লালমনিরহাট প্রতিনিধি

  ০৪ আগস্ট, ২০২২

তিস্তার নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি

কমতে শুরু করেছে লালমনিরহাটে তিস্তা নদীর পানি। বর্তমানে পানি বিপৎসীমার নিচে নেমে গেছে। পাশাপাশি ধরলা নদীর পানিও বিপৎসীমার নিচ দিয়ে বইছে। ফলে জেলার বন্যা পরিস্থিতির আরো উন্নতি হয়েছে। পানি কমলেও দুর্ভোগ বেড়েছে। পানিবন্দি হাজার হাজার মানুষ খাদ্য, বাসস্থান সংকটসহ পোষ্যপ্রাণী নিয়ে পড়েছেন চরম বিপাকে। এরই মধ্যে জেলার প্রায় ১০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। পানি ধীরে ধীরে কমলেও আরো দু-তিন দিন থাকবে পানিবন্দি অবস্থায়। বিশুদ্ধ খাবার পানির অভাবের পাশাপাশি বাড়ছে পানিবাহিত নানা রোগবালাই।

বুধবার (৩ অক্টোবর) সকালে তিস্তার ডালিয়া পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার নিচে প্রবাহিত হলেও ভাটি এলাকায় এখনো পানিবন্দি অবস্থা বিরাজ করছে। লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা, কালীগঞ্জ, আদিতমারী ও সদর উপজেলার প্রায় ৫০ হাজার মানুষ এখনো হাঁটু ও কোমরপানিতে ডুবে আছে। তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল এলাকার এসব মানুষ বাসস্থান, খাদ্য ও নিরাপদ পানিসহ স্যানিটেশন সংকটে পড়েছে। রাস্তাঘাট ও স্কুল-কলেজ ডুবে যাওয়ায় জেলায় প্রায় ১০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে পড়েছে।

গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগি নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন তারা। কোনো রকমে উঁচু স্থানে গিয়ে আশ্রয় নিয়ে অনিশ্চয়তায় দিন পার করছেন।

এর আগে তিস্তার পানি বাড়ায় জেলার পাটগ্রামের দহগ্রাম, হাতীবান্ধার গড্ডিমারী, দোয়ানী, ছয়আনী, সানিয়াজান ইউনিয়নের নিজ শেখ সুন্দর, বাঘের চর, ফকিরপাড়া ইউনিয়নের রমণীগঞ্জ, সিঙ্গামারী ইউনিয়নের ধুবনী, সিন্দুর্না ইউনিয়নের পাটিকাপাড়া, হলদিবাড়ী, ডাউয়াবাড়ী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, শৈইলমারী, নোহালী, চর বৈরাতি, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোঁচা, কালমাটি, পলাশী ও সদর উপজেলার ফলিমারীর চর, খুনিয়াগাছ, বড়বাড়ী, রাজপুর, গোকুণ্ডা ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বুধবার পানি কিছুটা কমলেও তারা পানিবন্দি থাকছেন। বাড়ছে পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব।

আদিতমারী উপজেলার মহিষখোঁচা ইউনিয়নের দেলোয়ার হোসেন বলেন, তিস্তার বন্যায় আমাদের বাড়িঘর ডুবে গেছে। গরু ছাগল, হাঁস-মুরগি নিয়ে সমস্যায় আছি। অন্যের বাড়িতে থাকতে হচ্ছে। আমরা চাই, সরকার পদ্মা সেতুর মতো নিজস্ব অর্থায়নে তিস্তা নদী খননের মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করুক।

এদিকে, বন্যার্তদের সহায়তায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তিন হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ হয়েছে। বানভাসিরা বলছেন, তাদের প্রয়োজনের তুলনায় এটি অপ্রতুল।

আদিতমারী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মফিজুল ইসলাম বলেন, উপজেলার বানভাসিদের সার্বক্ষণিক খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। এরই মধ্যে শুকনো খাবার বিতরণ শুরু হয়েছে। বন্যার্তদের তালিকা করে চাহিদা প্রেরণ করা হয়েছে। বরাদ্দ পেলে ত্রাণ বিতরণ করা হবে।

লালমনিরহাট জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, ‘পানি ধীরে ধীরে আরো কমে যাচ্ছে। জেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমরা সজাগ রয়েছি।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close