নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২৫ নভেম্বর, ২০২২

চামড়া খাতে ৫০ লাখ কর্মের সম্ভাবনা

টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি) লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ২০৩০ সালের মধ্যে সরকার ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রপ্তানি পণ্য হিসেবে ভবিষ্যতে এই খাতে প্রায় ৫০ লাখ শ্রমিকের কর্মসংস্থানের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে।

সম্প্রতি ঢাকার একটি হোটেলে চামড়াশিল্পে সুষ্ঠু শিল্প সম্পর্ক উন্নয়নে ও শ্রম অধিকার সম্পর্কিত একটি জাতীয় সেমিনারে সলিডারিটি সেন্টার বাংলাদেশ অফিসের প্রোগ্রাম অফিসার মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম মূল প্রবন্ধে এ তথ্য জানান।

চামড়াশিল্পে সুষ্ঠু শিল্প সম্পর্ক উন্নয়নে পাঁচ দফা সুপারিশ পেশ করে মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, শ্রমিকদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা ও সোশ্যাল কমপ্লায়েন্স বাস্তবায়নে মালিক পক্ষ, শ্রমিক পক্ষ ও সংশ্লিষ্ট সবার অংশগ্রহণে একটি পূর্ণাঙ্গ কৌশলপত্র প্রণয়ন করা দরকার। এছাড়া কল-কারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর থেকে শ্রমিক মালিক উভয়েই যেন দ্রুত সহযোগিতা পান; সে লক্ষ্যে সরকারের নীতিনির্ধারক মহল থেকে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া, চামড়াশিল্প এলাকায় একটি স্থায়ী স্বাস্থ্যকেন্দ্র বা হাসপাতাল স্থাপন করা ও চামড়াশিল্প এলাকায় শ্রমিকদের জন্য আবাসন সুবিধার ব্যবস্থা করতে হবে। এর পাশাপাশি কারখানাভিত্তিক কার্যকর নিরাপত্তা কমিটি গঠন করে সংশ্লিষ্ট সবার স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা পরিস্থিতি উন্নয়নে কাজ করা ও পরিবেশ দূষণ প্রশ্নে শিল্প বন্ধের যে আলোচনা চলছে, সরকারকে তা পুনর্বিবেচনা করতে হবে। তা ছাড়া শিল্প ও শ্রমিক রক্ষায় শ্রমিক-মালিক ও সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনাক্রমে যৌক্তিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

সলিডারিটি সেন্টার বাংলাদেশ অফিসের কান্ট্রি প্রোগ্রাম ডিরেক্টর এ কে এম নাসিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সেমিনারে বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজির পরিচালক ড. মিজানুর রহমান, বাংলাদেশ লেবার ফাউন্ডেশনের (বিএলএফ) মহাসচিব জেড এম কামরুল আনাম, এশিয়া ফাউন্ডেশনের পরিচালক মোহাম্মদ সাদাত সদরুদ্দিন শিবলী, বাংলাদেশ ফিনিশড লেদার, লেদার গুডস, অ্যান্ড ফুটওয়্যার এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন আহমেদ মাহিন এবং বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদ, ট্যানারি ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক।

ফিনিশড লেদার, লেদার গুডস, অ্যান্ড ফুটওয়্যার এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন আহমেদ মাহিন বলেন, সরকারের নীতি সহায়তা পেলে চামড়াশিল্প দেশের সবচেয়ে বড় কর্মসংস্থানের খাত হতে পারে। এজন্য সরকারকে শিল্প উদ্যোক্তাদের বর্তমান সমস্যা দূরীকরণে সহায়তা করতে হবে। শ্রমিকের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে হলে এবং চামড়াশিল্পকে রক্ষা করতে হলে, প্রথমে উদ্যোক্তাদের বাঁচাতে হবে।

উদ্যোক্তা-ব্যবসায়ীদের দেশের অর্থনীতির চালিকাশক্তি উল্লেখ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজির পরিচালক ড. মিজানুর রহমান বলেন, তাদের অবশ্যই শ্রমিক অধিকারসহ সব নিয়মকানুন মেনে ব্যবসা করতে হবে এবং শিল্পের বিকাশ নিশ্চিত করার জন্য সরকারের সঙ্গে দর কষাকষি করার ক্ষেত্রে তৎপর হতে হবে।

বিএলএফের মহাসচিব জেড এম কামরুল আনাম বলেন, চামড়াশিল্প ও শ্রমিক রক্ষায় শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে যে অ্যাকশন প্ল্যান বা কর্মপরিকল্পনা গৃহীত হয়েছে, তা বাস্তবায়নে সরকার, মালিকসহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে আন্তরিকভাবে কাজ করতে হবে।

মালিক ও শ্রমিক পক্ষের মধ্যে ত্রৈমাসিক বা ষান্মাসিক ভিত্তিতে নিয়মিত বৈঠক আয়োজন করে সমস্যা মোকাবিলায় কাজ করতে হবে বলে মন্তব্য করেন এশিয়া ফাউন্ডেশনের পরিচালক মোহাম্মদ সাদাত সদরুদ্দিন শিবলী।

এ সময় বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদ বলেন, মালিকদের উচিত অবশ্যই শ্রমিকদের অধিকার নিশ্চিত করা। ফ্যাক্টরিতে সোশ্যাল কম্পলায়েন্স নিশ্চিত করতে চাইলে এর কোনো বিকল্প নেই।

চামড়া বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রপ্তানি খাত জানিয়ে সলিডারিটি সেন্টার-বাংলাদেশ অফিসের কান্ট্রি প্রোগ্রাম ডিরেক্টর এ কে এম নাসিম বলেন, বাংলাদেশের জন্য অতীব সম্ভাবনাময় পণ্য হচ্ছে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য। বর্তমানে বাংলাদেশ সরকার এই খাতকে অগ্রাধিকার খাত হিসেবে বিবেচনা করছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close