মাসুদ রানা, বরিশাল

  ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২২

বরিশাল-ঢাকা নৌরুট

লঞ্চ মালিকদের ফের সিন্ডিকেট যাত্রীরা আবার জিম্মি

সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বরিশাল-ঢাকা নৌপথে বেসরকারি নৌযানগুলোর অতি মুনাফার রোটেশন প্রথা ফের পুনর্বহাল করা হয়েছে। একদিকে পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় যাত্রী কমে যাওয়া এবং জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির ফলে যাত্রী সংকটে ক্রমাগত লোকসানসহ অস্তিত্ব রক্ষায় নৌযান মালিকরা পুরোনো পদ্ধতিতে ফিরে গেছেন বলে জানা গেছে।

নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত শনিবার থেকে ঢাকা ও বরিশাল প্রান্ত থেকে প্রতিদিন তিনটি করে বেসরকারি যাত্রীবাহী নৌযান যাত্রী পরিবহনের সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হয়েছে। এ হিসেবে নির্ধারিত নৌযানগুলো ঢাকায় পৌঁছে দুই দিন সেখানে অবস্থান করে আবার যাত্রী নিয়ে বরিশালে ফিরবে।

গত বুধবার যাত্রীবাহী নৌযান মালিকদের সংগঠনের এক সভায় এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার পরে শনিবার থেকে তা কার্যকর হলো। এতে করে যাত্রীরা ফের আরেক দফায় জিম্মি করা হলো। তবে নৌযান মালিকদের এসব সিদ্ধান্তের বিষয়ে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ও বিআইডব্লিউটিএ’র এখনো কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। পদ্মা সেতু চালুর পরে নৌ পরিবহন সেক্টরে যে ধস নেমেছে, তার রেশ পড়েছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সব দপ্তরেই।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সূত্রের মতে, বিআইডব্লিউটিএ’র আয় হ্রাস পেয়েছে প্রায় ৪০ ভাগ। যাত্রী চলাচল হ্রাসের রেশ ধরে নৌযানগুলো পরিচালন সীমিত হওয়ায় বার্থিং ফি থেকে শুরু করে সব ধরনের রাজস্ব আয় কমে গেছে। একই কারণে যাত্রীদের টার্মিনাল টিকিট বিক্রিও কমে গেছে ৪০ শতাংশেরও বেশি। বরিশাল-ঢাকা-বরিশাল রুটে ২৮টি রুট পারমিটধারী নৌযানের মধ্যে ১৮টি নিয়মিত চলাচল করছিল। শনিবার থেকে ১৮টি নৌযানকে ছয়টি দলে বিভক্ত করে প্রতিদিন দুটি দলকে অর্থাৎ ৩টি করে ৬টি নৌযান পরিচালন শুরু করেছেন মালিকরা। ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা ৩টি নৌযান পরদিন সকাল ৫টার মধ্যে বরিশালে এবং বরিশাল থেকে ছেড়ে যাওয়া তিনটিকে পরদিন সকাল ৬টার মধ্যে ঢাকায় পৌঁছাতে হবে।

নৌযান মালিক সমিতির সহসভাপতি ও বরিশাল সদর উপজেলার চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান রিন্টু সাংবাদিকদের বলেছেন, পদ্মা সেতু চালুর পর যাত্রী সংকট দেখা দিলে ভাড়া কমিয়ে লোকসান কমানোর চেষ্টা করা হয়। কিন্তু সবদিক সামাল দেওয়ার আগেই জ্বালানির দাম বৃদ্ধিতে নৌযান ব্যবসায়ীরা পথে বসার উপক্রম হয়েছে। এরপরও মালিকরা সরকারি ভাড়ার চেয়ে কম দরে যাত্রী পরিবহন করছে বলে তিনি দাবি করেন। কিন্তু সামান্য কিছু ভাড়া বাড়ানোর পর কেবিনের যাত্রী সংখ্যা ২০-৩০ শতাংশে কমেছে। তেলের দাম বৃদ্ধির ফলে প্রতি ট্রিপে একটি নৌযানকে এখন ২-৩ লাখ টাকা পর্যন্ত লোকসান গুনতে হচ্ছে বলেও জানান তিনি। অথচ লঞ্চ মালিকদের প্রায় সবাই ব্যাংকের কাছে প্রচুর অঙ্কের দেনা রয়েছে। তাই বাধ্য হয়ে পুনরায় রোটেশন পদ্ধতিতে ফিরতে হয়েছে বলেও জানান তিনি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close