জাহিদুল হাসান, জবি
সরকারি চাকরি
কোটা পদ্ধতি বাতিল চেয়ে জবিতে বিক্ষোভ
প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের জন্য কোটাব্যবস্থা পুনর্বহালের রায় দিয়েছেন হ্ইাকোর্ট। এ রায়ের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা।
গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে এ মিছিল শুরু হয় এবং পরবর্তীতে শিক্ষার্থীরা সমাবেশ করেন। সমাবেশ শেষে শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে ভিক্টোরিয়া পার্ক এবং বাংলাবাজার ঘুরে পুনরায় প্রধান ফটকের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। কোটা পদ্ধতি বাতিল না করা হলে যেকোনো সময় বৃহৎ আন্দোলনের ডাক দেবেন বলে উল্লেখ করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
এ সময় ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘চাকরিতে কোটা, মানি না মানব না’, ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলায়/স্বাধীনতার বাংলায়, কোটার ঠাঁই নাই’, ‘হাইকোর্টের রায়, মানি না মানব না’, ‘কোটা পদ্ধতি, কোটা পদ্ধতি, মানি না মানব না’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ কোটা কোনো স্বাভাবিক ব্যাপার হতে পারে না। দেশের বিপুলসংখ্যক বেকার সমস্যার মধ্যে শিক্ষার্থীদের ওপর কোটার মতো বৈষম্যমূলক বিভীষণ চাপিয়ে দেওয়া হলে বেকার সমস্যা আরো বৃদ্ধি পাবে। আমরা মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান জানাই। তারা দেশের সূর্যসন্তান। তাই বলে তাদের সন্তান এমনকি নাতি-নাতনিরা পরিশ্রম না করেই কোটায় চাকরিতে যোগ দেবে, এটা মানি না। আমরা এই রায়ে অসন্তুষ্ট।’
আন্দেলনকারী বক্তারা আরো বলেন, আমরা এখানে সরকারবিরোধী কোনো আন্দোলন করতে আসিনি, আমরা শুধু আমাদের অধিকার আদায়ে বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছি। হাইকোর্টের প্রতি সম্মান রেখে আমরা বলতে চাই, হাইকোর্ট যেন কোটার পুনর্বহাল বাতিল করে।
গত বুধবার এক রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ কোটা বহালের পক্ষে রায় দেন।
কোটা বাতিলের পরিপত্র অবৈধ ঘোষণার ফলে এখন মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ৯ম থেকে ১৩তম গ্রেডে নিয়োগ দেওয়ায় আর কোনো বাধা থাকল না। পরিপত্রের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০২১ সালে রিট করেন চাকরিপ্রত্যাশী ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তান অহিদুল ইসলামসহ সাতজন। এর আগে ২০১৮ সালে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের দীর্ঘ আন্দোলনের পর সরকারি চাকরিতে ৯ম থেকে ১৩তম গ্রেডে নিয়োগের ক্ষেত্রে ৪৫ শতাংশ কোটা তুলে দিয়ে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। ২০১৮ সালের ৩ অক্টোবর মন্ত্রিসভায় এ প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।
"