গাজী শাহাদত হোসেন ফিরোজী, সিরাজগঞ্জ

  ১৭ নভেম্বর, ২০২৩

সরগরম নির্বাচনের মাঠ

উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার যমুনাবিধৌত সিরাজগঞ্জ জেলা। এ জেলায় ৬টির মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনী আসন সিরাজগঞ্জ-২ (সদর ও কামারখন্দ)। এরই মধ্যে তফসিল ঘোষণা হয়েছে। মনোনয়নপ্রত্যাশীরা এরই মধ্যে শুরু করেছেন দৌড়ঝাঁপ। ভোটের মাঠ এখন সরগরম। মনোনয়নপ্রত্যাশীরা লবিং করছেন দলের হাইকমান্ডের কাছে, ছুটছেন ভোটারের বাড়ি বাড়ি। এলাকার উন্নয়নে নানামুখী প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন তারা। সভা-সমাবেশ, গণসংযোগ শুরু করেছেন। পোস্টার, ব্যানার-ফেস্টুন লাগিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়ে ফেসবুক-টুইটার ও মতবিনিময়ের মাধ্যমে নিজেদের প্রার্থিতা জানান দিচ্ছেন। সরগরম এখন নির্বাচনের মাঠ।

একাদশ সংসদে জেলার ৬টি আসনই আওয়ামী লীগের দখলে। দলটির সম্ভব্য প্রার্থীরা সরকারের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরছেন। কদর বেড়েছে তৃণমূল নেতাকর্মীদের। সিরাজগঞ্জ-২ আসনে বইছে ভোটের ঝড়ো হাওয়া। সিরাজগঞ্জ-২ (সদর ও কামারখন্দ) আসনে ৯ প্রার্থীর গণসংযোগ চোখে পড়ছে। এদের মধ্যে রয়েছেন বর্তমান এমপি ডা. হাবিবে মিল্ল­াত মুন্না, জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট কে এম হোসেন আলী হাসান, সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ড. জান্নাত আরা তালুকদার হেনরী এবং শেহেরিন সেলিম রিপন, অধ্যাপক রেজাউল করিম রাজা। বিএনপির প্রার্থী হিসেবে জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক এমপি রুমানা মাহমুদ এবং সাধারণ সম্পাদক সাইদুল রহমান বাচ্চুর নাম শোনা যাচ্ছে। এছাড়া সিপিবি নেতা ও কামারখন্দ উপজেলা চেয়ারম্যান শহিদুল্লাহ সবুজ, জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি আমিনুল ইসলাম ঝন্টু, বাসদের আবদুল্লাহ আল মামুন রয়েছেন আলোচনায়। জাতীয় পার্টি, ইসলামী আন্দোলন ও জামায়াতে ইসলামীর কর্মীরাও সক্রিয় রয়েছেন।

নির্বাচনে মনোনয়নের ব্যাপারে জানতে চাইলে বর্তমান এমপি ডা. হাবিবে মিল্লাত মুন্না বলেন, আমার নির্বাচনী এলাকার উন্নয়নে আমি যে ভূমিকা রেখেছি, তার প্রতিদান ভোটাররা দিয়েছেন। তাদের ভালোবাসা আমার পাথেয়। এটা দলের সাধারণ নেতাকর্মীরা জানেন। আমি আশাবাদী, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে ফের মনোনয়ন দেবেন। ফের আসনটি তাকে উপহার দিতে পারব, ইনশআল্লাহ। সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ড. জান্নাত আরা তালুকদার হেনরী বলেন, আমাকে মনোনয়ন দিলে জয়ের ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী। বিএনপির সম্ভব্য প্রার্থী জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক এমপি রুমানা মাহমুদ বলেন, দল এখন আন্দোলনে। দাবি মানলে নির্বাচন করবে বিএনপি। সেক্ষেত্রে আমিই মনোনয়ন পাব বলে আশা করছি এবং জনগণ আমাকেই বিজয়ী করবে।

বিএনপি নির্দলীয়-নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচনে অংশ নেবে না। স্লোগান নিয়ে কর্মসূচি ঘোষণা করলেও আন্দোলনের মাঠে নেই নেতাকর্মীরা। আন্দোলনে নেতাকর্মীদের অনুপস্থিতির প্রভাব পড়েছে নির্বাচনী এলাকায়। কিছুটা কোণঠাসা অবস্থায় আছে বিএনপির নেতাকর্মীরা। তারা ব্যস্ত জাতীয় কর্মসূচি বাস্তবায়নে। জেলা সদর থেকেই নিয়ন্ত্রিত হয় সিরাজগঞ্জের রাজনীতি। সিরাজগঞ্জ সদর ৬টি ইউনিয়ন ও কামারখন্দ উপজেলার ৪টি ইউনিয়ন মিলে সিরাজগঞ্জ-২ আসন গঠিত। এ আসনের ভোটার সংখ্যা কামারখন্দ উপজেলায় ১ লাখ ১৯ হাজার ১৩৪ এবং সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৮৫ হাজার ৩৭১। সিরাজগঞ্জ জেলায় ভোটার সংখ্যা ২৫ লাখ ১২ হাজার ১১০; ৮৯০টি ভোটকেন্দ্র এবং ৫ হাজার ৫৮৯টি কক্ষ (বুথ) থাকবে বলে জানান জেলা নির্বাচন অফিসার মোহাম্মাদ শহিদুল ইসলাম।

নির্বাচনী ২ এলাকায় ব্যানার-ফেস্টুন দিয়ে ভরে উঠেছে। সমর্থকদের মিছিল মিটিং আর মাইকের প্রচারে নির্বাচনী হাওয়া এখন তুঙ্গে। নির্বাচনে কোন দল থেকে কে মনোনয়ন পাবে, কে জিতবে ভোটে এ নিয়ে শুরু হয়েছে নানা জল্পনা-কল্পনা। ঘরে-বাইরে, হাটে-ঘাটে আর চায়ের স্টলগুলোয় চলছে জমজমাট আলোচনা। জামতৈল গ্রামের ভোটার জোসনা বেগম জানান, ‘মরার নির্বাচন কবে যাইব। বাড়িওয়ালা কয়, আগে মিছিল কইরা আসি, পরে বাজার করমু। কামারখন্দ উপজেলার রেস্টুরেন্টের মালিক রাজ্জাক ও চা স্টলের মালিক আবদুল খালেক জানায়, আল্লার মর্জি এই গাটা (রাস্তা) দিয়ে একবার মিছিল গেলে বেচাকেনা ভালোই হয়। হারা দিন আর বেচা নাগে না।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close