শালিখা (মাগুরা) প্রতিনিধি
‘আবার স্কুলে যাব কোনো দিন ভাবিনি’
‘নতুন করে আবার স্কুলে যাওয়ার সুযোগ পাব এটা আমি কখনোই ভাবিনি, ভেবেছিলাম আমি মনে হয় আর পড়ালেখার সুযোগ পাব না। পরের বাড়িতেই কাজ করে খেতে হবে বলেই মেনে নিয়েছি।’ এমনই আবেগঘন অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন শালিখা উপজেলার উজগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আছিয়া খাতুনসহ বিভিন্ন স্কুলের ১২ জন ঝরে পড়া শিশু শিক্ষার্থী। কৃষ্ণপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিল্লাল শিকদার নামে অন্য এক ঝরে পড়া শিক্ষার্থী বলেন, নতুন করে স্কুলে যাওয়ার সুযোগ পেয়ে আমি খুবই আনন্দিত এখন থেকে আমাকে আর মাঠে যেতে হবে না। গতকাল বিদ্যালয়গুলোয় গিয়ে তাদের সাক্ষাৎকালে এমন অভিব্যক্তি প্রকাশ করে তারা। এর আগে বুধবার বিকেলে শালিখা উপজেলার দক্ষিণ সাবলাট, কুষখালী, চতুরবাড়িয়া, উজগ্রাম, কৃষ্ণপুর, ছান্দড়া পূর্বপাড়া, পাথরঘাটাসহ উপজেলার ১২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ঝরে পড়া ১২ শিক্ষার্থীকে বই, খাতা, স্কুল ব্যাগ, জুতা, স্কুল ড্রেস, আর্থিক প্রাণোদনাসহ বিভিন্ন শিক্ষা উপকরণ প্রদান করেন মাগুরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবু নাসের বেগ। নতুন করে ভর্তি করে লেখাপড়ার সুযোগ পেয়েছে ওই ১২ শিক্ষার্থী। শালিখা উপজেলা প্রশাসন সভাকক্ষে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে শিক্ষার্থীদের ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করেন তিনি। এ সময় তিনি বলেন, ঝরে পড়া শিশুরা সমাজের বোঝা নয় তারাই হতে পারে ভবিষ্যতের নেতৃত্ব স্থানীয় ব্যক্তি। ইতিহাস তেমনটি বলে। তাই আপনাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠান। দেশ ও দশের কল্যাণে নিবেদিত হওয়ার সুযোগ করে দিন। মনে রাখবেন শিক্ষা মানুষকে অন্ধকার থেকে আলোর পথে নিয়ে আসে।
তিনি আরো বলেন, একটি শিশু ঝরে পড়ার ক্ষেত্রে শিশুরা দায়ী নয়, দায়ী আমরা, দায়ী শিক্ষক, দায়ী সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। তাই আমরা সবাই দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে সচেতন হতে হবে। উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত এ ভর্তি অনুষ্ঠানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হরেকৃষ্ণ অধিকারীর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন শালিখা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট কামাল হোসেন, মাগুরা জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আশরাফুল আলম, শালিখা থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোশাররফ হোসেন।
"