এম এ সাইদ খোকন, আমতলী (বরগুনা)

  ২১ মার্চ, ২০২৩

সুচালো চঞ্চুর মাছরাঙা

বরগুনার আমতলীসহ উপকূলীয় এলাকায় মাছরাঙার মাছ শিকার এখন তেমন নজরে পড়ে না। পাখিপ্রেমীরা জানিয়েছেন, মাছরাঙার সংখ্যা অনেক কমে গেছে। খাটো পুচ্ছ, বড় মাথা, সুচালো চঞ্চুর আঁটোসাঁটো গড়নের পাখি মাছরাঙা। শিকার ধরার জন্য পানির দিকে মাথা নিচু করে ছোঁ মারে, প্রায়ই পানির ভেতরে ঢুকে যায়, শিকার করা মাছ নিয়ে গাছের ডালে ফিরে আসে। মাছকে কয়েকবার ডালে আছাড় দিয়ে মেরে তারপর শূন্যে ছুড়ে দিয়ে মাথার দিক থেকে গিলে ফেলে।

মাছরাঙা স্ত্রী-পুরুষ দেখতে একই রকম। গায়ের ওপরের পালক উজ্জ্বল নীল, শরীরের কিনারে ও ডানায় সবুজের ছোঁয়া আছে। মাথায় কালচে নীল রঙের টানা-টানা দাগ। পায়ের রং লাল। এরা সোজাসুজি ও বেশ দ্রুত ওড়ে। নিজের এলাকার রক্ষণাবেক্ষণ ও নিরাপত্তা বিধানে খুব সতর্ক। মার্চ থেকে জুন মাস হচ্ছে এদের প্রজননকাল। কোনো জলাশয়ের পাশের খাড়া ঢালে গর্ত করে বাসা বানায়। ৫-৭টি ডিম পাড়ে।

আমতলীর পূর্বচিলা এলাকার মো. ইলিয়াস মিয়া বলেন, ‘আগে আমাদের পুকুরের ধারে চালা (গর্ত) করে মাছরাঙা পাখি বাসা করত। সেখানে ডিম পেড়ে তা দিয়ে বাচ্চা ফুটাত। বাচ্চা বড় হলে চলে যেত। এখনো বাসা তৈরি করে, তবে আগের মতো না। এর কারণ হলো ফসলে অধিক পরিমাণে কীটনাশক ব্যবহার, গাছগাছালি কেটে ফেলা। এ ছাড়া দুষ্ট ছেলেরা অনেক সময় গর্তে ডিম নষ্ট করে দেয়। মাছরাঙা পাখি গাছের ডালে বসে থাকত শিকারের আশায়, মাছ শিকার করত। কিন্তু এখন আর খুব একটা চোখে পড়ে না।

আমতলী সরকারি কলেজের প্রাণিবিদ্যার অধ্যাপক মো. ফজলুল হক বলেন, ‘আগে আমাদের পুকুর পাড়ে মাছরাঙা পাখির মাছ শিকারের দৃশ্য নজরে পড়ত। শিকারের পর গাছের ডালে বসে মাছ খেত। এই দৃশ্য দেখে যে কারো হৃদয় জুড়িয়ে যেত। এই পাখিটি জলাশয়ের আশপাশে বেশি ঘোরাফেরা করে। কিন্তু দেশে নালা, খাল-বিল শুকিয়ে যাওয়ায় এই পাখির সংখ্যা কমে এসেছে। মাছরাঙা পাখি বলতে গেলে বিলুপ্ত হওয়ার পথে।’

আমাদের খাল-বিল রক্ষা করা না গেলে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ আরো কমে যাবে। বিলুপ্ত হয়ে যাবে সুন্দর শিকারি পাখি মাছরাঙাও।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close