অর্থনৈতিক প্রতিবেদক

  ২২ মে, ২০২৩

পুঁজিবাজারে বিক্রয় চাপ, দরপতন

দীর্ঘদিনের চাপ কাটিয়ে পুঁজিবাজারের ঘুরে দাঁড়ানোর আভাসের মধ্যে হঠাৎ দরপতন দেখল বিনিয়োগকারীরা।

সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস রবিবার (২১ মে) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সাধারণ সূচক ডিএসইএক্স চলতি ২০২৩ সালের সর্বোচ্চ অবস্থানে ওঠে যাওয়ার পর বিক্রয় চাপ সামলাতে পারেনি পুঁজিবাজার। শেষ পর্যন্ত আগের দিনের চেয়ে সূচক ও লেনদেন কমে যায়। দর হারায় বেশিরভাগ কোম্পানি। যেসব কোম্পানি দর বেড়ে লেনদেন হচ্ছিল, তার মধ্যে অনেকগুলোর দরও কমে যায়।

চলতি বছর বেশ কয়েকবার ৬ হাজার ৩০০ পয়েন্ট ছুঁইছুঁই হয়েও সূচক অবস্থান ধরে রাখতে না পেরে নিচে নেমে যায়। মাসের পর মাস ধরে চলা মন্দার মধ্যে ঈদের আগে থেকে পুঁজিবাজার ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দিচ্ছে। এর মধ্যে রবিবার সকাল ১০টায় লেনদেন শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যে সূচক ওঠে যায় ৬ হাজার ২৯৬ দশমিক ৮০ পয়েন্ট। এরপর কিছুটা কমলেও দুপুর ১২টা ২২ মিনিটে আবার তা ৬ হাজার ২৯৬ দশমিক ৩৩ পয়েন্ট হয়। কিন্তু এরপর দুই ঘণ্টায় টানা পতনে শেষ পর্যন্ত সূচকের ঘরে আগের দিনের চেয়ে ৮ পয়েন্ট কম নিয়ে শেষ হয় লেনদেন।

গত ২৬ জানুয়ারির ৬ হাজার ২৯৬ দশমিক ২৫ পয়েন্ট ডিএসইএক্সের সর্বোচ্চ অবস্থান। তার আগের দিন ৬ হাজার ২৯৩ পয়েন্ট এবং ২ ফেব্রুয়ারি ৬ হাজার ২৯৪ পয়েন্ট ওঠার পর দরপতনের একপর্যায়ে গত ১১ এপ্রিল ৬ হাজার ১৯৬ পয়েন্টে নেমে যায়।

টানা দরপতনে বিনিয়োগকারীদের হতাশা চরমে ওঠে। তবে পরের দিন থেকে ধীরে ধীরে বাড়তে শুরু করে সূচক। শুরুর দিকে স্বল্প মূলধনী ও লোকসানি কিছু কোম্পানি, এরপর বহুজাতিক কিছু কোম্পানির লোকসান থেকে বেরিয়ে মুনাফায় ফেরা এবং সবশেষ বস্ত্র এবং সাধারণ বিমা খাতের নিজেকে ফিরে পাওয়ার ঘটনায় বিনিয়োগকারীদের আগ্রহও ফিরতে শুরু করে। নিষ্ক্রিয় বিনিয়োগকারীদের শেয়ার কেনা বাড়তে থাকে।

২৪ এপ্রিল লেনদেন ৯৬৭ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাওয়ার পর লেনদেনে আবার ভাটা দেখা দেয়। ১৪ মে ৬৩৬ কোটি টাকায় নেমে তা আবার বাড়তে বাড়তে বৃহস্পতিবার ৯৩২ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়। সূচক বেড়েও কমে যাওয়ার দিন লেনদেন কমে ১২০ কোটি টাকার বেশি। হাতবদল হয় ৮১১ কোটি ৭৪ লাখ ২৪ হাজার টাকা।

৬৫ কোম্পানির দর বৃদ্ধির বিপরীতে দর হারায় ১০৪টি। ১৯২টি হাতবদল হয় আগের দিনের দরে, যেগুলোর সিংহভাগই হাতবদল হয়েছে ফ্লোর প্রাইসে। সাতটি কোম্পানির লেনদেন স্থগিত থাকার মধ্যেও ৩৬১টি কোম্পানির শেয়ার হাতবদল হয়েছে এদিন।

প্রায় দেড় বছর ধরে চলা সংশোধন কাটিয়ে গত সপ্তাহে বিমা খাতে যে রমরমা দেখা গিয়েছিল, নতুন সপ্তাহের শুরুর দিন তেমনটি দেখা যায়নি। এই খাতে দেখা গেছে মিশ্র প্রবণতা। আগের দিনের চেয়ে লেনদেন কমেছে অনেকটাই, সেইসঙ্গে মোট লেনদেনের মধ্যে কমেছে হিস্যাও।

আগের কার্যদিবস বৃহস্পতিবার সাধারণ ও জীবন বিমা মিলিয়ে ২৮৫ কোটি টাকার শেয়ার হাতবদল হয়, যা ছিল মোট লেনদেনের ৩৫ শতাংশ। রবিবার মোট লেনদেনের ৩১ শতাংশ ছিল এই খাতে। হাতবদল হয় ২৩০ কোটি টাকার কিছু বেশি। দর বৃদ্ধির শীর্ষে এ খাতের তিনটি কোম্পানি ছিল, তেমনি দরপতনের শীর্ষ দশেও ছিল দুটি। সাধারণ বিমার ৪০টি কোম্পানির লেনদেন হয়েছে এদিন। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১৬টির, হারিয়েছে ২০টি আর চারটি কোম্পানি আগের দিনের দরে হাতবদল হয়েছে। দুটি কোম্পানির লেনদেন হয়নি লভ্যাংশ সংক্রান্ত রেকর্ড ডেটের কারণে। এসব কোম্পানিতে লেনদেন হয়েছে ১২১ কোটি টাকার বেশি যা মোট লেনদেনের প্রায় ১৬ শতাংশ।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close