নিজস্ব প্রতিবেদক

  ০৬ ডিসেম্বর, ২০২২

সব হাসপাতালেই ওয়ান স্টপ সার্ভিস চালু হবে

স্বাস্থ্যমন্ত্রী

দেশের প্রতিটি হাসপাতালেই ওয়ান স্টপ ইমার্জেন্সি অ্যান্ড ক্যাজুয়ালিটি সার্ভিস (ওসেক) চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, এটি চালু হলে হাসপাতালগুলোতে রোগীর প্রেশার কমবে। একইসঙ্গে স্বাস্থ্যসেবার মান আরো বৃদ্ধি পাবে এবং মৃত্যুহারও কমে যাবে। এজন্য আমরা পর্যায়ক্রমে দেশের প্রতিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জেলা সদর হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ সেবা চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

সোমবার (৫ ডিসেম্বর) বিকালে রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ওয়ান স্টপ ইমার্জেন্সি অ্যান্ড ক্যাজুয়ালিটির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, হাসপাতালের জরুরি বিভাগে যদি সব ধরনের আধুনিক চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হয় তাহলে আমাদের দেশের অনেক মৃত্যু কমানো সম্ভব হবে। উন্নত বিশ্বে আধুনিক সুবিধা সম্পন্ন ইমার্জেন্সি সার্ভিসের কারণে স্ট্রোক, সড়ক দুর্ঘটনা, হার্ট অ্যাটাকের মতো জটিল অনেক রোগী বেঁচে যায়। ৫ মিনিট আগেও যদি প্রপার ট্রিটমেন্ট দেওয়া সম্ভব হয় তাহলে কিন্তু আমাদের দেশের অনেক মৃত্যু কমানো সম্ভব।

টিকাদান কার্যক্রম নিয়ে তিনি বলেন, টিকাদানে বাংলাদেশ এখন রোল মডেল। এত অল্প সময়ে এত বিশাল সংখ্যক মানুষকে আমরাই প্রথম টিকা দিতে সক্ষম হয়েছি। এ কথা এখন ডব্লিউএইচও বলে। কোভিডকালে আমরা নতুন নতুন হাসপাতাল তৈরি করেছি। পুরোনো হাসপাতালের সেবার পরিধি বাড়িয়েছি। ১০ হাজার চিকিৎসক, ১৫ হাজার নতুন নার্স নিয়োগ দিয়েছি। মেডিকেল কলেজের ভর্তি পরীক্ষা চালু রেখেছি। আমরা চাই আমাদের দেশের কোনো রোগী যাতে বিদেশে যেতে না হয়। এজন্য প্রাইমারি, সেকেন্ডারি ও টারশিয়ারি সব হাসপাতালে সেবার মান বৃদ্ধিতে জোর দেওয়া হচ্ছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশিদ আলম বলেন, ওসেক সেবা চালু হলো রোগীদের ভিড় কমে আসবে। দ্রুত সময়ে রোগীদের প্রয়োজনীয় সেবা দেওয়া সম্ভব হবে।

ওসেক প্রকল্প বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবির বলেন, এক ছাদের নিচে ইমার্জেন্সি রোগীর অত্যাধুনিক সব সেবা প্রদানের একটি উদ্যোগ। প্রথম পর্যায়ে আমরা কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, মুগদা জেনারেল হাসপাতাল, মিটফোর্ড হাসপাতাল ও সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মডেল হিসেবে চালু করেছি। এই প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ইউএসএইড আমাদের সহায়তায় করেছে। তাদের সঙ্গে রয়েছে আইএফআরসি ও বিডিআরসিএস।

তিনি বলেন, আপনারা দেখবেন রোগী ও স্বজনদের সঙ্গে চিকিৎসকদের যত অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে সেটা কিন্তু ইমার্জেন্সি সার্ভিস ম্যানেজমেন্ট নিয়েই হয়ে থাকে। আমাদের যদি প্রান্তিক পর্যায় পর্যন্ত শক্তিশালী ইমার্জেন্সি সার্ভিস থাকে তাহলে এই সমস্যা অনেকাংশে কমে যাবে। প্রথম পর্যায়ে আমরা চারটি হাসপাতালকে মডেল হিসেবে নিয়েছি। পর্যায়ক্রমে সারা দেশের মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জেলা সদর ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চালু করা হবে। ওসেক চিকিৎসা জগতে নবদিগন্তের সূচনা করবে। এই সেবার মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবাকে আরো শক্তিশালী করতে পারব। আমি সবাইকে অনুরোধ করব ওসেককে অর্থবহ করে তুলতে হবে।

কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল ফজলুল কবির বলেন, স্বাস্থ্যসেবায় কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল সাধারণ মানুষের জন্য আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। কোভিডের সময় আমাদের এখানে ২০ হাজার ২৭৮ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। কোভিডকালে প্রায় ৯৩ শতাংশ রোগী সুস্থ হয়েছে। অন্যত্র পাঠাতে হয়েছে ৩ দশমিক ৮৭। মৃত্যু হয়েছে মাত্র তিন শতাংশ রোগী।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আফসানা আলমগীরের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন ঢাকা ১৮ আসনের সংসদ সদস্য ও কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হাবিব হাসান, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব নাজমুল হক খান, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) সাইদুর রহমান, নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক রাশিদা আক্তার এবং ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব রেড ক্রস অ্যান্ড রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিজ কান্ট্রি হেড সানজিদ কুমার কাফলে প্রমুখ।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close