নিজস্ব প্রতিবেদক

  ০৭ জুলাই, ২০২২

ডার্ক ওয়েবে আসছে এলএসডি টাকা যাচ্ছে বিট কয়েনে

রাজধানীর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৭ সালে পড়ার সময় বন্ধুদের সঙ্গে প্রথমবারের মতো ভয়ংকর মাদক লাইসার্জিক অ্যাসিড ডাইথ্যালামাইড (এলএসডি) সেবন করেন নাজমুল ইসলাম বিশ্বাস (২৬)। পরে আসক্ত হয়ে পড়ায় বিদেশ থেকে ডার্ক ওয়েবে এলএসডি আনতে শুরু করেন নাজমুল। আর মাদকের টাকা বিট কয়েনের মাধ্যমে পরিশোধ করতেন।

গত মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর ভাটারা থেকে ১৩৮ পিস রঙিন প্রিন্ডেট ব্লট পেপার স্ট্রিপ এলএসডিসহ নাজমুলকে গ্রেপ্তার করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি) ঢাকা মেট্রোর কার্যালয় (দক্ষিণ)। এর আগেও ২০২১ সালে ১০ পিস রঙিন প্রিন্টেড ব্লট পেপার স্ট্রিপসহ তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

ডিএনসি জানায়, নাজমুল ইন্টারনেট কারেন্সি বিট কয়েন দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক কুরিয়ারের মাধ্যমে দেশে এলএসডি নিয়ে এসেছিলেন। তার উদ্দেশ্য ছিল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মধ্যে জব্দ হওয়া এলএসডি বিক্রি করা।

গতকাল বুধবার দুপুরে ডিএনসির ঢাকা মেট্রো দক্ষিণ কার্যালয়ের ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএনসির ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের অতিরিক্ত পরিচালক মো. জাফরুল্ল্যাহ কাজল।

তিনি বলেন, গত মঙ্গলবার রাতে ডিএনসির এক কর্মকর্তা ২৫ পিস এলএসডিসহ নাজমুলকে গ্রেপ্তার করেন। পরে তার দেওয়া তথ্য মতে, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার জি ব্লকের ৭ নম্বর রোডের তার ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালিয়ে আরো ৭১ পিস রঙিন প্রিন্টেড ব্লট পেপার শিল্প এলএসডি ও ৪২ পিস হোয়াইট ব্লট পেপার স্ট্রিপ এলএসডি জব্দ করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে একটি ল্যাপটপ ও একটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।

তিনি বলেন, নাজমুলের গ্রামের বাড়ি বরিশালের আলৈলঝাড়া থানার নগরবাড়িতে। তিনি ঢাকায় বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় একটি ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকেন। নাজমুল ২০১৭ সালে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিবেশ বিজ্ঞানে স্নাতকে অধ্যয়নের সময়ে এ মাদকের সংস্পর্শে আসেন। তখন বিদেশে অধ্যয়নরত তার বন্ধুদের থেকে তিনি এ মাদক সংগ্রহ করতেন বলে জানান। পরবর্তী সময়ে তিনি ডার্ক ওয়েব ও বিট কয়েন ব্যবহার করে এ মাদক বিদেশ থেকে দেশে নিয়ে আসতেন এবং এর বাজার সৃষ্টির প্রয়াস চালান। সর্বশেষ তিনি যুক্তরাষ্ট্র থেকে ১৪০ পিস এলএসডি দেশে নিয়ে আসেন। যার মধ্যে ১৩৮ পিসসহ তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এক প্রশ্নের জবাবে অতিরিক্ত পরিচালক মো. জাফরুল্ল্যাহ কাজল বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে অনলাইনে এলএসডির অর্ডার করেন নাজমুল। পরে তিনি ইন্টার কারেন্সি বিট কয়েনের মাধ্যমে অর্ডারে দাম পরিশোধ করেন। এ মাদক আন্তর্জাতিক কুরিয়ারা মাধ্যমে এলএসডি তার কাছে দেশে পৌঁছায় বলে তিনি জানান। তবে এসব তথ্য আমরা যাচাই-বাছাই করে দেখছি।

এলএসডির দেশে ছড়িয়ে দিতে আন্তর্জাতিক কোনো চক্র কাজ করছে কি না জানতে চাইলে ডিএনসির এ কর্মকর্তা বলেন, মাদক কারবারিরা সব সময় চেষ্টা করে সারা বিশ্বে মাদক ছড়িয়ে দিতে। আমাদের দেশের যুবসমাজ মাদক কারবারিদের টার্গেট রয়েছে। তবে সচেতন রয়েছি ও গোয়েন্দা নজরদারি করছি মাদক কারবারিদের প্রতিহত করার জন্য।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close