সঞ্জয় সুত্রধর, শিবালয় (মানিকগঞ্জ)
মনোনয়নপ্রত্যাশী আ.লীগে ৭ জন, বিএনপিতে ৩

মানিকগঞ্জ-১ (শিবালয়, ঘিওর ও দৌলতপুর) আসনে আগামী সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির জয়-পরাজয় নির্ভর করবে প্রার্থী মনোনয়নের ওপর। রাজনৈতিক অভিজ্ঞরা বলছেন, যে দল যত জনপ্রিয়, সৎ যোগ্য নেতাকে মনোনয়ন দেবে, সেই দলের প্রার্থীর জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
আসনটি থেকে বিগত তিন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। তাই আসনটি ধরে রাখার জন্য আওয়ামী লীগের মর্যাদার লড়াই হয়ে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে আসনটি পুনরুদ্ধার করতে বিএনপি সরাসরি সভা-সমাবেশ করতে না পারলেও বিভিন্ন কৌশলে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে।
এ আসনে আগামী সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী হিসেবে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে, তারা হলেন- বর্তমান সংসদ সদস্য এ এম নাঈমুর রহমান দুর্জয়, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সস্পাদক ও পিপি আবদুস সালাম, সাবেক কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাংগঠনিক সস্পাদক এস এম জাহিদ, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও দৌলতপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নুরুল ইসলাম রাজা, সাবেক সংসদ সদস্য এ বি এম আনোয়ারুল হক, শিবালয় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা পরিষদের কমান্ডার রেজাউর রহমান খান জানু, কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা রেজাউল করিম উজ্জল।
অন্যদিকে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে নাম শোনা, বিএনপির সাবেক মহাসচিব মরহুম খন্দকার দেলোয়ার হোসেনের ছেলে জেলা বিএনপির সহসভাপতি ড. খন্দকার আকবর হোসেন বাবলু, জেলা কৃষক দলের সভাপতি তোজাম্মেল হক তোজা, জেলা বিএনপির সাধারণ সস্পাদক এস এ জিন্নাহ কবির।
এ আসনে জাতীয় পার্টি ও জাসদের তেমন প্রভাব নেই। কিন্তু জাসদ থেকে জেলা জাসদের সভাপতি ও সাবেক ঘিওর উপজেলা চেয়ারম্যান আফজাল হোসেন খান জকি মনোনয়ন চাইবেন।
মানিকগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য নাঈমুর রহমান দুর্জয় বলেন, এ আসনে রাস্তাঘাট থেকে শুরু করে সার্বিকভাবে ব্যাপক উন্নয়ন করেছি। আগামী সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন পেলে অসমাপ্ত কাজ সম্পাদনা করতে পারব। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নধারাকে অব্যহত রাখতে ফের মনোনয়ন চাইব।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পিপি আবদুস সালাম বলেন, এ আসন থেকে মনোনয়ন চাইব। আমি মনোনয়ন পেলে বিপুল ভোটেই জয়লাভ করতে পারব।
সাবেক কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাংগঠনিক সস্পাদক ও জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা সালাউদ্দিন মাহমুদ জাহিদ বলেন, এবার সংসদ নির্বাচন হবে প্রতিযোগিতামূলক। মানুষের সেবা করতেই মনোনয়ন চাইব।
কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাবেক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও দৌলতপুর উপজেলা চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম রাজা বলেন, দলের সভানেত্রী অবশ্যই যোগ্য, সৎ, জনপ্রিয় ও যাকে মনোনয়ন দিলে এ আসনে আওয়ামী লীগ জয় লাভ করতে পারবে, তাকেই আগামী সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন দেবেন। মানিকগঞ্জের নেতাকর্মী ও মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতার কারণে আমাকে মনোনয়ন দেবেন বলে আশা করছি।
শিবালয় উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার রেজাউর রহমান খান জানু বলেন, আমি মুজিবের আদর্শের সাহসী সৈনিক এবং ১৯৭১ সালে রণাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধা। এলাকার নেতাকর্মী ও মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতার কারণেই দল আমাকে মনোনয়ন দেবে বলে আশা করি।
মানিকগঞ্জ-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এ বি এম আনোয়ারুল হক বলেন, আমি সংসদ সদস্য থাকাকালে এলাকার ৫ শতাধিক বেকার ছেলেমেয়ের চাকরির ব্যবস্থা করে দিয়েছি। যমুনা নদীভাঙন রোধ, বিদ্যুৎ সংযোগ, ব্রিজ নির্মাণ ও রাস্তাঘাট পাকাসহ এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন করেছি। আসন ধরে রাখতে আশা করি নেত্রী মনোনয়নে আমাকে বিবেচনা করবেন।
বিএনপির সাবেক মহাসচিব প্রয়াত খন্দকার দেলোয়ার হোসেনের ছেলে ড. আকবর হোসেন বাবলু বলেন, দেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে শিক্ষিত, মার্জিত ও তরুণ জনপ্রতিনিধিতে জনগণের আগ্রহ বেশি। শিবালয়, ঘিওর ও দৌলতপুরে দীর্ঘ ৩২ বছর ধরে জনগণের পাশে থেকে কাজ করে যাচ্ছি। এখন দল সার্বিকভাবে যোগ্য বিবেচনা করে আমাকে মনোনয়ন দেবে বলে আশা করছি।
মানিকগঞ্জ-১ আসনে আগামী সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপ্রত্যাশী জেলা কৃষক দলের সভাপতি ও দৌলতপুর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান তোজাম্মেল হক জানান, তাকে মনোনয়ন দেওয়া হলে হারিয়ে যাওয়া আসনটি পুনরুদ্ধার করতে পারবেন।
জেলা বিএনপির সভাপতি এস এ জিন্নাহ কবির জানান, বিএনপি গণতান্ত্রিক দল। দল থেকে অনেকেই মনোনয়ন চাইতে পারেন। কিন্তু দুঃসময়ে যারা নেতাকর্মীদের পাশে থেকে ও তৃণমূল নেতাকর্মীদের কাছে যার গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে, দল তাকেই মনোনয়ন দেবে। আসনটি আওয়ামী লীগের কাছ থেকে পুনরুদ্ধারের জন্য যোগ্য, সৎ ও গ্রহণযোগ্য নেতাকে মনোনয়ন দিতে হবে। মনোনয়ন পেলে আসনটি পুনরুদ্ধারে আশাবাদী জিন্নাহ কবির।
"