সুমন ইসলাম, মুন্সীগঞ্জ

  ০১ অক্টোবর, ২০২২

বানরের রাজত্ব

মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার খাহ্রা গ্রামে ১০০ বছর ধরে বসবাস ও রাজত্ব করে আসছে বানর। সুনিবিড় সবুজে ঘেরা খাহ্রা গ্রামে দিনদিন বানরের আধিপত্য বেড়ে চলেছে। স্থানীয়রা জানান, বর্তমানে এই গ্রামে প্রায় দুই হাজার বানরের বসতি। এ গ্রামের শিশুদের সঙ্গে সখ্য ও খুনসুটি মিলে প্রগাঢ় বন্ধুত্ব বানরের। বিদ্যালয়ে যাওয়ার পথে বানরের আঁচড় খাওয়া শিশুর সংখ্যাও এ গ্রামে একেবারে কম নয়।

শিশুদের হাত থেকে খাবারের প্যাকেট ছিনিয়ে নিয়ে যায় বানরের দল। তবু এই গ্রামের শিশুদের চোখে প্রকাশ পায় বানরের প্রতি মমতাণ্ডভালোবাসা। অত্যাচার, নির্যাতনসহ বানরের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ খাহ্রা গ্রামের প্রবীণদের। তবু বানরকে প্রকৃতির অংশ মনে করেন তারা।

খাবারের অভাবে অনেক সময় উচ্ছৃঙ্খল হয়ে ওঠে বানরগুলো। তবে মানুষের সঙ্গে তাদের কোনো বৈরিতা নেই বলে জানালেন খাহ্রা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আসলাম মিয়া। তিনি বলেন, এ গ্রামে কত দিন ধরে বানরগুলো বসবাস করছে তা বলা কঠিন। তবে দিনদিন বানরের বংশবিস্তার হচ্ছে। খাদ্যের অভাবের কারণে স্কুলের শিক্ষার্থীদের হাতের খাবার নিয়ে যায়। শিক্ষার্থীদের ওপর আক্রমণ ও কামড়ের ঘটনা ঘটছে প্রতিনিয়ত।

এদিকে স্থানীয় আলিমুনেচ্ছা বলেন, বানরদের কিছু বলার সাহস নেই গ্রামবাসীর। কারণ বানররা দলবেঁধে আক্রমণ করে, রান্নাঘরে ঢুকে খাবার নিয়ে যায়। ভয়ে ও আতঙ্কে থাকি কখন বানরগুলো কামড় দেয়। জহির আহমেদ বলেন, আমাকে রাস্তায় ফেলে বানররা কামড়িয়েছে। তারা খাবার না পেলেই আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে। বনবিভাগের উচিত বানরগুলোকে খাওয়ার ব্যবস্থা করা এবং এ গ্রাম থেকে বানরদের অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া।

মুন্সীগঞ্জ বনবিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু তাহের বলেন, বন্যপ্রাণীর যে এলাকায় আদি বসতি তারা সেখানেই ভালো থাকে। হঠাৎ করে কোথাও তাদের নিয়ে গেলে সেখানকার পরিবেশের সঙ্গে তারা খাপ খাওয়াতে পারবে না। তিনি আরো বলেন, আমরা বনবিভাগ ও সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কাছে চিঠি লিখেছি এখানকার বানরদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করতে। এখনো ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কিছু করেনি, তবে আমি আবারও তাদের বলব।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close