চট্টগ্রাম ব্যুরো
এবার ট্রান্স-এশিয়ান রেলে যুক্ত হওয়ার অপেক্ষা

দেশে চলছে উন্নয়নের মহাযজ্ঞ। প্রতিটি খাতেই হচ্ছে উন্নয়ন। এগিয়ে চলছে রেলও। এবার লক্ষ্য মিয়ানমারসহ ট্রান্স-এশিয়ান রেলওয়ের সঙ্গে যুক্ত হওয়া। এ লক্ষ্যে বর্তমানে দোহাজারী-কক্সবাজার অংশের কাজ চলছে। এরই মধ্যে চট্টগ্রামের পটিয়া রেলস্টেশনে ট্রায়াল ট্রেন এসে পৌঁছেছে। তবে কক্সবাজার থেকে মিয়ানমার পর্যন্ত ২৮ কিলোমিটার অংশের কাজ শুরুর অপেক্ষায় রয়েছে কর্তৃপক্ষ। প্রাথমিক লক্ষ্য হলো- ঢাকা, চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজারের মধ্যে উচ্চগতির পর্যটন ট্রেন চালু করা। এর আগে চট্টগ্রামের দোহাজারী-কক্সবাজার রুটে নবনির্মিত রেলপথে পরীক্ষামূলক ট্রেন চালু হবে ১৫ অক্টোবর।
দোহাজারী-কক্সবাজার রেলওয়ের প্রকল্প পরিচালক মফিজুর রহমান জানান, এই ট্রেনের ছয়টি বগির প্রতি বগিতে আসন ৬০ জন। দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০১ কিলোমিটার রেলপথের ৮৮ শতাংশ কাজ শেষ। বাকি কাজ এ মাসে শেষ হওয়ার কথা। সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সময় পাওয়ার ওপর উদ্বোধনের দিনক্ষণ নির্ভর করছে। জনবল, ইঞ্জিন ও বগি সংকটে শুরুতে মাত্র এক জোড়া ট্রেন চালানোর প্রস্তাব করেছে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপকের কার্যালয়। অর্থাৎ একটি ট্রেন ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম হয়ে কক্সবাজার যাবে। প্রস্তাবিত দুটি সময়সূচি অনুযায়ী, ট্রেনটি রাতে ঢাকা থেকে যাত্রা করে পরের দিন সকালে কক্সবাজারে পৌঁছাবে। সেই ট্রেন পরের দিন ঢাকায় ফিরবে।
রেলের একজন কর্মকর্তা জানান, ডিসেম্বরের আগে যাত্রীবাহী ট্রেন চালু কঠিন। বর্তমানে ঢাকা-চট্টগ্রাম ছয়টি আন্তনগর ট্রেন চলে। সেগুলো কক্সবাজার পর্যন্ত বর্ধিত করা সম্ভব। এর জন্য জনবল, ইঞ্জিন-বগি প্রয়োজন। এসব এ মুহূর্তে নেই। তাই সাড়ে ১৫ হাজার কোটি টাকার রেলপথের সুফল পেতে আরো কয়েক বছর অপেক্ষা করতে হবে। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানায়, নতুন নির্মিত দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথে ঘণ্টায় ১৪০ কিলোমিটার ট্রেন চালানো সম্ভব। চীন থেকে কেনা নতুন বগিতে তৈরি ট্রেন চালানো হবে এ রুটে। এসব ট্রেনের ২০ এক্সেল লোডের ট্রেন কালুরঘাট সেতুতে চলার উপযোগী নয়। ৪৩ কোটি টাকা ব্যয়ে সেতুটি সংস্কারে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচারের সঙ্গে চুক্তি করেছে রেলওয়ে।
প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, শেষ হওয়া কাজের মধ্যে রয়েছে ৩৯টি সেতু, ২৪২টি কালভার্ট ও ১৪৪টি লেভেলক্রসিং। ৯টির মধ্যে ছয়টি রেলস্টেশনের নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে, আর তিনটি স্টেশন আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হবে। কর্মকর্তাদের মতে, বাকি স্টেশনগুলোর কাজ এখন পুরোদমে চলছে। ১০০ কিলোমিটার রুটে সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, চকরিয়া, ডুলাহাজরা, ঈদগাঁও, রামু, কক্সবাজার সদর, উখিয়া ও গুমধুমে ৯টি স্টেশন থাকবে। চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত রেলপথ সম্প্রসারণ করা হয়েছে মিয়ানমারের কাছে ঘুমধুম সীমান্ত পর্যন্ত। সরকার কক্সবাজার থেকে মিয়ানমার পর্যন্ত ১২৮ কিলোমিটার রেলপথ প্রকল্পও শুরু করেছে।
"