আরিফ মাহমুদ, কলারোয়া (সাতক্ষীরা)

  ০৫ ডিসেম্বর, ২০২২

কলারোয়ায় সরিষা-মৌ

কিঞ্চিৎ শিশির ভেজা শীতের সকালে সাতক্ষীরার কলারোয়ার দিগন্তজুড়ে শোভা পাচ্ছে হলুদের সমারোহ। উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ফসলি মাঠের পর মাঠ যেন হলুদ বর্ণে ঢেকে গেছে সরিষা ফুলের দোল খাওয়া গাছগুলো। সবুজ সরিষার গাছের হলুদ ফুল সাত সকালের রোদে যেন ঝিকমিক করছে। ফসলি মাঠে সরিষা চাষ আর মৌমাছির মধু সংগ্রহে কর্মব্যস্ত এখন প্রান্তিক কৃষকরা।

দেশে সরিষা তেলের চাহিদা বাড়ায় চাষিরা এবার আগ্রহ করেই সরিষার চাষ করছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে চলতি মৌসুমে কলারোয়ায় সরিষার বাম্পার ফলন আর ভালো দাম পাওয়ার আশা করছেন কৃষকরা। উপজেলার গয়ড়া গ্রামের কয়েকজন সরিষা চাষি জানালেন, ‘ফলন ভালো পাওয়ার আশায় তারা এবার উন্নত জাতের সরিষা চাষ করেছেন। এখন সরিষা গাছের যে অবস্থা দেখা যাচ্ছে, তাতে ফলন ভালো হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’

মনিরুল ইসলাম নামের এক সরিষা চাষি বলেন, ‘কম খরচ, কম পরিশ্রম আর কম সময়ে সরিষা চাষ করা যায় বলে এটি অত্যন্ত লাভজনক একটি ফসল। প্রতি বিঘা জমি থেকে চলতি মৌসুমে ৬-৮ মণ সরিষা পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বর্তমানে বাজারে সরিষার দামও ভালো। তাই এবার সরিষা চাষিরা অনেক লাভবান হবেন- এমন আশা করা হচ্ছে।’

তবে প্রান্তিক পর্যায়ের কয়েকজন কৃষক বলেন, ‘তেল জাতীয় ফসল চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে চলতি বছরে সরকার থেকে বিনামূল্যে কৃষি প্রণোদনা হিসেবে যে বীজ ও সার দেওয়া হয়েছে, সেটা পুরোপুরি সঠিকভাবে বিতরণ করা হয়নি। প্রকৃত চাষিদের অনেকে পায়নি এই বীজ ও সার। কিছু কিছু এলাকায় মুখ চিনে চিনে কৃষি প্রণোদনা বিতরণ করা হয়েছে।’

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় প্রায় ২৫ হাজার হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। শুরুতেই সরিষা খেতে পোকা দেখা দিলেও মাঠ পর্যায়ে সরিষা চাষিদের কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে যথাযথ পরামর্শ ও প্রত্যক্ষ কারিগরি সহযোগিতার কারণে সরিষা খেত অনেকটা রোগবালাইমুক্ত। যথাসময়ে সরকারি পর্যায় থেকে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে সরিষার বীজ ও অন্যান্য কৃষি উপকরণ বিতরণ করা হলেও মাঠ পর্যায়ে বেশকিছু জমি চাষের উপযোগী না হওয়ায় কিছু কৃষক ঠিক সময়ে সরিষা বপন করতে পারেননি। তবে উপজেলার কেঁড়াগাছি, সোনাবাড়িয়া, চন্দনপুর ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি সরিষা চাষ হয়েছে বলে কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আবদুর রহমান বলেন, ‘আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার সরিষার বাম্পার ফলন ও কৃষক বাড়তি মুনাফা পাবে বলে আশা করছি।’

এদিকে সরিষা মাঠে ও আশপাশ স্থানে মৌ-বাক্স রেখে সংগ্রহ করা হচ্ছে মধু। মাঠজুড়ে সরিষা ফুলের মণ্ডম ঘ্রাণ, মৌমাছির গুণ গুণ শব্দে ফুলের রেণু থেকে মধু সংগ্রহের দৃশ্য আরেক প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সৃষ্টি করেছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close