নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২১ নভেম্বর, ২০২৩

মানবসেবী ডা. নাজরা এমপি হতে চান

আমেরিকায় চিকিৎসাসেবাসহ ৬টি অলাভজনক প্রতিষ্ঠানে যুক্ত আছেন। জীবনের প্রয়োজনে আমেরিকায় ছিলেন। কিন্তু তার বুকজুড়ে আছে স্বদেশ ও স্বদেশের মানুষ। করোনাকালে তিনি সিলেট অঞ্চলে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে মানবতার ফেরিওয়ালা হিসেবে কাজ করেছেন। তারই উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত করোনা হাসপাতালে ও বিভিন্ন চিকিৎসাকেন্দ্রে অবিরাম চিকিৎসাসেবা দিয়েছেন। তিনি ডা. নাজরা চৌধুরী।

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হবিগঞ্জ-১ (নবীগঞ্জ-বাহুবল) আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেতে চান তিনি। গত রবিবার ঢাকায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে কিনেছেন মনোনয়ন ফরম। কেন নির্বাচনের দাঁড়াতে চান- এ প্রশ্নের উত্তরে এ চিকিৎসক বলেন, আমার বাবা ও মা আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তাদের কাজ থেকে রাজনীতি ও মানবসেবার দীক্ষা নিয়েছি। বাকি জীবন আমি উৎসর্গ করতে চাইছি মানুষের জন্য। ছোটবেলা থেকেই সেই চেষ্টাই করছি। গতবারও আমি একই আসনে মনোনয়ন চেয়েছিলাম। এবারও চাইছি।

জানা গেছে, ডা. নাজরা চৌধুরী সিলেট অঞ্চলের বিশিষ্ট রাজনীতিক, সাবেক সংসদ সদস্য, বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠজন, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক (সেক্টর-৪) অ্যাডভোকেট ইসমত আহমেদ চৌধুরীর মেয়ে। ইসমত চৌধুরী হবিগঞ্জ-১ (নবীগঞ্জ-বাহুবল) আসন থেকে আওয়ামী লীগ প্রার্থী হিসেবে ১৯৮৬ সালের জাতীয় নির্বাচনে জয়ী হন। ডা. নাজরার মা আবেদা চৌধুরী ১৯৭৩ সালের নির্বাচনে সিলেট জেলা সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন। আবেদা চৌধুরীও আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে নিবেদিতপ্রাণ কর্মী। নাজরার স্বামী ডা. সোয়েব আহমেদ চৌধুরী কিডনি ফাউন্ডেশন সিলেটের ট্রাস্টি। ডা. নাজরা সিলেটের সরকারি অগ্রগামী বালিকা উচ্চবিদ্যালয় থেকে ১৯৮০ সালে এসএসসি, ঢাকার হলিক্রস কলেজ থেকে ১৯৮২ সালে এইচএসসি পাস করেন। ১৯৮৯ সালে এমবিবিএস পাস করেন সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ থেকে। তিনি চিকিৎসাসেবার পাশাপাশি একজন সংস্কৃতি কর্মীও। প্রগতিশীল বিভিন্ন আন্দোলনে সিলেটে সামনের কাতারে তিনি ছিলেন। ডা. নাজরা চৌধুরী বলেন, আমি করোনাকালে আক্রান্তদের পাশে ছিলাম। বিনিদ্র রাতও কাটিয়েছি। আর এসব কাজের জন্য আমি কখনো ক্লান্তি অনুভব করিনি, আমি মানুষের জন্য কিছু করতে পেরে খুশি হই।

নাজরা চৌধুরী সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটির সদস্য। তিনি হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা। এছাড়া কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যাবিষয়ক উপকমিটির সদস্য। তিনি এর আগে হবিগঞ্জ-১ (নবীগঞ্জ-বাহুবল) আসনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। গত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হবিগঞ্জ-১, সিলেট-১, সিলেট-৬, সিলেট-৫, সিলেট-৪, সুনামগঞ্জ-৩ এবং মৌলভীবাজার-১, ২ ও ৩ আসনে নির্বাচনী কার্যক্রমে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন।

১৯৭৯ সালে ছাত্রলীগ কর্মী হিসেবে ও ১৯৮৬ সালে আওয়ামী লীগের কর্মী হিসেবে নবীগঞ্জ বাহুবলে তিনি আওয়ামী লীগ প্রার্থী তার বাবা ইসমত আহমেদ চৌধুরীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচারে অংশ নেন। নাজরা বর্তমানে সিলেটে কিডনি ফাউন্ডেশন ট্রাস্টি, অপরাজিতা ফাউন্ডেশন সিলেট বিভাগের সাধারণ সম্পাদক এবং একই সংগঠনের সিলেট জেলা শাখার সভাপতি। এভাবে বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত থেকে মানুষের জন্য কাজ করছেন তিনি।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বয়সের কারণে ড. নাজরার মা-বাবা রাজনীতির মাঠে না থাকলেও এ শূন্যতা পূরণ করতে সচেষ্ট আছেন তাদের কণ্যা নাজরা। তিনি আর্তপীড়িত মানুষের পাশে অতীতের মতোই আছেন। ডা. নাজরা ১৯৬৫ সালে সিলেট মহানগরীর কাজিটুলায় জন্ম গ্রহণ করেন। এমবিবিএস পাস করার পর ১৯৯৩ সালে তিনি পাড়ি জমান আমেরিকায়। স্বামী ডা. সোয়েব আহমদে চৌধুরীও একই সঙ্গে উচ্চতর শিক্ষার জন্য একই দেশে যান। ২০০১ সালে স্বামীর সঙ্গে মিলে যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগানের কেডিলাক সিটিতে প্রতিষ্ঠা করেন চৌধুরী এমডি নামে চিকিৎসাকেন্দ্র। পরে একই স্থানে প্রতিষ্ঠা করেন হাসপাতাল।

একই দেশের মেনিস্টি, বল্ড উইন, বিগরেপিডস শহরে ডায়ালাইসিস ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা করেন তারা। নাজরা বড় হয়েছেন সাংস্কৃতিক আবহে। এ সংস্কৃতিকর্মী ১৯৯৭ সালে আমেরিকায় প্রতিষ্ঠা করেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট। আমেরিকায় বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে তার মন ভরেনি। তিনি ছুটে আসতেন নিজের দেশে। শেষমেশ ২০১৬ সাল থেকে স্থায়ীভাবে নিজের জন্মভূমিতে বসবাস শুরু করেন তিনি। বিভিন্ন উদ্যোগের পাশাপাশি সিলেটে একটি বৃদ্ধ নিবাস গড়ে তোলার চেষ্টা করছেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close