জবি প্রতিনিধি
পুরান ঢাকায় বিএনপি-ছাত্রলীগ সংঘর্ষ
ঢাকায় দলীয় গণ-সমাবেশ উপলক্ষে লিফলেট বিতরণ করার সময় বিএনপি নেতা প্রকৌশলী ইশরাক হোসেনের সমর্থকদের সঙ্গে ছাত্রলীগ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শাখার কর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে সাংবাদিকসহ উভয় পক্ষের কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় ছাত্রদলের দুজনকে আটক করেছে পুলিশ।
রবিবার (৪ ডিসেম্বর) দুপুরে ইশরাক তার সমর্থকদের নিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এলাকায় পৌঁছালে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। শাখা ছাত্রদলের পক্ষ থেকে আহতের সংখ্যা দাবি করা হয়েছে ২০-২৫ জন এবং শাখা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে ৭ জন আহত হয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪ জন গণমাধ্যমকর্মীও আহত হয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন শতাধিক বিএনপি ও ছাত্রদলের নেতাকর্মী সঙ্গে নিয়ে মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে এলে শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী হামলা করে। এ সময় ইশরাক হোসেনের সঙ্গে থাকা বিএনপি ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা তাদের ওপর পাল্টা চড়াও হয়। এরপর শাখা ছাত্রলীগের শতাধিক নেতাকর্মী এই ফটকের সামনে এসে সংঘর্ষে জড়ায়।
এদিকে ছাত্রদলের গুরুতর আহত মনোয়ার নামের একজনকে পুলিশ আটক করে সূত্রাপুর থানায় এবং আরেকজনকে কোতোয়ালি থানায় নিয়ে যায়। ছাত্রলীগের গুরুতর আহত দুজনকে চিকিৎসার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাম্বুলেন্সে পার্শ্ববর্তী একটি বেসরকারি হাসপাতালে পাঠানো হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) হাসান মাতব্বর জানান, ‘বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে এসে সরকারবিরোধী স্লোগান দিতে থাকলে ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মী তাদের বাধা দেয়। এ সময় ইশরাকের নেতৃত্বে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা ছাত্রলীগকর্মীদের ওপর হামলা করলে ক্যাম্পাসের ভেতর থেকে শতাধিক ছাত্রলীগ কর্মী এসে হামলা চালালে ইশরাকসহ ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পালিয়ে যায়। ছাত্রদলের দুজনকে আটক করে একজনকে সূত্রাপুর ও আরেকজনকে কোতোয়ালি থানায় নিয়ে যায় পুরিশ।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতির সভাপতি মহিউদ্দিন রিফাত বলেন, ‘আমাদের চারজন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আহত হয়েছেন। তারা হলেন সমকালের প্রতিবেদক ইমরান হোসাইন, ঢাকা পোস্টের প্র্রতিবেদক মাহতাব লিমন, ভোরের কাগজের প্রতিবেদক রকি আহমেদ এবং নয়া শতাব্দীর প্রতিবেদক আবুতোহা। আহতরা সবাই সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।’
শাখা ছাত্রদলের সভপতি আসাদুজ্জামান আসলাম বলেন, ‘ইশরাক ভাই বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পৌঁছালে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা আমাদের ওপর হামলা করে। এতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলসহ বিভিন্ন ইউনিটের ২০-২৫ জন আহত হয়েছে। তারা মিটফোর্ডসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে। আমরা জগন্নাথ ছাত্রদল এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।’
এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম আকতার হোসাইন বলেন, ‘বিএনপি ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা ক্যাম্পাসের সামনে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দিলে আমাদের কয়েকজন বাধা দিলে তাদের ওপর হামলা করে ইশরাকের লোকজন, পরে আমাদের বেশ কয়েকজন পাল্টা আক্রমণ করে তাদের প্রতিহত করেছে। এ ঘটনায় আমাদের সাতজন নেতাকর্মী আহত হন।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মোস্তফা কামাল বলেন, ‘ক্যাম্পাসের পরিবেশ এখন শান্ত আছে। প্রক্টরিয়াল বডি সতর্ক অবস্থানে আছে। কতজন আহত হয়েছেন, কোন পক্ষের কতজন আমাকে সে ব্যাপারে কিছু জানানো হয়নি।’
"