নিজস্ব প্রতিবেদক

  ৩০ মার্চ, ২০২৩

স্বাধীনতা দিবসের আলোচনা সভায় স্থানীয় সরকারমন্ত্রী

স্বাধীনতাকে টেকসই করার চ্যালেঞ্জ এখনো রয়েছে

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, ষড়যন্ত্র থাকবে, তা মোকাবিলা করে স্বাধীনতার সুফল জনজীবনে পৌঁছাতে হলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। স্বাধীনতা অর্জনে যেমন ৩০ লাখ জীবন উৎসর্গ করতে হয়েছে, তেমনি রক্ষার জন্য কম ত্যাগ স্বীকার করতে হয়নি। পরাধীন জাতি স্বাধীনতার গুরুত্ব সবচেয়ে ভালো বুঝতে পারবে। পরাধীন জাতি হীনম্মন্যতায় ভোগে, তাদের নিজেদের ভবিষ্যৎ নেই এবং কোনো লক্ষ্যও নেই। বাঙালি জাতির হাজার বছরের ইতিহাসে অন্ধকারাচ্ছন্ন ও হতাশাময় পরাধীনতার দুর্ভোগ থেকে মুক্তি দিয়েছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

মন্ত্রী বলেন, দুর্ভাগ্যজনকভাবে সেনাশাসন এবং বিএনপি জামায়াতের সময়কালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করা হয়েছে। জাতিকে বিভ্রান্ত করার জন্য বঙ্গবন্ধুর নাম ইতিহাস থেকে মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে।

মো. তাজুল ইসলাম বলেন, স্বাধীনতাকে নিরাপদ করার চ্যালেঞ্জ এখনো রয়েছে, ষড়যন্ত্র এখনো চলছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সব ষড়যন্ত্র ও বাধাকে উপেক্ষা করে বাংলাদেশ সামনের দিকে এগিয়ে চলেছে।

মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস-২০২৩ উপলক্ষে বুধবার (২৯ মার্চ) রাজধানী ঢাকায় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর মিলনায়তনে আয়োজিত ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক নেতৃত্ব এবং দেশের উন্নয়ন’ শীর্ষক এক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ কথা বলেন।

স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, একটি আইনানুগ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে ১৯৭০ সালের নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। দেশের জনগণ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে দেশের নেতৃত্বে দাঁড় করিয়েছিলেন দেশকে শাসন করার জন্য কিন্তু পাকিস্তান সরকারের ষড়যন্ত্রে আমাদেরকে স্বাধীনতা যুদ্ধে অবতীর্ণ হতে হয়।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শুধু আমাদের স্বাধীনতাই এনে দেননি, আমাদের স্বাধীনতাকে শক্ত ভিত্তির ওপরও তিনি দাঁড় করিয়েছেন। ভৌগোলিক আয়তনের ছোট্ট একটি দেশ হওয়ায় বাংলাদেশ একসময় তার বিশাল জনসংখ্যা নিয়ে উদ্বিগ্ন থাকলেও প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার নেতৃত্বে শিক্ষা ও নারীর ক্ষমতায়নের মাধ্যমে এই বিশাল জনসংখ্যা সম্পদে পরিণত হয়েছে।

এ সময় বিএনপির সুষ্ঠু নির্বাচন দাবির প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, বিএনপির কাছে সুষ্ঠু নির্বাচন হচ্ছে যে নির্বাচনে বিএনপি ক্ষমতায় আসতে পারবে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার জন্য আন্দোলন এবং প্রতিষ্ঠা করেছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিএনপি সেই ব্যবস্থাকেও কলুষিত এবং নিজ স্বার্থে ব্যবহার করার ফলে আদালতের রায়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিভিন্ন ধাপে বাংলাদেশের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে দীর্ঘদিনের অমীমাংসিত সীমান্ত সমস্যা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করে বাংলাদেশ ১৭ হাজার একর এবং ভারত ৭ হাজার একর ভূমি পেয়েছে। অন্যদিকে দুই প্রতিবেশী মিয়ানমার এবং ভারতের সাথে আন্তর্জাতিক সমুদ্রসীমা বিরোধ নিষ্পত্তি করে মিয়ানমার থেকে এক লাখ ১১ হাজার বর্গ কিলোমিটার এবং ভারত থেকে ১৯ হাজার ৪০০ বর্গ কিলোমিটার সমুদ্রসীমা এখন বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক জলসীমায় অন্তর্ভুক্ত। মো. তাজুল ইসলাম বলেন, অপরদিকে বিএনপি দেশকে উপহার দিয়েছে খাদ্যঘাটতি, কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধসহ নানা রকমের জঙ্গি তৎপরতা।

এ সময় স্থানীয় সরকারমন্ত্রী সাম্প্রতিক সরকারি কর্মকর্তাদের ‘স্যার’ সম্বোধন করা নিয়ে বিতর্কের বিষয়ে বলেন, যে অবস্থানেই থাকুন না কেন, সবাইকে তার প্রাপ্য সম্মান দিলে সহাবস্থান নিশ্চিত হবে এবং এতে কোনো অসুবিধা নেই। সম্বোধনের নানা স্তর রয়েছে এবং তা নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে থাকলেই সবার সম্মান অটুট থাকবে।

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মুহম্মদ ইবরাহিম। এতে আরো বক্তব্য রাখেন স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. মলয় চৌধুরী, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো. সরোয়ার হোসেন, স্থানীয় সরকার ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক সালেহ আহমেদ মোজাফফর, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী সেখ মোহাম্মদ মহসিন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close