নিজস্ব প্রতিবেদক

  ০১ জুলাই, ২০২২

গ্রামীণের সিম বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা সময়োপযোগী : টিক্যাব

সেবার মান নিয়ে অভিযোগ থাকায় বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) গ্রামীণফোনের সিম বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এই সিদ্ধান্তকে সময়োপযোগী বলেছে টেলি কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টিক্যাব)। গতকাল বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিটিআরসিকে ধন্যবাদ জানায় ভোক্তা অধিকার সুরক্ষা দিতে কাজ করা টিক্যাব।

বিজ্ঞপ্তিতে টেলি কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (টিক্যাব) আহ্বায়ক মুর্শিদুল হক বলেন, মোবাইল অপারেটরগুলোর সেবার মান মূলত নির্ভর করে গ্রাহক অনুপাতে বেতার তরঙ্গ বা স্পেকট্রামের পরিমাণ, ফাইবার অপটিক্যাল নেটওয়ার্ক ও মোবাইল টাওয়ার আধুনিক যন্ত্রপাতিসহ অন্যান্য অবকাঠামোর ওপর। কিন্তু আমাদের অপারেটরগুলোর অবস্থা এ ব্যাপারে খুবই নাজুক। বিটিআরসি, আন্তর্জাতিক সংস্থা আইটিইউ ও বিভিন্ন সংস্থার সেবার মানদণ্ডের মাপকাঠিতে আমাদের দেশের অপারেটরগুলো এখনো পেছনের সারিতে। অন্যান্য দেশের সঙ্গে তুলনা করলে আমাদের অপারেটরগুলো পাশের বিভিন্ন দেশসহ বেশির ভাগ দেশের তুলনায় এখনো অনেক পিছিয়ে আছে। তিনি বলেন, ধীরগতির ইন্টারনেট, কলড্রপ, মিউট কল, ইন্টারনেট প্যাকেজের নামে প্রতারণাসহ মোবাইল ফোন অপারেটরগুলোর বিরুদ্ধে গ্রাহকদের অভিযোগের শেষ নেই। বিটিআরসি জমা পড়া অভিযোগের প্রায় ৯০ শতাংশই সেবার মান নিয়ে। আকর্ষণীয় বিজ্ঞাপন আর নানা অফারের ফাঁদ পেতে কাঙ্ক্ষিত সেবা না দিয়েই গ্রাহকদের অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে মোবাইল ফোন অপারেটরগুলো। ভয়েস কল কিংবা ইন্টারনেট কোনোটিতেই মানসম্পন্ন সেবা দিতে পারছে না অপারেটরগুলো। নিজেদের অর্থে কেনা ইন্টারনেট প্যাকেজ দুর্বল নেটওয়ার্ক ও সময়সীমার কারণে পুরোটা ব্যবহার করতে পারছেন না গ্রাহকরা। দীর্ঘদিন ধরে টিক্যাব অব্যবহৃত ইন্টারনেট ডাটা ফেরতের দাবি জানিয়ে এলেও নানা অজুহাতে ডাটা ফেরত দিচ্ছে না অপারেটরগুলো। বাজে নেটওয়ার্কের কারণে কলড্রপের ও মিউট কলের শিকার হয়ে একই কলের জন্য একাধিকবার টাকা গুনতে হচ্ছে গ্রাহককে। ২০২০-২১ অর্থবছরে ১২ মাসে গ্রাহকের ৫২ কোটি ৫৯ লাখ মিনিট কল ড্রপ হয়েছে। অপারেটরগুলো ক্ষতিপূরণ দিয়েছে মাত্র ১১ কোটি ৪৫ লাখ মিনিট, যা গ্রাহকদের খরচ করা টকটাইমের মাত্র ২২ শতাংশ। এতে ৪০ কোটি ৯৩ লাখ মিনিট কল ড্রপের বিপরীতে গ্রাহকদের প্রায় ১৮ কোটি ৪২ লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে। যেখানে প্রতিটি কলড্রপের জন্য ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশনা রয়েছে সেখানে অপারেটররা প্রতি ৩ থেকে ৭ মিনিটের বিপরীতে ১ মিনিট করে ক্ষতিপূরণ দিয়েছে। ইন্টারনেটের ক্ষেত্রে অবস্থা আরো শোচনীয়। কোনো যানবাহনে উঠলে ও রুমের ভিতরে ঢুকলেই ফোরজি ইন্টারনেট সেবা পরিণত হয়ে যাচ্ছে টুজিতে।

মুর্শিদুল হক বলেন, দীর্ঘদিন ধরে অপারেটরগুলোর বিরুদ্ধে গ্রাহকরা অভিযোগ জানিয়ে এলেও এতদিন তাদের বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। গ্রামীণফোনের বিরুদ্ধে এ নিষেধাজ্ঞাকে দৃষ্টান্ত হিসেবে স্থাপন করে গ্রাহক স্বার্থরক্ষায় সব অপারেটরকে জবাবদিহিতার আওতায় নিয়ে আসা এখন সময়ের দাবি। পাশাপাশি জমে থাকা গ্রাহক অভিযোগগুলোর দ্রুত নিষ্পত্তি ও অপারেটরগুলোর সেবার মান নিশ্চিতে বিটিআরসিকে মনিটরিং জোরদার করার আহ্বান জানাচ্ছি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close