নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২২

জমি পেলেই বাধা কাটবে স্টেশনের

জমি অধিগ্রহণ শেষ না হলেও রাজধানীর শেওড়াপাড়া ও কাজীপাড়া মেট্রোরেল স্টেশনে স্বাচ্ছন্দ্যে উঠাণ্ডনামার প্রশস্ত প্ল্যাটফরম হবে ডিসেম্বরের আগেই। কর্তৃপক্ষ বলছে, যেহেতু জমি অধিগ্রহণের প্রক্রিয়ায় একটু দেরি হচ্ছে, তাই আপাতত ফুটপাতের আগের জায়গাতেই নির্মাণ কাজ করা হচ্ছে। জমি বুঝে পেলে এ দুটি স্টেশনে আর কোনো বাধা থাকবে না।

সরেজমিন দেখা গেছে, লাল দাগ দিয়ে জমির সীমানা নির্ধারণ করা হয়েছে। যদিও জটিলতা এখনো কাটেনি। তবে সমস্যা সমাধানের স্বল্পমেয়াদি সমাধান খোঁজার চেষ্টা করা হচ্ছে। মেট্রোরেলের শেওড়াপাড়া ও কাজীপাড়া স্টেশনে উঠাণ্ডনামার জায়গা নিয়ে সমস্যা নতুন নয়। এরই মধ্যে স্থায়ী সমাধান হিসেবে দুই পাশের বেশকিছু জমি অধিগ্রহণের কাজ প্রক্রিয়াধীন। তবে এ প্রক্রিয়া শেষ হতে লাগবে আরো কিছু সময়। এদিকে কড়া নাড়ছে উদ্বোধনের সময়। তাইতো আপাতত চলছে বিকল্প পথ তৈরির কাজ। আগের ফুটপাতের সঙ্গে ড্রেনের ওপর স্লাব বসিয়ে পথ প্রশস্ত করা হচ্ছে।

মেট্রোরেল প্রকল্পের ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি) লাইন-৬ কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান বলেন, কাজীপাড়া ও শেওড়াপাড়ায় এখন পর্যন্ত যে জমি রয়েছে, তাতে নতুন করে ড্রেন নির্মাণ করা হচ্ছে। তার ওপর স্লাব বসিয়ে নতুন করে ফুটপাত করে দেওয়া হচ্ছে। এখন ফুটপাত পুরো তিন মিটার থাকবে না ঠিকই; কিন্তু জনগণের মুভমেন্ট করতেও অসুবিধা হবে না।

এ দুটি বাদে বাকি সাত স্টেশন এখন পুরোপরি তৈরি। প্রতিটিতেই লিফট, সিঁড়ি, কিংবা চলন্ত সিঁড়ির জন্য রয়েছে উঠাণ্ডনামার পর্যাপ্ত জায়গা। আর এ অংশে জমি বুঝে নিতে আর বেগ পেতে হবে না বলছে কর্তৃপক্ষ।

এদিকে কেবল এ জায়গাটায় সড়কেও এখন পর্যন্ত শেষ হয়নি ভোগান্তি। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী আগামী ডিসেম্বর বিজয়ের মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মেট্রোরেলের উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত অংশের উদ্বোধন করবেন। এই অংশের ৯৪ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। এখন বাকি কাজ ও উদ্বোধনের জন্য প্রস্তুতিমূলক কাজ সেরে নেওয়া হচ্ছে।

এদিকে, মেট্রোরেলের আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশের নির্মাণকাজ প্রসঙ্গে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, পরের বছর ডিসেম্বরের মধ্যে অর্থাৎ সরকারের এই মেয়াদেই কাজ শেষ করতে পারব বলে আশা রাখছি।

শিক্ষার্থীদের জন্য কোনো ছাড় থাকবে কি না জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি যদি হয় তাহলে পরে জানানো হবে।

তবে শিক্ষার্থীরা উত্তরায় মেট্রোরেলের প্রদর্শনী ও তথ্য কেন্দ্র বিনামূল্যে ঘুরে দেখার সুযোগ পাবে জানিয়ে কাদের বলেন, মেট্রোরেলের ব্যবস্থাপনা ও টিকিট কাটার পদ্ধতিসহ যাবতীয় তথ্য জানার ব্যবস্থা রয়েছে প্রদর্শনী কেন্দ্রে। ভাড়ায় বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্যও ছাড়ের ব্যবস্থা থাকবে। এ ছাড়া সাপ্তাহিক, মাসিক ও পারিবারিক কার্ড নিলেও ভাড়ায় সুবিধা পাওয়া যাবে।

মেট্রোরেলের কাজ শুরুর আগে উত্তরা ডিপো এলাকায় প্রথম পরিদর্শনের স্মৃতি অনুষ্ঠানে তুলে ধরে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, আমরা যখন প্রথম এসেছিলাম তখন দাঁড়ানোর মতো জায়গা ছিল না। ওইদিন হঠাৎ ঝড় উঠল, তারপর শুরু হলো বৃষ্টি। ওই ঝড়-বৃষ্টির মধ্যেই আমাদের অনুষ্ঠান করতে হয়েছিল সেদিন। এখন এটা একটা মেট্রো নগরীতে রূপ নিয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, রাজধানীতে প্রায় দুই কোটি মানুষের চলাচল সুবিধায় এসব যোগাযোগ কঠামো গড়ে তোলা হবে। তরুণ প্রজন্মের স্বপ্ন সরকার সত্যি করবে।

ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড আগেই জানিয়েছিল, প্রতিদিন ভোর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত মেট্রোরেলে যাত্রী পরিবহনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

মেট্রোরেল নির্মাণ ও পরিচালনার দায়িত্বে থাকা এ কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক জানিয়েছিলেন, শুরুতে প্রতি ১০ মিনিট পরপর ট্রেন ছাড়া হবে। সেজন্য ১০ সেট ট্রেন প্রস্তুত করা হয়েছে।

প্রতিটি সেটে মোট ৬টি বগি থাকছে। ঢাকার যাত্রীরা কিছুটা অভ্যস্ত হয়ে উঠলে এবং যাত্রী বেড়ে গেলে এক ট্রেনের সঙ্গে অন্য ট্রেনের বিরতি কমিয়ে আনা হবে। মেট্রোরেলের আওতায় চারটি স্টেশন প্লাজা এবং একটি গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গা থাকবে। এছাড়া টার্মিনাল স্টেশনগুলোয় লম্বা সময়ের জন্য গাড়ি রাখার ব্যবস্থা থাকছে। আগারগাঁও এবং উত্তরা থেকে বিভিন্ন রুটে মেট্রোরেলের যাত্রী পরিবহনের জন্য বিআরটিসির সঙ্গে একটি চুক্তিও করছে কর্তৃপক্ষ।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close