কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি

  ০৫ অক্টোবর, ২০২২

বিটল পোকার আক্রমণ

কলা রক্ষার ব্যাগিং পদ্ধতি

কলার মোচা বের হওয়ার পর বিটল পোকার আক্রমণ হয়ে থাকে। যার ফলে কলায় দাগ পড়ে যায়। আর দাগযুক্ত কলার বাজারমূল্য কমে যায়। বিটল পোকা মোচা বের হওয়ার পর কলার ওপরে হাঁটাহাঁটি করে ও রস চুষে খায়। ফলে কলায় বসন্ত রোগের দাগের মতো দেখা যায়। কলা বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দাগগুলো আরো স্পষ্ট হয়। অধিকাংশ কলা ছোট হয় এবং ফলন কমে যায়। এ অবস্থা থেকে রেহাই পেতে কৃষক কলায় অতিমাত্রায় বিষ প্রয়োগ করেন। এতে স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হয় এবং পুষ্টি ও গুণাগুণ বজায় থাকে না। তাই কলার পুষ্টি গুণাগুণ বজায় রাখতে ও নিরাপদ কলা উৎপাদনের জন্য কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ার চাষিরা ব্যাগিং পদ্ধতি গ্রহণ করেছেন। উপজেলার আঙ্গিয়াদী গ্রামের কৃষক মো. বিল্লাল হোসেনের জমিতে ন্যাশনাল এগ্রিকালচারাল টেকনোলজি প্রোগ্রাম ফেজ ও প্রজেক্ট (এনএটিপি-২) প্রকল্পের আওতায় কলায় ব্যাগিং প্রদর্শনী স্থাপন করা হয়। যার ফলে সেই বাগানের কলায় বিটল পোকার আক্রমণ পরিলক্ষিত হয়নি।

কৃষক মো. বিল্লাল হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আঙ্গিয়াদী টানপাড়া সিআইজির সদস্য হিসেবে নিরাপদ কলা উৎপাদনের জন্য কলায় ব্যাগিং প্রদর্শনী পাই। প্রদর্শনী হতে প্রাপ্ত ছিদ্রযুক্ত পলিথিন ব্যবহার করার ফলে আমার বাগানে একটি কলার কাদিও বিটল পোকায় আক্রান্ত হয়নি এবং কোনো ধরনের বিষ প্রয়োগ করার প্রয়োজন হয়নি। যার ফলে কলার বাজারমূল্য পাচ্ছি দ্বিগুণ।’

এ বিষয়ে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা হামিমুল হক সোহাগ বলেন, বিটল পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে কলায় ব্যাগিং একটি কার্যকর প্রযুক্তি। এই প্রযুক্তি দেখে ইতোমধ্যে অনেক কৃষক আকৃষ্ট হয়েছেন এবং বেশ কয়েকজন নন সিআইজি কৃষক এই প্রযুক্তি ব্যবহার করছেন।

ব্যাগিং পদ্ধতিতে কীটনাশক ব্যবহার করতে হয় না বিধায় কৃষকদের আর্থিক সাশ্রয় হচ্ছে এবং কলার বাজারমূল্য বেশি পাচ্ছেন। অপরদিকে নিরাপদ কলা বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। তাই আশা করা যায় ধীরে ধীরে সব কলা চাষি এ প্রযুক্তি ব্যবহারের আওতায় চলে আসবেন।

কলা আমাদের দেশে বেশ জনপ্রিয় একটি ফল। আমাদের দেশে সারা বছরই কলা পাওয়া যায়। খাবার জন্য কাঁচা কলা এবং পাকা কলা খুবই উপকারী। পুষ্টিকর ফল হিসেবে কলার চাহিদা অনেক বেশি। কলার অনেকগুলো জাত রয়েছে। তার মধ্যে অমৃত সাগর, সবরী, চাঁপা, মেহের সাগর, বিচি কলা, কাঁচ কলার জাতগুলো কৃষকদের কাছে বেশ জনপ্রিয়। এ দেশে বেশির ভাগ বাড়ির আশপাশে পতিত জায়গায় ২-৪টি কলাগাছ দেখতে পাওয়া যায়। যা পারিবারিক চাহিদা মিটানোর জন্য রোপণ করা হয়।

চিকিৎসকদের মতে, প্রতিদিন যদি একটি করে কলা খাওয়া যায়, তা হলে শরীরের সব ধরনের ভিটামিনের অভাব দূর হয়। সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর দুটি কলা খেয়ে এক গ্লাস গরম দুধ খাওয়া যায়, তা হলে শরীরে কোনো কান্তি থাকে না। শক্তি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এনার্জিও বাড়ে। অপরদিকে খাওয়ার পর যদি প্রতিদিন একটি কলা খাওয়া যায়, তা হলে খাবার তাড়াতাড়ি হজম হয়। তাছাড়া কলার ছোকলা হাঁপানি ও কাশি কমায়।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close