আলী আজীম, মোংলা (বাগেরহাট)

  ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২২

সুন্দরবনে জেলেদের দুর্দশা

তিন মাস আগে সুন্দরবনের পাস, পারমিট বন্ধ ঘোষণা করে দেয় বনবিভাগ। ১ সেপ্টেম্বরে আবারও সুন্দরবনের সব ধরনের পাস পারমিট ছেড়ে দেয় বনবিভাগ। কিন্তু জেলেদের দুর্দশা কাটেনি এখনো। মোংলা উপজেলার সুন্দরবনের কোলঘেঁষে গড়ে ওঠা চিলা ইউনিয়নে গিয়ে দেখা যায় দরিদ্র জেলেদের করুণ পরিস্থিতি।

এ বিষয় জেলেদের সফঙ্গ আলাপ করলে তারা বলেন, দীর্ঘ তিন মাস পর সুন্দরবনের সব ধরনের পাস পারমিট দিলেও আশানুরূপ মাছ, কাঁকড়া মিলছে না। কারণ জানতে চাইলে তারা জানান, সুন্দরবন যখন বন্ধ ছিল তখন অসাধু কিছু বন কর্মকর্তাকে উৎকোচ দিয়ে অবৈধভাবে প্রবেশ করে কিছুসংখ্যক অসাধু জেলে সুন্দরবনের ছোট, ছোট খালে অবৈধ ভেষাল জাল ও কীটনাশক দিয়ে মাছ শিকার করতেন। বর্তমানে পাস পারমিট দিলেও যেসব জালের পারমিট আছে, সে জালের ভেতরে লুকিয়ে অবৈধ জাল ও কীটনাশক নিয়ে যাচ্ছে সুন্দরবনে।

আমাদের দাবি, যারা এসব কাজে জড়িত, তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হোক। জেলেরা আরো বলেন, ‘সুন্দরবনে যাওয়ার জন্য মহাজন এবং মাছ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে দাদন নিয়ে মাছ ও কাঁকড়া ধরতে গিয়ে চাহিদামতো না হওয়ায় চরম বিপাকে পড়েছি আমরা।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জেলে বলেন, যে সময় পাস পারমিট বন্ধ ছিল, সেসময় স্টেশনের কিছু অসাধু কর্মকর্তা উৎকোচের বিনিময় অবৈধভাবে জেলেদের সুন্দরবনে ঠুকতে দিত।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সুন্দরবন পূর্ব বনবিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের চাঁদপাই স্টেশন কর্মকর্তা ওবায়দুর রহমান বলেন, ‘আমরা চরপাটার জালে ১ ইঞ্চির নিচে পাস দিচ্ছি না। এবার আমরা কড়াকড়ি আরোপ করেছি। আমরা যেটা চেক করছি, সেটার পাশে রং মেখে দিচ্ছি। আমরা সব নৌকাকেই চেক করছি। আমরা যখন পারমিট দেই; তখন জেলেরা চেকিং করার পর সুন্দরবনে প্রবেশ করে। সেই সঙ্গে আমাদের যেসব টহল ফাঁড়ি আছে, তারাও নিয়মিত চেকিংয়ের মাধ্যমে জেলেদের সুন্দরবনে প্রবেশ করতে দেয়।’

উৎকোচের বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, যারা ইতোপূর্বে সুন্দরবন নানা ধরনের অপকর্মে জড়িত ছিল, তারাই এ ধরনের অভিযোগ করছে। আগে কী করছে, না করছে, জানি না। কিন্তু এখন খোঁজ নিয়ে দেখেন পাবেন না।

উল্লেখ্য, গত দু-তিন দিন আগে কোনো ধরনের পাস পারমিট ছাড়া গোপনে সুন্দরবনে ঢুকে বনের উরুবুনিয়া খালের নলবুনিয়া এলাকায় বিষ দিয়ে মাছ মেরে ফেলে একদল দুর্বৃত্ত। এ ঘটনায় গত মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

কমিটির প্রধান করা হয়েছে চাঁদপাই স্টেশন কর্মকর্তা ওবায়দুর রহমানকে। অপর দুই সদস্য হলেন জোংড়া টহল ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন ও চাঁদপাই রেঞ্জ কার্যালয়ের ফরেস্টার মিজানুর রহমান।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close