রবিউল ইসলাম, টঙ্গী (গাজীপুর)

  ০১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

হালকা প্রকৌশলে উদ্যোক্তা শিমু

লতিফা আক্তার শিমু টঙ্গী চেরাগ আলী এলাকায় তিল তিল করে গড়ে তুলেছেন শিমু ইঞ্জিনিয়ারিং নামে শিল্প প্রতিষ্ঠান। টঙ্গীতে তিনিই একমাত্র নারী উদ্যোক্তা। পুরুষ উদ্যোক্তাদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সুনামের সঙ্গে টিকে রয়েছেন। প্রতিকূলতা ও বাধা বিপত্তিকে তোয়াক্কা না করে তিনি প্রমাণ করেছেন কাজ করলে সফলতা এক দিন না এক দিন আসবেই।

লতিফা আক্তার শিমু বলেন, জীবনযুদ্ধে এগিয়ে যেতে হলে কাজের কোনো বিকল্প নেই। ১৯৯৭ সালে টঙ্গী পাইলট স্কুল অ্যান্ড গালর্স কলেজে নবম শ্রেণিতে পড়াকালীন তিনি তার বাবার লেদ মেশিনে কাজ শুরু করেন। পরে তিনি নিজেই শিমু ইঞ্জিনিয়ারিং নামে একটি ক্ষুদ্র শিল্প গড়ে তোলেন। নামিদামি কারখানার বিভিন্ন প্যাকিং মেশিন, খুচরা যন্ত্রাংশ, ডাইসসহ খুচরা যন্ত্রাংশ তৈরি শুরু করে থাকেন। পাশাপাশি লেখাপড়া চালিয়ে যান। বিভিন্ন স্থান থেকে বিয়ের প্রস্তাব এলেও তিনি বাল্যবিয়েতে রাজি হননি। একপর্যায়ে উচ্চমাধ্যমিক পাস করে বিবিএসে ভর্তি হন। এরই মধ্যে গাজীপুরে একমাত্র নারী হালকা ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্প উদ্যোক্তা হিসেবে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে লোহা শক্ত ও নরম করার হিট ট্রিটমেন্ট, মার্কেটিং, কোয়ালিটি কন্ট্রোল ম্যানেজমেন্টের ওপর প্রশিক্ষণ নেন।

শিমু জানান, একসময় তাকে উদ্যোক্তা হওয়ার নেশায় পেয়ে বসে। ২০০০ সালে সেনাবাহিনীতে চাকরির সুযোগ পেয়েও তিনি যাননি। হালকা (লাইট) ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্পে একমাত্র নারী উদ্যোক্তা হিসেবে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক সুইসকন্ট্যাক্ট, ব্র্যাক ও বিজনেস ডেভেলপমেন্ট সার্ভিসেস (বিডিএস) তাকে সফল নারী উদ্যোক্তার পুরস্কার প্রদান করে। এমনকি ব্র্যাক ও সুইসকন্ট্যাক্ট ২০২০ সালে তাকে নারী উদ্যোক্তাদের মডেল হিসেবে নির্বাচিত করে। বর্তমানে তার ওয়ার্কশপে ছয়জন কর্মচারী কাজ করছেন। তিনি হালকা ইঞ্জিনিয়ারিং খাতে মাস্টার ট্রেইনার হিসেবে কয়েক হাজার ক্ষুদ্র শিল্প মালিক ও শ্রমিককে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। তারা অনেকেই ভালো বেতনে দেশ-বিদেশে কর্মরত। এছাড়াও তিনি টঙ্গী বসুন্ধরা পলিটেকনিক, মনটেজ পলিটেকনিক ও বুয়েটের অনেক শিক্ষার্থীকে হাতে কলমে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন।

তিনি আরো বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে জায়গা ভাড়া নিয়ে ওয়ার্কশপ চালানো কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। সরকার যদি ক্ষুদ্র শিল্প স্থাপনের জন্য এক টুকরো জায়গা দেয় তাহলে শিল্প কারখানা করার পাশাপাশি একটি হালকা ইঞ্জিনিয়ারিং ট্রেনিং সেন্টার খুলতে চাই। যেখানে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সমাজের অবহেলিত নারীদের হাতে-কলমে শিক্ষার ব্যবস্থা করতে পারব।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close