কালীগঞ্জ (গাজীপুর) প্রতিনিধি

  ০১ ডিসেম্বর, ২০২২

কালীগঞ্জে গণহত্যা দিবস আজ

আজ ১ ডিসেম্বর। স্বাধীনতাযুদ্ধ চলাকালীন এই দিনে গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলায় বাহাদুরসাদী ইউনিয়নের খলাপাড়া গ্রামে অবস্থিত ন্যাশনাল জুট মিলের ভেতর কর্মকর্তা-কর্মচারী ও মুক্তিযোদ্ধা সহযোগীসহ ১০৬ বাঙালিকে লাইনে দাঁড় করিয়ে পাক হানাদার বাহিনী ব্রাশফায়ার করে গণহত্যা চালায়। আর সেই থেকে প্রতি বছর ১ ডিসেম্বর এলে শহীদদের স্মরণে গণহত্যা দিবস পালিত হয়। দিবসটি উপলক্ষে আজ বিকালে শহীদদের গণকবরে উপজেলা প্রশাসন পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন ও শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করা হবে।

কালীগঞ্জ উপজেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো. মোস্তফা মিয়া বলেন, ১৯৭১ সালের ১ ডিসেম্বর কালীগঞ্জ ন্যাশনাল জুট মিলের শ্রমিকরা সকালের নাস্তা খেতে বসার মুহূর্তে পশ্চিম পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী পাশের ঘোড়াশাল ক্যাম্প থেকে নদী পার হয়ে মিলের ভেতর প্রবেশ করে মুক্তিযোদ্ধাদের খুঁজতে থাকে। ওই দিন সকাল থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত দাঁড় করিয়ে হানাদার বাহিনী গুলি করে নির্মম গণহত্যা চালায়।

তিনি আরো বলেন, পাক বাহিনী গণহত্যা চালিয়ে দক্ষিণ দিকের দেয়াল ভেঙে মিল ত্যাগ করে। ৩/৪ দিন বাঙালিদের মৃতদেহ মিলের সুপারি বাগানে পড়ে থাকে। পাক বাহিনীর ভয়ে এলাকার কেউ মিলের ভেতরের মরদেহগুলো উদ্ধার করতে এগিয়ে আসতে সাহস পায়নি। ফলে মরদেহগুলো শেয়াল-শকুনের খাদ্যে পরিণত হয়। দেশ স্বাধীন হলে এলাকাবাসী মিলের ভেতর গিয়ে ১০৬ জনের মৃতদেহ বিকৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে। পরে বিকৃত ওই মৃতদেহ ন্যাশনাল জুট মিলের দক্ষিণ পাশে গণকবরে সমাহিত করেন।

জানা গেছে, মিল কর্তৃপক্ষ গণহত্যার শিকার শহীদদের স্মৃতি রক্ষার্থে ‘শহীদের স্মরণে ১৯৭১’ নামে একটি শহীদ মিনার নির্মাণ করেন। শহীদদের গণকবরের পাশে একটি পাকা মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে। প্রতি বছর ১ ডিসেম্বর এলে ১০৬ জন শহীদের গণকবরে উপজেলা প্রশাসন, বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করে এবং শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করা হয়।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close