মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

  ২৯ নভেম্বর, ২০২২

হাওরে অতিথি পাখি, তৎপর শিকারিরা

মৌলভীবাজারের হাকালুকি, কাউয়াদীঘি ও হাইল হাওরের বাইক্কা বিলসহ ছোট ছোট হাওর-বাঁওড়, বিল-ঝিলে পরিযায়ী পাখি আসা শুরু হয়েছে। হাওরে ঝাঁকে ঝাঁকে আসছে অতিথি পাখি। সাইবেরিয়াসহ ইউরেশিয়া অঞ্চলের বিভিন্ন দেশের তাপমাত্রা অতিরিক্ত কমে যাওয়ায় উষ্ণতার খোঁজে হাজার হাজার মাইল পথ পাড়ি দিয়ে এসব অতিথি পাখি ছুটে আসছে বাংলাদেশে। এসব পাখির বেশিরভাগ নামছে হাকালুকি হাইল হাওরসহ সিলেটের হাওর-বাঁওড়ে। এদিকে বসে নেই পেশাদার পাখি শিকারি চক্র। শীতের শুরু থেকেই তারা তৎপর হয়ে উঠে। ফাঁদ পেতে ও বিষটোপে প্রতিদিন অতিথি পাখি শিকার করছে চক্রটি। অতিথি পাখি রক্ষায় নেই তেমন কোনো পদক্ষেপ।

জানা গেছে, বিভিন্ন জাতের হাঁসসহ পরিযায়ী পাখির কাকলিতে সরব হয়ে উঠেছে হাওরের বুক। সারা দিন হাওর-বিলে পাখির ওড়াউড়ি আর খুনশুটি চলে। আর এই সময়ই তৎপর হয়ে ওঠেন শৌখিন ও পেশাদার পাখি শিকারিরা। শুরু হয় হাওরসংলগ্ন জলাভূমিতে জালের ফাঁদ পেতে ও বিষটোপ দিয়ে পাখি শিকার। এরই মধ্যে হাইল হাওরের বাইক্কা বিল ও বাইক্কা বিলসংলগ্ন এলাকা, কাউয়াদীঘি ও হাকালুকি হাওরের বিভিন্ন পাশে পাখি শিকারিরা সক্রিয় হয়ে উঠেছেন।

পাখি বিশেষজ্ঞ ইনাম আল হক বলেন, শীত মৌসুমে পাখিদের কলরবে মুখরিত থাকে হাওর এলাকা। এ সময় বালিহাঁস, পাতিহাঁস, ল্যাঞ্জা হাঁস, কানাবগি, লালবগি, শামুকখুরসহ দেশি-বিদেশি পাখি বিচরণ করে। এ সুযোগে পাখি শিকারিরা বিষটোপ ও বিভিন্ন ফাঁদ পেতে পাখি শিকার করে। পাখি শিকারিদের থামানো না গেলে দিন দিন ঐতিহ্যবাহী পাখিগুলো হারিয়ে যাবে। এতে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হবে।

সিলেট বন বিভাগের জুড়ী উপজেলার সহকারী বন সংরক্ষক আবুল কালাম আজাদ বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শনিবার (১৯ নভেম্বর) সকালে হাকালুকি হাওরে গিয়ে এলাকাবাসীর সহায়তায় পাখি শিকারিদের আটক করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে পাখি উদ্ধার করে অবমুক্ত করা হয়েছে। আহত ৩টি পাখিকে চিকিৎসার জন্য প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে। পরে এলাকাবাসীর উপস্থিতিতে আর পাখি শিকার করবেন না মর্মে মুচলেকা নিয়ে শিকারিদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

সহকারী কমিশনার (ভূমি) রতন কুমার অধিকারী বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে কাউকে পাইনি। পরে এলাকাবাসীর উপস্থিতে শিকার হওয়া পাখিগুলো অবমুক্ত করা হয়।

বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, শীতে পাখি শিকারিদের উৎপাত বেড়ে যায়। পাখি শিকারিদের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান চালিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close