আল-আমিন মিয়া, পলাশ (নরসিংদী)
মরুর ফল সবুজ বাংলায়
দেখতে অনেকটা বেল কিংবা তরমুজের মতো। এই ফল সাম্মাম বা রকমেলন হিসেবে পরিচিত। মধ্যপ্রাচ্যের মরুভূমির আরব দেশগুলোয় ফলটির চাষ হয়। বিশেষ করে মরুভূমির দেশগুলোয় এই ফলের ব্যাপক পরিচিতি রয়েছে। সবুজ-শ্যামলের বাংলাদেশে এই প্রথম নরসিংদীতে বাণিজ্যিকভাবে সাম্মাম ফল চাষ করে সফলতা পেয়েছেন এক ব্যক্তি। তার নাম আশরাফুল ইসলাম আসিফ। তিনি বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর সদস্য।
নরসিংদী-২ পলাশ নির্বাচনী এলাকার পাঁচদোনার নেহাব গ্রামে নিজ বাড়ির পাশে ২০ শতাংশ জমিতে মালচিং প্রদ্ধতিত্বে প্রথমবারের মতো সাম্মাম ফল চাষ শুরু করেন আশরাফুল ইসলাম আসিফ। এতে অল্প দিনের ব্যবধানেই ব্যাপক সফলতার মুখ দেখেন তিনি। পাশাপাশি তার এই সাফল্যের চিত্র দেখতে জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে হাজারও মানুষ গিয়ে ভিড় করছে ওই বাগানে। সাম্মাম ফল চাষ করে বেকারত্ব দূর করা সম্ভব বলেও মনে করেন এই উদ্যোক্তা। এতে নতুন করে আশা বুনছেন বেকার অনেক যুবক।
আশরাফুল ইসলাম আসিফ জানান, চার মাস আগে ইউটিউব দেখে শখের বসে সাম্মামের বিজ সংগ্রহ করে তা রোপণ করেন তিনি। পরে সেই বিজ থেকে এক হাজার চারা তৈরি হয়। আর এসব চারা দ্রুত বড় হয়ে গাছে ফল ধরতে শুরু করে। বর্তমানে তার বাগানে প্রতিটি গাছেই ফলন ধরেছে। এক একটি ফলের ওজন ৫০০ গ্রাম থেকে তিন কেজি পর্যন্ত। এসব ফল স্থানীয় বাজারে বিক্রির পাশাপাশি অনলাইনেও বিক্রি করছেন তিনি। পাইকার ও খুচরা ক্রেতারা বাগান থেকে এই ফল কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।
উদ্যোক্তা আশরাফুল ইসলাম আসিফ আরো জানান, বিদেশি এ জাতের ফল চারা রোপণের এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে গাছগুলোতে ফল ধরা শুরু করে। বৈশাখণ্ডজ্যৈষ্ঠ মাসে এই ফলের চাষাবাদের উত্তম সময় হলেও কমবেশি সারা বছরই এর চাষাবাদ করা যায়। দেখতে অনেকটা বাঙ্গি বা তরমুজের মতো হলেও ফলের ভেতরটা গাঢ় হলুদ বর্ণের। স্বাদে ও গন্ধে অতুলনীয়। খেতে সুস্বাদু হওয়ায় স্থানীয় বাজারগুলোতেও রয়েছে এর ব্যাপক চাহিদা। প্রতি কেজি সাম্মাম ফল ২০০ থেকে ২৫০ টাকা কেজি ধরে বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে বিদেশি এই ফল চাষে সফলতা দেখে অনেকেই এখন সাম্মাম ফল চাষের দিকে ঝুঁকছেন। প্রতিদিনই দূরদূরান্ত থেকে অনেকেই উদ্যোক্তা আসিফের বাগানে এসে এর চাষাবাদে পরামর্শ নিচ্ছেন। তিনিও সবাইকে পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করছেন।
নরসিংদী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আজিজুর রহমান জানান, উচ্চমূল্যের এই ফল চাষাবাদে কৃষকদের আগ্রহ বাড়াতে বিভিন্ন পরামর্শ ও সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে। ভিটামিন ও মিনারেল সমৃদ্ধ এই ফল চাষাবাদের বিস্তার ঘটাতে পারলে কৃষকরা লাভবানের পাশাপাশি দেশে পুষ্টির চাহিদাও অনেকাংশ পূরণ হবে বলে জানান তিনি।
"