নড়াইলে জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে প্রয়াত এক নেতার মৃত্যুবার্ষিকী পালনের মাহফিলে মিলাদের প্যাকেট বিতরণ শেষে দুপক্ষের সংঘর্ষে জেলা আ.লীগের উপদপ্তর সম্পাদকসহ পাঁচ স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।

মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় দুপক্ষ মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

আহতরা হলেন জেলা আ.লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক বোরহান আহমেদ, নেড়াইল পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি রিয়াজ আহম্মেদ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ কর্মী তৌহিদুর রহমান, ফারুক হোসেন ও নাহিদুজ্জমান। সবার বাড়ি শহরের বিভিন্ন এলাকায়। আহতদের মধ্যে বোরহান যশোরে একটি বেসরকারি হাসপাতালে এবং বাকিরা নড়াইল সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তবে তারা আশংকামুক্ত বলে চিকিৎসক জানিয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জেলা আ.লীগের প্রয়াত সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিক আহম্মেদের মৃত্যুবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে সন্ধ্যা ৭টার দিকে তবারক বিতরণ শেষে স্বেচ্ছাবেক লীগের কয়েক নেতাণ্ডকর্মী প্যাকেটের দায়িত্বে থাকা জেলা আ.লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক বোরহান আহম্মেদের কাছে বেচে যাওয়া প্যাকেট দাবি করলে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে দাবিকারীরা বোরহানকে বেদম মারধর করে। খবর পেয়ে অপর গ্রুপ আ.লীগ অফিসে গিয়ে প্রতিপক্ষের চারজনকে জখম করে।

মঙ্গলবার বিকালে জেলা আওয়ামী লীগ অফিসে নড়াইল স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি তারিকুজ্জামান উজ্জলের সভাপতিত্বে জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক প্রয়াত সিদ্দিক আহম্মেদের মৃত্যুবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন প্রয়াতের সহধর্মিণী নড়াইল পৌরসভার মেয়র আঞ্জুমান আরা, জেলা আ.লীগ নেতা সৈয়দ মোহম্মদ আলী, অ্যাডভোকেট গোলাম নবী, নড়াইল পৌর আ.লীগের সভাপতি মলয় কুন্ডু, নড়াইল স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম পলাশ, জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি নাঈম ভুইয়া প্রমুখ।

আহতরা সবাই বলেন, আ.লীগ নেতা বোরহান আহম্মেদের নেতৃত্বে একটি গ্রুপ তাদের ছুরিকাহত করে। তবারক বিতরণ নিয়ে এ ঘটনা ঘটেছে বলে তারা জানান।

তবে এ প্রসঙ্গে জেলা আ.লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক বোরহান আহম্মেদ বলেন, খাবার প্যাকেট নিয়ে কোনো ঘটনা ঘটেনি। স্মরণসভার পর স্বেচ্ছাবেক লীগের কয়েক কর্মী কোনো কারণ ছাড়াই বলেন, এটা তোর বাপের অফিস! এ কথা বলে আমার মাথায় পিস্তল দিয়ে চোখে আঘাত করে এবং কিল-ঘুষি-লাথি মেরে জখম করে। এ সময় আমার পকেটে থাকা ১৫ আগস্টের অনুষ্ঠানের ও ব্যক্তিগত মোট ৭৮ হাজার টাকা তারা লুট করে নিয়ে যায়। পরে আমি চিৎকার করলে জনগণ আমাকে উদ্ধার করে।

জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি তরিকুল ইসলাম উজ্জ্বল বলেন, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এ অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে।

এ ব্যাপারে নড়াইল পৌর মেয়র আনজুমান আরা বলেন, অনুষ্ঠানের পর খাবার বিতরণ শেষে আমি ও উপস্থিত আওয়ামী লীগ-স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের অধিকাংশ নেতা দলীয় অফিসের নিচে চলে আসি। এ সময় মারামারির খবর পেয়ে দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে দু’পক্ষকে নিবৃত করি।

এ প্রসঙ্গে সদর থানার ওসি (চলতি দায়িত্বে) মো. মাহমুদুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় দু’পক্ষ থেকেই মামলার প্রস্তুতি চলছে। পরিস্থিতি এখন শান্ত। মামলা হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

"