সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

  ০৬ আগস্ট, ২০২২

সিরাজগঞ্জে পত্রিকার সম্পাদকের সঙ্গে অভিনব প্রতারণা

বানিজ্যমন্ত্রীর এপিএস ও যুগ্ম সচিব পরিচয়ে সিরাজগঞ্জের স্থানীয় পত্রিকা দৈনিক যমুনা প্রবাহর সম্পাদক মোস্তফা কামালের কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে একটি চক্র। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) রাতে দৈনিক যমুনা প্রবাহের নির্বাহী সম্পাদক আবদুল মজিদ সরকার বাদী হয়ে সদর থানায় একটি জিডি করেছেন।

ভুক্তভোগী মোস্তফা কামাল জানান, বৃহস্পতিবার সকালে ০১৯৯১-৫৬২২৪১ মোবাইল নম্বর থেকে তার ব্যক্তিগত নম্বরে রাশেদ নামে এক ব্যক্তি ফোন করে নিজেকে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সির এপিএস পরিচয় দেন। তিনি বলেন, সিরাজগঞ্জের উন্নয়নে কিছু প্ল্যানের কাজ করতে বাণিজ্যমন্ত্রীর প্রতিনিধি হিসেবে দেশি-বিদেশি ১৭ জনের একটি টিম সিরাজগঞ্জে আসছে। তাদের জন্য ভিআইপি হোটেলে থাকাণ্ডখাবার ব্যবস্থা করতে হবে। তারা ৫ দিন সেখানে থাকবেন। ওই ফোনেই এপিএস পরিচয়দানকারী রাশেদ বাণিজ্যমন্ত্রী স্যারের সঙ্গে কথা বলুন বলে জনৈক এক ব্যক্তির হাতে ফোন দেন। যার কণ্ঠস্বর হুবহু বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশীর মতো। মন্ত্রী পরিচয় দানকারী ব্যক্তি রাশেদের কথার রেশ ধরে মোস্তফা কামালকে বিষয়টি সমন্বয় করার নির্দেশ দেন।

তাদের কথামতো মোস্তফা কামাল স্থানীয় অভিজাত হোটেলে রুম ও রেস্টুরেন্টে ৫ দিনের থাকাণ্ডখাওয়ার জন্য বুকিং দেন। ৫ দিনে সব মিলিয়ে আনুমানিক ৫ লাখ টাকা বিল দাঁড়ায়। এ টাকার বিষয়ে এপিএস পরিচয়দানকারী রাশেদের সঙ্গে কথা বললে তিনি শহীদুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তির নম্বর (০১৭৭-৩৫৬০৬৭৩) দেন। যাকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব বলে উল্লেখ করে বলেন, তার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠিয়ে দেবেন। ওই নম্বরে মোস্তফা কামাল ফোন দিলে শহীদুল ইসলাম নামে ওই ব্যক্তি বলেন, আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বরটা দেন। যেহেতু সরকারি টাকা তাই এ টাকা জমা হওয়ার আগে একটা ফি দিতে হয়। এই বলে নিজের নগদ নম্বরে ১৯ হাজার টাকা দিতে বলেন।

পরবর্তীতে এপিএস পরিচয়দানকারী রাশেদও একই কথা বললে মোস্তফা কামাল সরল বিশ্বাসে টাকা পাঠিয়ে দেন। এরপর নিজের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা না ঢুকলে তাদের সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করেন। দুই ঘণ্টা ধরে ব্যাংকে টাকা ঢুকে যাবে বলে মোস্তফা কামালকে আশ্বস্ত করার পর হঠাৎ ফোনগুলো বন্ধ হয়ে যায়।

দৈনিক যমুনা প্রবাহের নির্বাহী সম্পাদক আবদুল মজিদ সরকার বলেন, এক্সিডেন্ট ইজ এক্সিডেন্ট। শর্ট টাইমের মধ্যে ঘটনাটি ঘটে যায়। প্রতারণা ছিল অভিনব কায়দায়। আর টিপু মুনশির পরিচয়দানকারী ওই ব্যক্তির কণ্ঠ হুবহু মিল পেয়ে সম্পাদক মোস্তফা কামাল আর সেটা যাচাই করার সময় পাননি, আর প্রয়োজনও বোধ করেননি। মন্ত্রী যেখানে বলেছেন, সেখানে সামান্য ১৯ হাজার টাকার বিষয়টি নিয়ে আর ভাবেননি।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হুমায়ুন কবির বলেন, সম্পাদক মোস্তফা কামালের সঙ্গে অভিনব কায়দায় প্রতারণা করা হয়েছে। আমরা অভিযোগ পেয়ে দ্রুত তদন্ত শুরু করেছি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close