মো. শাহ আলম, খুলনা

  ০৫ জুন, ২০২৩

কেসিসি নির্বাচন

উত্তাপ ছড়াচ্ছে কাউন্সিলর প্রার্থীদের কোন্দল

খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কাউন্সিলর প্রার্থীদের অভ্যন্তরীণ ও দলীয় কোন্দল বেশ উত্তাপ ছড়াচ্ছে। ঘটছে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর প্রচারে বাধা, হুমকি, পোস্টারের ওপরে পোস্টার লাগানো, পোস্টার ছেঁড়া, টাকা ছড়ানোসহ পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগের ঘটনা। মূলত বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নেওয়ায় কাউন্সিলর পদে প্রার্থিতা উন্মুক্ত রেখেছে আওয়ামী লীগ।

বৃহস্পতিবার (১ জুন) রাতে নগরীর ২২ নম্বর ওয়ার্ডে ক্ষমতাসীন দলসমর্থিত দুই প্রার্থী তাজুল ইসলাম এবং কাজী আবুল কালাম আজাদ বিকু পরস্পরের বিরুদ্ধে নির্বাচনী কার্যালয় ভাঙচুর ও কর্মীদের মারধরের অভিযোগ করেন। এ ঘটনায় রিটার্নিং কর্মকর্তা শুক্রবার (২ জুন) দুজনকেই কারণ দর্শানো নোটিস দিয়েছে। অপরদিকে, কর্মীদের মারধরের অভিযোগ এনে সদর থানায় মামলা করেছেন তাজুল সমর্থকরা। এমন অবস্থায় প্রার্থীদের অনেকে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

সংশ্লিষ্টরা জানান, নগরীর ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা আমিনুল ইসলাম মুন্নার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী দলটির আরেক নেতা মাহাবুবুর রহমান শামীম। শামীমের অভিযোগ, মুন্নার লোকজন তার প্রচারে বাধা ও কর্মীদের বাড়িতে গিয়ে হুমকি দিচ্ছেন। বিভিন্ন স্থানে পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা ছাড়াও নিজের পোস্টার দিয়ে ঢেকে দিয়েছেন। বিষয়টি খালিশপুর থানা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে। তবে মুন্নার দাবি, এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন, আলোচনায় আসতে তিনি এসব করছেন।

১০ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী খালিশপুর থানা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক এ এস এম সায়েম মিয়া বলেন, গতবার একটি কেন্দ্রে ১২ থেকে ১৫ মৃত ব্যক্তি ভোট দিয়েছিলেন। এবারও কবর থেকে তারা ভোট দিতে আসেন কিনা, তা নিয়ে শঙ্কিত। এ জন্য ৩০ মে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ ওয়ার্ডে সেনাবাহিনী চেয়েছি।

এ ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর আওয়ামী লীগ নেতা কাজী তালাত হোসেন কাউট বলেন, হুমকি দিয়ে কী ভোট পাওয়া যায়? দুর্বল প্রার্থী এ ধরনের অভিযোগ করেন। গতবারের কথা এখন বলে কোনো লাভ হবে না।

১৯ নম্বর ওয়ার্ডে বিএনপির আশফাকুর রহমান কাকনের অভিযোগ, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর পক্ষে বহিরাগতরা প্রচার চালাচ্ছে, শোডাউন করে ভীতি তৈরি করছে।

এ ওয়ার্ডের প্রার্থী ও আওয়ামী লীগ নেতা কাজী মো. নুরুল ইসলাম বেবী বলেন, কর্মীদের হুমকি-ধামকি দিচ্ছে, পুলিশ কয়েকজনকে আটকও করেছে। তবে আওয়ামী লীগসমর্থিত প্রার্থী জাকির হোসেন বিপ্লব বলেন, পরাজয়ে শঙ্কা থেকেই বানোয়াট অভিযোগ করা হচ্ছে। নির্বাচনে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিরাজ করছে।

পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী বিএনপি নেতা শেখ সাজ্জাদ হোসেন তোতন বলেন, ভোটারদের মাঝে টাকা ছড়াচ্ছে ক্ষমতাসীনরা। আমাদের লোকজনকে হুমকি দিচ্ছে। সুষ্ঠু ভোট নিয়ে শঙ্কায় আছি।

এবার সাধারণ ২৯টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন আওয়ামী লীগের ৭৯, বিএনপির ছয়, জামায়াতের পাঁচ, ইসলামী আন্দোলনের চার, জাতীয় পার্টির এক, ওয়ার্কার্স পার্টির একজনসহ ১৩৪ জন। সাতটি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থীদের সবাই আওয়ামী লীগের। ১৩ ও ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কাউন্সিলর হয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা এস এম খুরশিদ আহমেদ টোনা ও জেড এ মাহমুদ ডন।

অন্যদিকে সংরক্ষিত ১০টি ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের ৩৪, বিএনপির এক ও অন্য চারজন প্রার্থী রয়েছেন। পাঁচটি ওয়ার্ডের সব প্রার্থীই আওয়ামী লীগের।

কেসিসি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিন বলেন, প্রার্থীরা অভিযোগ করলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। নির্বাচনে সুষ্ঠু পরিবেশ বিরাজ করছে বলেও দাবি করেন তিনি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close