বলরাম দাশ অনুপম, কক্সবাজার

  ২৪ জানুয়ারি, ২০২৩

কক্সবাজার থেকে বদলি চান অর্ধশত পুলিশ সদস্য

কক্সবাজার জেলায় দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশের আরো অর্ধশত সদস্য স্বেচ্ছায় বদলি হয়ে দেশের অন্যত্র চলে যেতে আবেদন করেছেন। শুধু আবেদনই নয়, তারা বদলি হওয়ার জন্য জোর তদবির শুরু করেছেন। সম্প্রতি কক্সবাজার জেলা থেকে ১১০ পুলিশ কনস্টেবল অন্যত্র বদলির পর আরো অর্ধশত পুলিশ সদস্য স্বেচ্ছায় বদলির জন্য আবেদন ও তৎপরতা চালাচ্ছেন বলে জেলা পুলিশ সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

বিষয়টি স্বীকার করেছেন কক্সবাজার জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. রফিকুল ইসলাম। তিনি জানান, কক্সবাজার দেশের এক প্রান্তে হওয়ায় দূর-দূরান্ত জেলা থেকে কক্সবাজারে কর্মরত পুলিশ সদস্যরা এখানে দায়িত্ব পালন করতে অনাগ্রহী। কক্সবাজারে যাতায়াতেই ছুটির বেশির ভাগ সময় চলে যায় বলে জানানো হয়। এছাড়া পর্যটননির্ভর কক্সবাজারের জীবন যাত্রার ব্যয় অন্যান্য এলাকার তুলনায় অনেক বেশি। এসব নানা কারণে অনাগ্রহ তৈরি হয়েছে। ফলে স্বেচ্ছায় বদলি হতে আবেদন করছেন তারা।

এর মধ্যে যারা ২ বছরের বেশি সময় ধরে কক্সবাজারে কর্মরত ছিলেন এরূপ ১১০ কনস্টেবলকে সম্প্রতি বদলি করা হয়েছে। এর মধ্যে ১০৩ জন স্বেচ্ছায় বদলির জন্য আবেদন করেছেন। অপর ৭ জন ছিলেন নিয়মাতান্ত্রিক বদলির অংশ। এখন আরো অর্ধশত আবেদন জমা রয়েছে যারা স্বেচ্ছায় বদলি হতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

পুলিশের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, কক্সবাজারের টেকনাফে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান পুলিশের গুলিতে নিহত হওয়ার ঘটনার জের ধরে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে জেলা পুলিশে সকল সদস্যকে একযোগে বদলি করা হয়। একই সময় নতুন করে পদায়ন করা হয় পুলিশ কর্মকর্তাসহ ১৫০০ সদস্য।

কক্সবাজার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম জানান, এখানে দায়িত্ব পালনকারী বেশির ভাগ পুলিশ সদস্যদের বাড়ি দূরের জেলায়। যারা ছুটি নিয়ে গ্রামের বাড়ি পৌঁছতে এবং কর্মস্থলে ফিরতে তিন থেকে চার দিন সময় লাগে। আসা যাওয়ার খরচও অনেক বেশি পড়ে যায়। যে কারণে তাদের চাকরির অর্ধেক টাকা একবার বাড়িতে যাওয়া আসা করলেই শেষ হয়ে যায়। তাছাড়া অনেক পুলিশ সদস্য আছেন কক্সবাজারের স্থানীয় ভাষা ঠিকভাবে রপ্ত করতে পারেন না। ফলে দায়িত্ব পালনেও নানাভাবে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে তাদের। যার কারণে স্বেচ্ছায় বদলি হওয়ার আবেদন দিয়েছেন অনেক পুলিশ সদস্য।

এসব আবেদন পর্যালোচনা করে ১০৩ জনসহ ১১০ পুলিশ সদস্যকে বদলি করতে সুপারিশ করা হলে সম্প্রতি তাদের বদলি করা হয়। অপর আবেদনগুলোও পর্যালোচনা করা হচ্ছে।

পুলিশের বিধিমালার কথা উল্লেখ করে পুলিশ সুপার জানান, নিয়ম মতে বছরে ২০ দিন ছুটি প্রদানের নিয়ম রয়েছে। যে ছুটিগুলো ৫ দিন করে চারভাগে উপভোগ করতে পারেন। এই ক্ষেত্রে ৫ দিনের ছুটি নিয়ে বাড়িতে আসা যাওয়া করতে তিন থেকে চার দিন সময় চলে যায় যাতায়তকালে রাস্তায়। ফলে ছুটিগুলো বাড়িতে উপভোগ করারও সুযোগ থাকে না তাদের। এছাড়া পরিবারের জরুরি প্রয়োজনেও তাদের পরিবারের কাছে পৌঁছানো অসম্ভব হয়ে পড়ে। এসব সদস্য নিজ জেলার আশপাশে বদলি হয়ে দায়িত্ব পালন করতে আগ্রহী বলে স্বেচ্ছায় বদলি হতে চান।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close