মওদুদ আহম্মেদ, আক্কেলপুর (জয়পুরহাট)

  ২৫ মে, ২০২৩

আক্কেলপুর হেল্থ ইনস্টিটিউটে শিক্ষক ও জনবল সংকট

প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী আছে, তবে রয়েছে শিক্ষক ও কর্মচারী সংকট। এ সব সমস্যার সঙ্গে পাল্লা দিয়েই চলছে নিয়মিত পাঠদান। আর বিদ্যাপীঠ হচ্ছে জয়পুরহাটের আক্কেলপুরের ইনস্টিটিউট অব হেল্থ টেকনোলজি। গত বছর মে মাসে আবেদন করলেও এখনো পায়নি প্রতিষ্ঠানের অর্থনৈতিক কোড। কোডটি পেলে শিক্ষক সংকটসহ সব সমস্যা সরকারিভাবে সমাধান হবে বলে আশা করছেন প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ।

সরেজমিনে গিয়ে ইনস্টিটিউট অব হেল্থ টেকনোলজির মূল ফটক দিয়ে ঢুকতেই দেখা যায় নতুন ভবনগুলোর আশপাশে জন্মেছে প্রচুর আগাছা। যা অল্প সময়েই নষ্ট করবে ভবনগুলো। ছাত্রাবাসে গিয়ে দেখা গেল আরেক চিত্র। ছাদের জয়েন্টের ফাটল বেয়ে পানি ঢুকছে ছাত্রাবাসে। সেখানে মাটির আইল দিয়ে পানি আটকিয়ে কষ্ট করে থাকছেন ছাত্ররা।

জানা গেছে, প্রতিষ্ঠানটি ২০২০ সালে উদ্বোধন হয়। পাঠদান শুরু হয় ২০২২ সালের ৩ মার্চ। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটিতে দুটি অনুষদে (ল্যাবরেটরি ও ফার্মেসি) চলছে পাঠদান। এতে ২৪৩ জন (ছাত্র-১২১, ছাত্রী-১২২) অধ্যয়নরত রয়েছে। প্রতিষ্ঠানে ১৩৬ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর পদের বিপরীতে কর্মরত রয়েছেন মাত্র ১০ জন। এর মধ্যে অধ্যক্ষ ১ জন, প্রভাষক ৩ জন, টেকনোলজিস্ট ২ জন, প্রধান সহকারী ১ জন, নৈশপ্রহরী ২ জন, পরিচ্ছন্নতাকর্মী ২ জন। প্রতিষ্ঠানে এখন পর্যন্ত হয়নি কোনো অর্থনৈতিক কোড। অর্থনৈতিক কোডের জন্য ২০২২ সালের ৫ মে আবেদন করেছে প্রতিষ্ঠানটি।

প্রতিষ্ঠানটির একাধিক সূত্রে আরো জানা গেছে, ল্যাবরেটরিতে নেই ব্যবহারিক সরঞ্জাম। সেখানে ল্যাবরেটরি অনুষদের শিক্ষার্থীদের ব্যবহারিক ক্লাস আবশ্যই প্রয়োজন। তাছাড়া বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রয়েছে ৫ লাখ টাকা। সমস্যা রয়েছে প্রতিষ্ঠানের আবাসিকেও। ভবনের দেওয়াল বেয়ে ঘরে প্রবেশ করে পানি। আবাসিকে পর্যাপ্ত সামগ্রী না থাকায় মেঝেতে বিছানা পেতে শুয়ে থাকেন অনেক শিক্ষার্থী। লোকবল সংকটের কারণে পরিচর্যার অভাবে বিভিন্ন ভবনের দেওয়ালে জন্ম নিয়ে পরগাছা। প্রতিষ্ঠানে নেই কোনো লাইব্রেরি।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে এক শিক্ষার্থী জানায়, আমরা বিভিন্ন সমস্যার মধ্যে রয়েছি। ল্যাবরেটরিতে যন্ত্রাংশ সংকট রয়েছে। আবাসিক হলগুলোয় সমস্যা আছে। হলে থাকার সিট না পেয়ে অনেক শিক্ষার্থী মেঝেতে বিছানা করে থাকে। আবাসিকের কয়েকটি ঘরে দেওয়াল বেয়ে ঘরে পানি প্রবেশ করে। প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা হাসিবুল হাসান বলেন, ‘জনবল সংকটের মধ্যে দিয়ে পরিচালিত হচ্ছে এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। সংকটের কারণে অফিসের কয়েক জনের কাজ আমাকে একা করতে হয়। আমার মতো প্রত্যেককে অন্যের কাজ বাধ্য হয়ে একাই করতে হয় বলে হিমশিম খাচ্ছি। দ্রুত জনবল কাঠামোর স্থায়ী সমাধান করা দরকার’।

অধ্যক্ষ ডা. মো. আবদুল কুদ্দুস মন্ডল বলেন, ‘বিভিন্ন সংকটের মধ্যেই আমরা শিক্ষার্থীদের নিয়মিত পাঠদান করে আসছি। জনবল সংকট থাকায় প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করতে আমাদের বেগ পেতে হচ্ছে। শিক্ষক কম থাকায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষক চেয়ে নিয়ে পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনা করছি। মূলত অর্থনৈতিক কোড না থাকায় এ সংকট। ইতিমধ্যেই কোডটির জন্য আমরা আবেদন করেছি। কোডটি পেলেই যাবতীয় সমস্যা সমাধানসহ আরো ৫টি অনুষদ শিগগিরই চালু হবে বলে আশা করছি’।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাহমিনা আক্তার এ বিষয়ে বলেন, ‘ইনস্টিটিউট অব হেল্থ টেকনোলজি প্রতিষ্ঠানটি সরাসরি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং অধিদপ্তরের অধীনে পরিচালিত। চলমান সমস্যাগুলো নিয়ে আমরা স্থানীয়ভাবে আলোচনা করে সমাধানের প্রচেষ্টা করবো এবং সমস্যাগুলোর বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে সুপারিশ করা হবে’।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close