নিজস্ব প্রতিবেদক
ক্ষতিপূরণ আদায়ে জোরালো অবস্থা নেবে বাংলাদেশ
- পরিবেশমন্ত্রী

ক্ষতিপূরণ আদায়ে জলবায়ু সম্মেলনে (কপ-২৮) বাংলাদেশ জোরালো অবস্থা নেবে উল্লেখ করে পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষয়ক্ষতির জন্য দায়ী দেশগুলো ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলে তা রক্ষা করেনি। ক্ষতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে বাংলাদেশের মতো দেশগুলো কাঙ্ক্ষিত ক্ষতিপূরণ পায়নি। তাই ক্ষতিপূরণ আদায়ে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদল কার্যকর ও বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখবে। সোমবার (২০ নভেম্বর) পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ২৮তম বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলন উপলক্ষে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
বিসিজেএফ সভাপতি কাওসার রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় আরো বক্তৃতা দেন পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহার, সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ, অতিরিক্ত সচিব (পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন) সঞ্জয় কুমার ভৌমিক, বিসিজেএফ সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাসউদুল হক এবং সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক নিখিল চন্দ্র ভদ্র।
সভায় গত ১৭ থেকে ১৮ নভেম্বর স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত দুদিনব্যাপী জলবায়ু ন্যায্যতা সম্মেলনে গৃহীত ৩৩ দফা প্রস্তাবনা তুলে ধরেন সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক নিখিল চন্দ্র ভদ্র। তিনি বলেন, ওই প্রস্তাবনায় জলবায়ু ক্ষতিপূরণ আদায়ে বাংলাদেশের জোরাল অবস্থান গ্রহণ, পরিবেশ ও কৃষি জমির ক্ষতি করে উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ বন্ধ, উন্নয়ন পরিকল্পনায় জলবায়ু ঝুঁকিতে থাকা জনগণের স্বার্থকে প্রাধান্য ও তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত এবং পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বন্ধ করে নবায়ণযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার দ্রুত বৃদ্ধির দাবি জানানো হয়েছে। এ সব বিষয়ে সরকার ও বিশ্ব নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে।
ওই সব সুপারিশ ও প্রস্তাবনা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনার আশ্বাস দেন পরিবেশ মন্ত্রী। তিনি বলেন, ক্ষতিপূরণের আশায় বসে না থেকে সরকার জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবিলায় কাজ শুরু করেছে। পাশাপাশি জলবায়ু সম্মেলনে বাংলাদেশের অবস্থান যথাযথভাবে তুলে ধরার লক্ষ্যে জলবায়ু বিশেষজ্ঞ এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও সংস্থার মতামত নিয়ে একটি অবস্থানপত্র প্রণয়ন করেছে। বিগত কপসমূহের মতো এবারো সম্মেলনস্থলে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ১৫২ বর্গমিটার আয়তনের একটি প্যাভিলিয়ন স্থাপন এবং এখানে বিভিন্ন সাইড ইভেন্ট আয়োজনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এ সব আয়োজন সফল করতে সাংবাদিকদের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
জলবায়ু সম্মেলনকে ঘিরে প্রস্তুতি তুলে ধরে পরিবেশমন্ত্রী বলেন, সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই শহরে অনুষ্ঠিতব্য জলবায়ু সম্মেলনে ‘লস অ্যান্ড ড্যামেজ ফান্ড অপারেশনালাইজ’ করা এবং এর ‘ডিটেইল অ্যারেঞ্জমেন্ট’ ঠিক করা; অভিযোজন সংক্রান্ত বৈশ্বিক লক্ষ্য ‘গ্লোবাল গোল অন এডাপটেশন’- এর কাঠামো প্রণয়ন; উন্নয়নশীল দেশগুলো জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় উন্নত দেশগুলো কর্তৃক ২০২৫ সাল পর্যন্ত প্রতি বছর ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রদান নিশ্চিত করা; জলবায়ু অর্থায়নের সংজ্ঞা চূড়ান্ত করা এবং অভিযোজন অর্থায়ন দ্বিগুণ করা প্রভৃতি বিষয়ে আলোচনা হবে। আলোচনায় বাংলাদেশসহ স্বল্পোন্নত দেশ ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে অত্যন্ত বিপন্ন ও ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর পক্ষে কার্যকর ভূমিকা পালন করবেন বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের সদস্যরা।
"