খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধি

  ২৫ নভেম্বর, ২০২২

সাদা সোনা চাষে ব্যস্ত খানসামার কৃষক

দিনাজপুরের খানসামায় আগাম রসুন রোপণে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন চাষিরা। আবহাওয়া ভালো থাকলে বাম্পার ফলন হবে বলে মনে করছেন কৃষি বিভাগ। একই সঙ্গে বর্তমান বাজারদর বজায় থাকলে লাভের আশা করছেন চাষিরা। রসুন তাদের কাছে সাদা সোনার মতো।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্র জানায়, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ৩১৫০ হেক্টর জমিতে রসুন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। গত বছর উৎপাদিত রসুনের ভালো দাম না পেলেও এ বছর ভালো ফলনের আশায় কৃষকরা রসুন চাষে ঝুঁকছেন। সেচ ও সারের পর্যাপ্ত সরবরাহ এবং অনুকূল আবহাওয়া বিরাজ করায় এবার উপজেলায় রসুনের ভালো ফলনের আশা করছে কৃষি বিভাগ।

কৃষকরা জানান, ভালো লাভের আশায় অনেকে জমি বর্গা নিয়ে রসুন চাষ করেছেন। গত দুই বছর আগে যেখানে রসুন বাজারে প্রতি মণের দাম ৪ হাজার থেকে ৪ হাজার ৫০০ টাকা ছিল। সেখানে গত বছর ৪৫০০- ৫০০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।

উপজেলার খামারপাড়া ইউনিয়নের কায়েমপুর গ্রামের রাশেদুল ইসলাম জানান, প্রতি বিঘায় উৎপাদন খরচ হয় ৫০ হাজার টাকার মতো। রসুন তোলার মৌসুমে গাছসহ দাম থাকে প্রতি মণ ৮০০ টাকা, কখনো কখনো এক হাজার টাকা। আবহাওয়া ভালো থাকলে আশা করছি এবার এক বিঘায় ৭০ মণ ফলন হবে। খুব ভালো ফলন হলে ৮০ মণও হতে পারে। হাজার টাকা দাম থাকলে লাভ হবে না। ৮০০ টাকা মণ থাকলে লোকসান গুনতে হবে। কারণ বর্গা জমির ফসলের অর্ধেক যায় মালিকের ঘরে। ১২০০ টাকা মণ দর আর বিঘায় ৮০ মণ ফলন হলে লাভের মুখ দেখা সম্ভব।

জানা গেছে, গাছসহ রসুনের এক ধরনের দাম থাকে। আর গাছ ছেটে পরিচ্ছন্ন করে, বাছাই প্রক্রিয়া শেষে বাজারজাত করার উপযোগী করলে রসুনের ওজন অর্ধেকে নেমে আসে। তখন দামও বেড়ে যায় দ্বিগুণেরও বেশি। এরপর কয়েক ধাপ পার হয়ে ভোক্তার কাছে পৌঁছাতে সেই দাম আরো দ্বিগুণ হয়ে যায়।

আগ্রা গ্রামের কৃষক আমিন জানান, এক বিঘা (৫০ শতক) জমিতে রসুন লাগাতে বীজ ১২ হাজার, জমি তৈরিতে ৩ হাজার ২০০, শ্রমিক ৪ হাজার ৫০০, সার ১০ হাজার, নিড়ানি ২ হাজার থেকে ৪ হাজার টাকা এবং উত্তোলন ৩ হাজার টাকা লাগে। সব মিলে ৪০ হাজার টাকার মতো খরচ হয়।

উপজেলার খামার গ্রামের রসুনচাষি ইয়াকুব আলী জানান, রসুনের দাম না পেলেও এ বছর অনেক আশা নিয়ে এক একর জমিতে রসুন লাগিয়েছি। এ বছর রসুনের ভালো ফলনের স্বপ্ন দেখছি।

উপজেলার সবচেয়ে বেশি রোপণ হয় গুলিয়ারা গ্রামে। এ ছাড়া আগ্রা, সাহাপাড়া, খলিল হাজিপাড়া, রামনগর, চাকিনিয়া, দেলুগাঁও, মারগাঁও, পাঠানপাড়াসহ উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে। এসব অঞ্চলের চাষিরা জানান, গত বছরে ভালো দাম পাওয়ায় এ বছর বেশি করে রসুন আবাদের দিকে ঝুঁকছেন তারা।

কৃষি কর্মকর্তা বাসুদেব জানান, বর্তমানে উপজেলার কৃষকদের কাছে রসুন প্রধান অর্থকরী ফসল হয়ে উঠেছে। এ ছাড়া এখন পর্যন্ত আবহাওয়া ভালো। তাই ভালো ফলন হবে বলে আশা করছি। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ৩৫০ হেক্টর জমিতে রসুন রোপণ করা হয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close