আহমেদ জামিল, সিলেট

  ০৩ জুন, ২০২৩

সিটি নির্বাচন

উৎসবের নগরী সিলেট

সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রতীক পেয়েই প্রচারে নেমেছেন প্রার্থীরা। নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর থেকেই মেয়র পদের প্রার্থীরা অনানুষ্ঠানিকভাবে লিফলেট বিতরণ, গণসংযোগ ও সভা করে আসলেও শুক্রবার (২ জুন) থেকে দলবলে মাঠে নেমে শুরু করেন প্রচার। বেলা ২টা থেকে মাইকিং ও প্রার্থীদের খণ্ড খণ্ড মিছিল-গণসংযোগে উৎসবের নগরীতে পরিণত হয় সিলেট।

এদিন সকাল সাড়ে ৯টা থেকে সিলেট নগরীর জালালাবাদ গ্যাস অডিটোরিয়ামে প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ শুরু হয়। প্রথমেই মেয়রপ্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ করা হয়। একে একে সব সাধারণ কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলরদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ করা হয়। প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ করেন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সিলেটের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ফয়সল কাদের।

মেয়র পদে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ায় বিভিন্ন দলের মনোনীত প্রার্থীদের মধ্যে তাদের দলীয় নির্বাচনী প্রতীক বরাদ্দ করা হয়েছে। নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বী সাতজন প্রার্থীর মধ্যে নৌকাপ্রতীক পেয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, লাঙ্গল প্রতীক পেয়েছেন জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী মাওলানা মাহমুদুল হাসান পেয়েছেন হাতপাখা প্রতীক, জাকের পার্টির মো. জহিরুল আলম পেয়েছেন গোলাপফুল প্রতীক। এছাড়া স্বতন্ত্রপ্রার্থী মোহাম্মদ আবদুল হানিফ কুটু পেয়েছেন ঘোড়াপ্রতীক, মো. ছালাহ উদ্দিন রিমন পেয়েছেন ক্রিকেট ব্যাট ও মো. শাহজাহান মিয়া পেয়েছেন বাস প্রতীক। গত বৃহস্পতিবার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন পর্যন্ত ১২ কাউন্সিলরপ্রার্থী তাদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন। তবে কোনো মেয়রপ্রার্থী তাদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। যার ফলে নির্বাচনে সাত মেয়রপ্রার্থীর মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ করা হয়েছে। এছাড়া ৪২টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৭৩ জন ও ১৪টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে নারী কাউন্সিলর পদে ৮৭ জন প্রার্থীর মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ করা হয়।

এদিকে, প্রতীক বরাদ্দের পরপরই আনুষ্ঠানিক প্রচারে নেমেছেন প্রার্থীরা। নগরের আনাচে কানাচে মাইকিং করে জানান দিতে শুরু করেছেন প্রার্থীরা। কোনো কোনো ওয়ার্ডে প্রার্থীরা তাদের কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে করেন মিছিল-মিটিং। প্রার্থীদের সমর্থনে বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডে মোটরসাইকেলের শোভাযাত্রা হয়েছে।

প্রতীক পেয়েইে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী সিলেট মহানগরীর মেন্দিবাগ, উপশহর ও এর আশপাশ এলাকায় নেতাকর্মীদের নিয়ে লিফলেট বিতরণ করেন। এ সময় তিনি পথচারী, ব্যবসায়ী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন।

আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী সবার দোয়া ও আন্তরিক সহযোগিতা চেয়ে নির্বাচিত হলে স্মার্ট নগরী গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করে বলেন, নৌকা কেবল আওয়ামী লীগের প্রতীকই নয়, বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও ঐতিহ্যের প্রতীক। এ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া অনেক রাজনৈতিক নেতার স্বপ্ন। আমার সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। প্রিয় নগরবাসী যদি ২১ জুন আমাকে নৌকা মার্কায় তাদের মূল্যবান ভোট দিয়ে বিজয়ী করেন, তাহলে নগরবাসীকে স্বপ্নের স্মার্ট সিলেট উপহার দেব।

জাতীয় পার্টির মেয়রপ্রার্থী নজরুল ইসলামও নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে প্রচার চালানোর কথা বলেন। তিনি আগামী সময়ে সিলেট সিটিকে সুন্দর ও পরিকল্পিত নগরী হিসেবে গড়তে লাঙ্গল প্রতীকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান। পরে তিনিও নগরের মেন্দিবাগ ও শাহজালাল উপশহর এলাকায় লিফলেট বিলির মাধ্যমে প্রচার শুরু করেন।

ইসলামী আন্দোলনের মেয়র প্রার্থী মাহমুদুল হাসান সাংবাদিকদের বলেন, সিলেট সিটি করপোরেশনে গত ২০ বছরে যে উন্নয়ন হয়নি, তিনি নির্বাচিত হলে সে উন্নয়ন করবেন। এ সময় তিনি নির্বাচিত হলে হোল্ডিং ট্যাক্স ২০ শতাংশ কমানো ও ব্যবসায়ীদের ট্রেড লাইসেন্স পেতে বিড়ম্বনা থেকে মুক্তি দিতে উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানান।

সিলেট সিটি করপোরেশনের ৪২টি ওয়ার্ডে ভোটার চার লাখ ৮৬ হাজার ৬০৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ দুই লাখ ৫৩ হাজার ৭৬৩ ও নারী দুই লাখ ৩২ হাজার ৮৪২ জন। কেন্দ্র ১৯০টি এবং ভোটকক্ষ এক হাজার ৩৬৪টি। ২০০২ সালে সিলেট সিটি করপোরেশন প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর এবারই প্রথম সবকটি ভোটকেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) এর মাধ্যমে ভোটগ্রহণ হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close