ঝিনাইদহ প্রতিনিধি

  ১৫ আগস্ট, ২০২৪

দুই টাকার খাবারে ‘তৃপ্তি’র হাসি

মাত্র দুই টাকায় দুপুরের খাবার। এখন আর দুই টাকা দিয়ে লজেন্স ছাড়া তেমন কিছু পাওয়া যায় না। ভিখারিকে দিলেও অনেক সময় নিতে চায় না। আর সেই সামান্য দুই টাকার বিনিময়ে এতিম শিশুদের হাতে দুপুরের খাবার তুলে দিয়েছেন ঝিনাইদহের প্রগতি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা। প্রগতি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পক্ষ থেকে নিয়মিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে ‘দুই টাকায় হাসি’-এর দুপুরের খাবারের আয়োজন করা হয়েছিল।

‘তৃপ্তির হাসি ফুটুক এতিম শিশুদের মুখে মুখে’- স্লোগান নিয়ে গত মঙ্গলবার দুপুরে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার মথুরাপুর আদর্শ এতিমখানায় এ খাবার বিতরণ করা হয়। প্রতি মাসের নিয়মিত আয়োজনের সপ্তম পর্বে এদিন ঝিনাইদহে মথুরাপুর আদর্শ এতিমখানার প্রায় ৪০ জন শিশু মাত্র ২ টাকায় দুপুরের খাবার খায়। খাবারের তালিকায় ছিল- সাদা ভাত ও গরুর মাংস।

মথুরাপুর আদর্শ এতিমখানার ছাত্র আজিজ মিয়া খাবার পেয়ে বলে, ‘এটা আমার কাছে স্বপ্নের মতো মনে হচ্ছে। দুই টাকায় খাবার পাব, এটা কখনো ভাবিনি। খাবার বিতরণের সময় উপস্থিত ছিলেন প্রগতি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সভাপতি সাজিদ মাহমুদ, সাধারণ সম্পাদক এইচ এম জহুরুল ইসলাম, দুই টাকায় হাসি পরিচালনা কমিটির সমন্বয়ক মো. মেহেদী হাসান, মো. মনিরুল ইসলাম, মো. ওসমান গণিসহ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের দায়িত্বশীল সদস্যরা। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন স্বপ্নচারু অ্যাকাডেমি অব ফাইন আর্টসের পরিচালক শাহিন চারুদেশ ও ইঞ্জিনিয়ার আবদুর রহমান চৌধুরী প্রমুখ।

স্বপ্নচারু অ্যাকাডেমি অব ফাইন আর্টসের পরিচালক শাহিন চারুদেশ বলেন, প্রগতি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের দুই টাকায় হাসি কর্মসূচির সার্বিক সফলতা কামনা করি। এই কার্যক্রম শুধু ঝিনাইদহে নয়, সারা দেশে যেন চলমান থাকে, এই প্রত্যাশা ব্যক্ত করছি। ইঞ্জিনিয়ার আবদুর রহমান চৌধুরী বলেন, কোমলমতি শিশুদের এই মুখের হাসি যেন সদ্য ফোটা গোলাপের মতো ফুটে উঠেছে।

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এইচ এম জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘অসহায় এতিম শিশু, শ্রমজীবী ও অসহায়রাও তাদের মতো করে আত্মসম্মান নিয়ে সমাজে বসবাস করছেন। সম্পূর্ণ ফ্রিতে খাবার দেওয়া হলে তাদের আত্মসম্মানবোধে আঘাত করা হবে। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিই, ফ্রিতে না দিয়ে দুই টাকায় তাদের কাছে খাবার পৌঁছে দিতে।’

প্রগতি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সভাপতি সাজিদ মাহমুদ বলেন, ‘প্রতিনিয়ত আমাদের কত টাকা তো এদিক-সেদিক খরচ হয়। আমাদের চারপাশে থাকা এতিম, শ্রমজীবী ছিন্নমূল পথশিশুদের জন্য কি আমরা এই সামান্য অর্থ ব্যয় করতে পারি না। আমরা মনে করি, সমাজের পিছিয়ে পড়া এসব মানুষের সহযোগিতা করার জন্য অঢেল ধন-সম্পদের চেয়ে সুন্দর মানসিকতাই বড়। এমন চিন্তা থেকে একদিন বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে টংদোকানের আড্ডা বাদ দিয়ে সেই টাকা এতিম শিশুদের ও সুবিধাবঞ্চিতদের মুখে হাসি ফোটানোর শপথ নিই। তারপর থেকেই এই সংগঠনের পথচলা শুরু।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close