্য এবং ধর্মনিরপেক্ষতার ভিত্তিতে জাতির নতুন ভবিষ্যৎ নির্মাণের পথে আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ওপর আস্থা রাখছি।

‘এ সংকটময় সন্ধিক্ষণে, বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশের বন্ধুদের সঙ্গে এক হয়ে আমরা শিক্ষাবিদ, লেখক, ব্লগার, সাংবাদিক, সামাজিক ও সেক্যুলার অ্যাকটিভিস্ট, ছাত্র, পেশাজীবী এবং বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত সংশ্লিষ্ট নাগরিকরা নিম্নলিখিত দাবিগুলো উপস্থাপন করছি। আমরা নিশ্চিত থাকতে চাই, বিদায়ি সরকারের রেখে যাওয়া সমস্যাগুলো নতুন সরকার সমাধান করবেন এবং নাগরিকের মর্যাদা, সমঅধিকার, সেক্যুলার ও ধর্মীয় সম্প্রীতির বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা শুরু হবে।

‘আমরা পূর্ববর্তী সরকারের অধীনে সংঘটিত সব বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, রাজনৈতিক খুন এবং বলপূর্বক গুমের তদন্তের জন্য একটি স্বাধীন কমিশন গঠনের দাবি জানাই, বিশেষত যেসব ক্ষেত্রে শেখ হাসিনার শাসনের বিরোধীতাকারী ছাত্র বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। কমিশনের তদন্ত রিপোর্ট জনসমক্ষে প্রকাশ করতে হবে এবং উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাসহ, দায়িত্ব নির্বিশেষে দোষী ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।

‘পূর্ববর্তী সরকারের কর্মকর্তাদের দুর্নীতির সব অভিযোগ পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্ত করা এবং তদন্তের ফলাফল অবশ্যই জনসাধারণের কাছে স্বচ্ছতার সঙ্গে জানাতে হবে। চুরি এবং লুট হওয়া সম্পদ পুনরুদ্ধার করে দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে এবং সর্বসাধারণের কল্যাণার্থে ব্যয় করতে হবে।’

‘বিগত সরকারের পতনের পর দাঙ্গা ও ভাঙচুরের ঘটনা শান্তিকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। শৃঙ্খলা ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার স্বার্থে আমরা এ ধরনের অপকর্মের সঙ্গে জড়িত সবার গ্রেপ্তার ও বিচারের জন্য অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাই।

‘হিন্দুদের মন্দির এবং অন্য ধর্মীয় স্থাপনায় সাম্প্রতিক হামলার পেছনের অপরাধীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার এবং বিচারের আওতায় আনার জন্য দ্রুত পদক্ষেপের দাবি জানাই। যেকোনো ধর্মীয় সংখ্যালঘুর সুরক্ষা এবং সব সম্প্রদায়ের শান্তিপূর্ণভাবে সহাবস্থানের বাংলাদেশ নতুন সরকারকে অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে।

সাক্ষরকারী ১১৪ জন বিশিষ্ট নাগরিকরা হলেন- নাদিয়া ইসলাম, জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ার (যুক্তরাজ্য), ড. ফাহমিদুল হক, ফ্যাকাল্টি বার্ড কলেজ (যুক্তরাষ্ট্র), ইয়েসুস কালফিলো টিনোকো, এআই ইঞ্জিনিয়ার (জার্মানি), রেদওয়ান চৌধুরী, উদ্যোক্তা (যুক্তরাষ্ট্র), সুব্রত দাস, প্রকাশক (ভারত), আলিসিয়া সালাটা, লজিস্টিক প্রফেশনাল (জার্মানি), জোবায়েন সন্ধি, নির্বাসিত লেখক জার্মান পেন সেন্টার, এডিটর-ইন-চিফ অংশুমালী, ব্যারিস্টার শাহ আলম ফারুক, আইনজীবী (যুক্তরাজ্য) ইয়ুদিথ হ্যুভে, সোশ্যাল একটিভিস্ট (জার্মানি), দেবযানী কথাসব, লেখক (ভারত), ফিরোজ আহমেদ, গণসংহতি আন্দোলন (বাংলাদেশ), জামাল আবেদীন ভাস্কর, সাংবাদিক ও অ্যাকটিভিস্ট (যুক্তরাজ্য), জাকির তালুকদার, কথাসাহিত্যিক (বাংলাদেশ), আহমেদ নাদির, সেক্যুলার সোস্যাল অ্যাকটিভিস্ট (জার্মানি), নাজিয়া হোসাইন জামি, অ্যাকটিভিস্ট, ব্লগার (জার্মানি), রবিন হক, পেশাজীবী (জার্মানি), অর্ক ভাদুরী, সাংবাদিক (ভারত ও যুক্তরাজ্য) প্রমুখ।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close