শংকর চৌধুরী, খাগড়াছড়ি

  ০৩ ডিসেম্বর, ২০২২

খাগড়াছড়িতে শান্তিচুক্তির রজতজয়ন্তী উদযাপন

খাগড়াছড়িতে বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে ঐতিহাসিক পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি (শান্তিচুক্তির) রজতজয়ন্তী উদযাপিত হয়েছে। এ উপলক্ষে বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। শুক্রবার (২ ডিসেম্বর) সকালে পার্বত্য জেলা পরিষদ চত্বরে শান্তির প্রতীক পায়রা এবং রংবেরঙের বেলুন উড়িয়ে শান্তিচুক্তির রজতজয়ন্তীর অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন করা হয়। এরপর একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি শহরের শাপলা চত্বর ঘুরে টাউন হলে এসে শেষ হয়। সেখানে আয়োজিত আলোচনা সভায় সবাই মিলিত হয়।

টাউন হল চত্বরে স্থাপিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করার পর চুক্তির রজতজয়ন্তী উপলক্ষে ২৫ পাউন্ডের একটি কেক কাটা হয়।

খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মংসুইপ্রু চৌধুরী অপুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন ভারত প্রত্যাগত উপজাতীয় শরণার্থী প্রত্যাবাসন ও পুনর্বাসন এবং অভ্যন্তরীণ উদ্বাস্তু নির্দিষ্টকরণ ও পুনর্বাসন সম্পর্কিত টাস্কফোর্স চেয়ারম্যান (প্রতিমন্ত্রী পদণ্ডমর্যাদা সম্পন্ন) কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি। পরিষদের জনসংযোগ কর্মকর্তা চিংলা মং চৌধুরীর সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন খাগড়াছড়ির রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম পিএসসি, ডিজিএফআই কমান্ডার মোহাম্মদ ওয়াদুদ উল্ল্যা চৌধুরী পিএসসি, বিজিবি সেক্টর কমান্ডার কর্নেল মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন, এএসইউ কমান্ডার কর্নেল চৌধুরী মোহাম্মদ সামসুল আলম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক গোলাম মোহাম্মদ বাতেন, পুলিশ সুপার মো. নাইমুল হক, খাগড়াছড়ি সেনাসদর জোন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন, পৌরসভার মেয়র নির্মলেন্দু চৌধুরী, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মো. শানে আলম প্রমুখ।

শান্তি চুক্তির রজতজয়ন্তী উপলক্ষে চিত্রাঙ্কন ও রচনা প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ, শিশু সদন, এতিমখানা, অনাথ আশ্রমে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন ও বিকাল ৩টায় শান্তিচুক্তি সম্পাদিত সেই ঐতিহাসিক খাগড়াছড়ি স্টেডিয়ামে সম্প্রীতি কনসার্ট, সন্ধায় মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্বালন এবং আতশবাজি ও ফানুস উড়ানো হয়।

এছাড়াও শহরজুড়ে মাইকিংসহ বিভিন্ন স্থানে অসংখ্যক ব্যানার, ফেস্টুন ও আলোকসজ্জা, জেলাজুড়ে সর্বোচ্চ নিরাপত্তাব্যবস্থা, নিজেদের ঐতিহ্যবাহী পোশাকে বর্ণাঢ্য র‌্যালিতে স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ এবং টাউন হল চত্বরে মনোমুগ্ধকর ডিসপ্লে পরিবেশনা ছিল চোখে পড়ার মতো।

উল্লেখ্য আজ থেকে ২৫ বছর আগে পার্বত্য চট্টগ্রামের দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে চলা সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতির অবসানের জন্য তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার এবং জনসংহতি সমিতির মধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। যা শান্তিচুক্তি নামে পরিচিতি পায়। ১৯৯৬ সালে সুদীর্ঘ ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ তথা শেখ হাসিনা সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর এটিকে রাজনৈতিক সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করেন এবং পার্বত্যাঞ্চলের সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে শক্তিশালী পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রথম মেয়াদকালে ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর সরকার এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (পিসিজেএসএস) মধ্যে কোনো তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতা ছাড়াই এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close