নিজস্ব প্রতিবেদক
চাল চিনি মুরগির দাম বাড়তি, স্বস্তি সবজিতে
ছুটির দিন গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বাজারে যেন আগুন। চাল, চিনি, মুরগি সবকিছুই কিনতে হয়েছে বাড়তি দামে। ক্রেতারা বলেছেন, নজরদারির অভাবে বাজার লাগামহীন। সরবরাহে ঘাটতি না থাকলেও সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারগুলোয় আবারও বেড়েছে চালের দাম। কেজিতে ২ থেকে ৩ টাকা বেড়ে মোটা চাল সর্বনিম্ন ৫৪ ও সরু চাল ৭০ টাকার ওপরে বিক্রি হচ্ছে। শুক্রবার রাজধানীর শেওড়াপাড়া, কারওয়ানবাজার, মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট ও টাউন হল বাজারে সরেজমিন বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে। ব্যবসায়ীরা বলেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলন কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে এলেও পাড়া-মহল্লা, হাটবাজারে আগের থমথমে পরিস্থিতির রেশ আছে। বাজারে মানুষ কম আসছেন। তাতে বিক্রি কমেছে। পণ্যের সরবরাহ বাড়ায় সবজির দাম কিছুটা কমেছে।
রামপুরা বাজারে এক ক্রেতা বলেন, একটা সবজিও নেই ৪০ টাকার মধ্যে। যাই জিজ্ঞাসা করি ৬০ থেকে ৭০ টাকা। অবস্থা এমন হয়েছে, চারটা জিনিস কিনতে এসে এখন দুটি নিয়ে ফিরতে হয়। এভাবে চলতে থাকলে তো গরিব মানুষ না খেয়ে মারা যাবে। ক্রেতাদের এসব অভিযোগ প্রসঙ্গে সবজি বিক্রেতা মো. মাহফুজ বলেন, আন্দোলনের কয়েকদিন বাজারে সরবরাহ কম থাকায় সব ধরনের সবজির দাম অনেক বেশি ছিল। এখন বাজারে সবজি আসতে শুরু করায় দাম কমে অর্ধেকে নেমেছে। তবে বিক্রি কম হচ্ছে। মোহাম্মদপুরের কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, কেজি প্রতি ২০ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত দাম কমেছে অনেক সবজির। দুই সপ্তাহ আগে আকস্মিকভাবে বেড়ে যায় কাঁচামরিচের দাম। ৬০০ টাকায়ও বিক্রি হয়েছে ১ কেজি কাঁচা ঝাল। গত সপ্তাহেও এ রান্নার উপকরণ ছিল ৩২০ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ১৪০ টাকা কমেছে মরিচের দাম। বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকায়।
ভ্রাম্যমাণ সবজি বিক্রেতা মো. মিজানুর রহমান বলেন, কাঁচামরিচের দাম কমছে। এখন ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা পাল্লা (৫ কেজি)। আমরা খুচরা ২০০ টাকা কেজি বিক্রি করছি। শুধু কাঁচামরিচ নয়, দাম কমেছে অন্য সবজিরও। এদিন বরবটি বিক্রি হতে দেখা গেছে ৮০ টাকা কেজি দরে, যা গত সপ্তাহে ছিল ১২০ টাকা। শসা ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি। কাঁকরোল ৮০ থেকে ১০০ ও বেগুন ৭০ থেকে ৮০ টাকা। টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা কেজিদরে। গাজর ১৬০ থেকে ১৮০ ও করলা ৮০ টাকা কেজিদরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। ঝিঙা বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজিদরে। একই দামে বিক্রি হচ্ছে ধুন্দুল, চিচিঙ্গা, পটোল, ঢ্যাঁড়শ। পেঁপে বিক্রি হতে দেখা গেছে ৬০ টাকা কেজিদরে। আবার ১৪০ টাকার ওপরে থাকা করলার কেজি কমে হয়েছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা। ঢাকার বিভিন্ন বাজারে ঢ্যাঁড়শ, চিচিঙ্গা, ঝিঙা, পটোল, পেঁপে, চালকুমড়া, লাউ প্রভৃতি সবজি ৪০ থেকে ৬০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে। তবে বরবটির দাম ২০ টাকা বেড়ে ৮০ থেকে ১২০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৭০ থেকে ১৯০ ও সোনালি মুরগি ২৬০-২৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। ফার্মের মুরগির প্রতি ডজন বাদামি ডিমের দাম ছিল ১৫০ টাকা। তবে তিন দিন আগেও ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে ১০ থেকে ২০, সোনালি মুরগি ২০ থেকে ৩০ ও ডিমের ডজন ১০ টাকা কম ছিল। মাছের দাম এখনো চড়া। প্রতি কেজি পাঙাশ ২০০ থেকে ২২০ ও তেলাপিয়া ২৪০ থেকে ২৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
"